
শেষ পর্যন্ত ভেঙেই যাচ্ছে শাকিব-অপুর দাম্পত্য জীবন। ২০০৮ সালে ভালোবেসে ঘর বেঁধেছিলেন ঢাকাই ছবির আলোচিত জুটি শাকিব খান ও অপু বিশ্বাস। দীর্ঘ ৮ বছর এ খবর ছিল গোপন। সেই খবর প্রকাশ হতে না হতেই ডিভোর্সের পথে হাঁটছে এ দাম্পত্য।
থেমে গেছে শাকিব খান অপু বিশ্বাসের বিয়ে বিচ্ছেদ নিয়ে সকল প্রকার জল্পনা-কল্পনা আর রসালো সব মন্তব্যের ঝড়। অপু বিশ্বাসও সবকিছু ভাগ্যের উপর ছেড়ে দিয়েছেন।
অন্যদিকে শাকিব খানের কথিত প্রেমিকা চিত্রনায়িকা শবনম বুবলিও অভিনয় নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। সহসা বিয়ে করবেন না বলেও ঘোষণা দিয়েছেন বুবুলি। তবে বুবলির প্রায় সব সিনেমাতেই তার বিপরীতে অভিনয় করছেন শাকিব খান। অচিরেই লম্বা এক সময় নিয়ে দেশের বাইরে শুটিং করতে যাচ্ছেন তারা। ফলে শুটিং এবং শুটিংয়ের একসঙ্গেই সময় কাটাবেন তারা।
এদিকে অপু বিশ্বাসের বিষয়ে মুখ খুলতে নারাজ শাকিব খান। সবার অনুরোধ এবং পরামর্শ উপেক্ষা করে বিচ্ছেদের পথই বেছে নিয়েছেন তিনি। বলেছেন, যা হওয়ার আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই হবে। এটা নিয়ে কোনো যত কথা বলবো, ততই জলঘোলা হবে।
কিন্তু মিডিয়াপাড়ায় আপাতত থেমে গেলেও সিনেমাপাড়ায় বিষয়টা যেন এখনো চাপা উত্তেজনা ছড়াচ্ছে। শুধু তাই নয়, কানা-ঘুষার পাশাপাশি বেরিয়ে আসছে আরও কিছু অজানা তথ্য। চলচ্চিত্র পরিবারের বেশ কয়েকটি নির্ভরযোগ্য সূত্র দাবি করছে- শাকিব-অপুর বিচ্ছেদ যেন অনেক আগেই হয়েছিল। শুধুমাত্র আনুষ্ঠানিকতা আর কাগজে-কলমের বিষয়টাই বাকি ছিল। প্রায় এক বছর ধরেই দু’জন আলাদা আলাদা বসবাস করেছেন তারা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্র জানায়, অপু বিশ্বাসও জানতেন, এতকিছুর পরে শাকিব খানের সাথে কখনোই আর সংসার হবে না। তালাকনামা পাঠানোর আগে দু’পক্ষের কাছের কয়েকজন, এমনকি দু’তিন জন বিনোদন সাংবাদিকের মধ্যস্থতায় গোপনে দফায় দফায় বৈঠক করা হয় বিষয়টি নিস্পত্তির জন্য।
তবে সেই নিষ্পত্তি দু’জনকে একই ছাদের নিচে রাখার জন্য নয়, চূড়ান্ত বিচ্ছেদের জন্য। কিন্তু কেবলমাত্র অপু বিশ্বাসের মাত্রাতিরিক্ত দাবি-দাওয়ার কারণে কোনোরকম সুরাহা ছাড়াই অমীমাংসিত অবস্থাতেই বৈঠকের ইতি টানা হয়। যতবারই বৈঠকে বসা হয়েছে ততবারই অপু দাবি করেছেন, তালাক দিলে ৫ কোটি টাকা দিতে হবে, ৫ কোটির এক টাকা কম হবে না। কিন্তু শাকিব খান বরাবরই দেনমোহরে যা লেখা আছে, তার বেশি একটা টাকাও দেবেন না বলে জানান।
সূত্র জানায়, মূলত দুজনের জেদাজেদির কারণেই সঠিক সমাধান করা সম্ভব হয়নি। ফলশ্রুতিতে ঘরোয়া সমাধানের আশা ছেড়ে দিয়ে আইনি প্রক্রিয়ায় অপু বিশ্বাসের বাসায় তালাকনামা পাঠান শাকিব খান।
