
বাংলাদেশকে ৬ উইকেটে হারিয়ে সহজ জয় তুলে নিয়েছে সফরকারী শ্রীলঙ্কা। তবে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ব্যাট হাতে ভালো নৈপুণ্য দেখিয়েছে বাংলাদেশ। সৌম্য সরকার, মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহর দারুণ ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশের স্কোরবোর্ডে জমা হয়েছে ১৯৩ রান। তবে বড় এই সংগ্রহের পরও জয়ের দেখা মিলল না বাংলাদেশের। মাত্র চার উইকেট হারিয়ে সহজেই জয় তুলে নিয়েছে শ্রীলঙ্কা। ছয় উইকেটের সহজ জয় দিয়ে সিরিজেও ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেছেন লঙ্কানরা।
জয়ের জন্য ১৯৪ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে উদ্বোধনী জুটিতেই ৫৩ রান জমা করেছিলেন দুই লঙ্কান ওপেনার ধানুস্কা গুনাথিলাকা ও কুশল মেন্ডিস। পঞ্চম ওভারে ৩০ রান করা গুনাথিলাকাকে ফেরালেও স্বস্তি ফেরেনি বাংলাদেশ শিবিরে। অষ্টম ওভারে ৫৩ রান করা মেন্ডিসকে আউট করেছেন আফিফ হোসেন। পরের ওভারে উপুল থারাঙ্গার উইকেটও তুলে নিয়েছেন নাজমুল ইসলাম। ১১ রান করে নিরোশান ডিকওয়েলাও ধরেছিলেন সাজঘরের পথ। তবে এরপর বাংলাদেশের বোলারদের আর কোনো সুযোগ দেননি দাশুন শানাকা ও থিসারা পেরেরা। পঞ্চম উইকেটে ৬৫ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়ে দলকে জিতিয়েই মাঠ ছেড়েছেন এই দুই লঙ্কান ব্যাটসম্যান। ২০ বল হাতে রেখেই পৌঁছে গেছেন জয়ের বন্দরে। ৪২ রান করে অপরাজিত ছিলেন শানাকা। পেরেরার ব্যাট থেকে এসেছে ৩৯ রান।
এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে মুশফিকের ৬৬, সৌম্যর ৫১ ও মাহমুদউল্লাহর ৪৩ রানের ইনিংসগুলোতে ভর করে স্কোরবোর্ডে ১৯৩ রান জমা করেছিল বাংলাদেশ।
আজ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টি দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয়েছে চার তরুণ ক্রিকেটারের। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) গত আসরে ভালো নৈপুণ্য দেখিয়ে দলে ডাক পেয়েছেন আফিফ হোসেন, নাজমুল ইসলাম, জাকির হোসেন ও আরিফুল হক।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মিরপুর শের ই বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে এই ম্যাচটি শুরু হয়। এই ম্যাচে দলে চারজনের অভিষেক ঘটেছে। জাকির হোসেন, আফিফ হোসেন, নাজমুল হক অপু এবং আরিফুল হকের আন্তর্জাতিক অভিষেক ঘটে বাংলাদেশ দলের হয়ে।
এই ম্যাচে ছিল রেকর্ডের ছড়াছড়ি, ১৯৩/৫ টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বাংলাদেশের এটা ইতিহাস সেরা স্কোর। এত দিন টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বাংলাদেশর দলীয় সর্বোচ্চ স্কোর ছিল ১৯০/৫ রান। যেটা ২০১২ সালে আয়ারল্যান্ড সফরে করে টাইগাররা।
শুধু রানের দিক থেকেই নয়! ভেন্যুর দিক থেকেও বৃহস্পতিবার মিরপুরে টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ রানের স্কোর গড়েন মাহমুদউল্লাহরা। আজকের আগে টি-টোয়েন্টিতে শেরেবাংলায় বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রানের স্কোর ছিল ১৮৯/৯। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ২০১৩ সালে এই স্কোর গড়ে মুশফিকুর রহিমের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ দল।
চোটের কারণে দলে নেই তামিম ইকবাল। বিপিএলের গত আসরে দারুণ পারফরম্যান্স করেছেন জাকির হোসেন ও আরিফুল। এছাড়া নিউজিল্যান্ডে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে ভালো খেলেছেন আফিফ হোসেন।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে সমালোচকদের জবাবটা দারুণভাবেই দিয়েছেন এই বাঁহাতি ওপেনার। তুলে নিয়েছেন টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের প্রথম অর্ধশতক। সৌম্যর পর ঝলসে উঠেছিল মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহর ব্যাট। এই তিনজনের দারুণ ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ পেয়েছে ১৯৩ রানের বড় সংগ্রহ।
উদ্বোধনী জুটিতেই ৪৯ রান জমা করে শুরুটা দারুণভাবে করেছিলেন সৌম্য ও জাকির হোসেন। চতুর্থ ওভারে ১০ রান করে জাকির ফিরে যাওয়ার পর সৌম্য জুটি গড়েন মুশফিকের সঙ্গে। এই জুটি থেকে আসে ৫১ রান। চতুর্থ উইকেটে মাহমুদউল্লাহ-মুশফিকের ৭৩ রানের জুটিতে ভর করে বাংলাদেশের স্কোরবোর্ডে জমা হয় ১৯৩ রান।
দলের পক্ষে ইনিংসের শেষ পর্যন্ত খেলে যাওয়া মুশফিক অপরাজিত থাকেন ৪৪ বলে ৭ চার ও ১ ছক্কায় ৬৬ রান করে। মাহমুদউল্লাহ খেলেছেন ৪৩ রানের অধিনায়কোচিত ইনিংস। আর সৌম্যর ব্যাট থেকে এসেছে ৩২ বলে ৫১ রানের ঝড়ো অর্ধশতক
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে হেরে সময়টা এমনিতেই ভালো কাটছে না বাংলাদেশের। এর মধ্যেই আবার ইনজুরির কারণে বেশ টালমাটাল অবস্থা বাংলাদেশ শিবিরে। দুই ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে বাংলাদেশ তাই ঝুঁকেছে তরুণদের দিকে। আজ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টি দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয়েছে চার তরুণ ক্রিকেটারের।
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) গত আসরে ভালো নৈপুণ্য দেখিয়ে দলে ডাক পেয়েছেন আফিফ হোসেন, নাজমুল ইসলাম, জাকির হোসেন ও আরিফুল হক। ইনজুরির কারণে মাঠে নামতে পারছেন না বাংলাদেশের সেরা ব্যাটসম্যান তামিম ইকবাল। তবে ইনজুরি শঙ্কা কাটিয়ে মাঠে নেমেছেন মুশফিকুর রহিম। দলে ফিরেছেন সৌম্য সরকার।
বাংলাদেশ দল: সৌম্য সরকার, মাহমুদউল্লাহ (অধিনায়ক), মুশফিকুর রহিম, সাব্বির রহমান, সাইফউদ্দিন, রুবেল হোসেন,মোস্তাফিজুর রহমান, জাকির হোসেন, আফিফ হোসেন, নাজমুল হক অপু, আরিফুল হক।