উল্লেখ্য, সাংবাদিকদের কাছে অপু বিশ্বাস বিয়ের কাবিননামায় দেনমোহর হিসেবে ৭ কোটি ১ লাখ টাকার কথা উল্লেখ করলেও শাকিব খান তা অস্বীকার করে আসছেন। পাশাপাশি এটাকে অপুর মিথ্যাচার বলে মন্তব্য করে মিডিয়ার কাছে শাকিব খান জানান, ৭ কোটি ১ লাখ নয়, দেনমোহর ছিল ৭ লাখ ১ টাকা।সূত্রটিও শাকিবের তথ্যটিই সঠিক এবং নিশ্চিত বলে দাবি করে।
বছরের আলোচিত একটি ঘটনা হয়েই থাকছে শাকিব-অপুর দাম্পত্য ও ডিভোর্স কাণ্ড। ২০০৮ সালে ভালোবেসে ঘর বেঁধেছিলেন ঢাকাই ছবির আলোচিত জুটি শাকিব খান ও অপু বিশ্বাস। দীর্ঘ ৮ বছর এ খবর ছিল গোপন। সেই খবর প্রকাশ হতে না হতেই ডিভোর্সের পথে হাঁটছে এ দাম্পত্য।গেল ২৮ নভেম্বর দুটি অভিযোগ এনে অবাধ্য স্ত্রী শাকিব খান।
এদিকে, অপু বিশ্বাসকে ডিভোর্স নোটিশ পাঠানোর খবর নাড়া দিয়ে গেছে সারাদেশের সিনেমাপ্রেমী ও নানা অঙ্গনের মানুষদের। সমালোচিত হচ্ছেন দুই তারকাই। তবে ধর্ম, জাত ত্যাগ করে শাকিবকে বিয়ে করা অপুর এ ভাগ্য মেনে নিতে পারছেন না তার ভক্তরা। এ দুঃসময়ে অপুকে সাহস ও পরামর্শ দিচ্ছেন তার সহকর্মীরা। তাকে পরামর্শ দিয়ে লিখেছেন প্রখ্যাত লেখিকা তসলিমা নাসরিনসহ আরও অনেকেই।
এবার সেই তালিকায় এলেন নারায়ণগঞ্জের জনপ্রিয় মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী। গতকাল রাতে নারায়ণগঞ্জ ক্লাবে সাংস্কৃতিক এক অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন সেলিনা হায়াৎ আইভী এবং চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাস। সেখানেই তিনি অপু বিশ্বাসকে এ দুঃসময়ে ধৈর্য ধরার পরামর্শ দেন।
অপুকে সাহস যুগিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি আজকে বিশেষ কিছু বলার জন্য আসিনি। আমি শুধু ক্লাব মেম্বার এবং প্রার্থীদের আয়োজন উপভোগ করতে এসেছি। আমি আপনাদের মতোই ক্লাবের একজন সাধারণ মেম্বার। চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাস যেহেতু আমাকে কিছু কথা বলতে বলেছে, তাই তাকে সম্মান করেই বলছি। মানুষের জীবনে হার জিত থাকেই। খারাপ ভালো মিলিয়ে মানুষের জীবন। নারীদের ক্ষেত্রে কিছু হলেই সমাজ নারীদের দিকেই আঙ্গুল তোলে। দোষ হোক যে কারো, সেটা নারীদের ওপর দিয়েই যাবে। সে ক্ষেত্রে আপনাকে বলছি আত্মবিশ্বাসী হতে হবে। আত্মবিশ্বাসে বলিয়ান হতে হবে।’
অপুকে উদ্দেশ্য করে তিনি আরো বলেন, ‘যার সাহস আছে সেই এগিয়ে যেতে পারে। অপু বিশ্বাস যদি ব্যক্তি জীবনে পরিষ্কার থাকেন তবে আপনাকে বলছি, ভয় পাওয়ার কিছু নেই। সত্যকে মেনে নিতে হবে, নিজের সঙ্গে প্রতারণা করা যাবে না। সত্য যত কঠিনই হোক তাকে প্রকাশ করতে হবে। সেটা যে ক্ষেত্রেই হোক। সামাজিক, রাজনৈতিক কিংবা ব্যক্তি জীবন। ধৈর্য ধারন করুন।’