মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন বলেছেন, উত্তর কোরিয়াকে পরমাণু অস্ত্রমুক্ত করার লক্ষ্যে পিয়ংইয়ংয়ের সঙ্গে কোনো পূর্বশর্ত ছাড়াই আলোচনায় বসতে প্রস্তুত রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
মঙ্গলবার ওয়াশিংটনের আটলান্টিক কাউন্সিলের এক বৈঠকে মার্কিন সরকারের এ প্রস্তুতির কথা ঘোষণা করেন তিনি।
উত্তর কোরিয়াকে যুক্তরাষ্ট্রসহ গোটা বিশ্বের এক নম্বর হুমকি হিসেবে উল্লেখ করে টিলারসন দাবি করেন, উত্তর কোরিয়ার হুমকি এতটাই শক্তিশালী যে ওই হুমকিকে এখন আর উপেক্ষা করার সুযোগ নেই।
মার্কিন সরকার তার কৌশলগত ধৈর্যের সমাপ্তি ঘটাতে চায় বলেও মন্তব্য করেন টিলারসন। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, উত্তর কোরিয়ার ব্যাপারে ওয়াশিংটনের দৃষ্টভঙ্গি অত্যন্ত স্পষ্ট এবং যুক্তরাষ্ট্র কোরিয় উপদ্বীপকে পরমাণু অস্ত্রমুক্ত দেখতে চায়।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর কোরিয় উপদ্বীপে উত্তেজনা তুঙ্গে ওঠে। ট্রাম্প বহুবার উত্তর কোরিয়াকে ধ্বংস করে ফেলার হুমকি দিয়েছেন।
ওয়াশিংটন চায় উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র ও পরমাণু অস্ত্রগুলো ধ্বংস করা হোক। কিন্তু পিয়ংইয়ং বলছে, যতদিন যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের উত্তর কোরিয়া বিরোধী বিদ্বেষী নীতি চলবে ততদিন নিজের অস্ত্র কর্মসূচি শক্তিশালী করে যাবে দেশটি।
কোরিয় উপদ্বীপে ট্রাম্প একটি ভয়াবহ বিপজ্জনক পারমাণবিক জুয়া খেলায় মেতে উঠেছেন বলে মন্তব্য করেছে উত্তর কোরিয়া। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র শনিবার (২ ডিসেম্বর) এক বিবৃতিতে একথা বলেন।
পিয়ংইয়ং হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তার প্রশাসন ‘আন্তরিকভাবে পরমাণু যুদ্ধ কামনা’ করছে।
উত্তর কোরিয়াকে ভয় দেখানোর উদ্দেশ্যে ওয়াশিংটন ও সিউল যখন বড় ধরনের যৌথ সামরিক মহড়া করতে যাচ্ছে তখন এ সতর্কবার্তা উচ্চারণ করল পিয়ংইয়ং।
বিবৃতিতে ট্রাম্পকে একটি ‘পারমাণবিক রাক্ষস’ এবং ‘বিশ্ব শান্তি বিনষ্টকারী’ হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে।
সোমবার থেকে কোরিয় উপদ্বীপে বিশাল সামরিক মহড়া শুরু করতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়া। মহড়ায় প্রায় ১২ হাজার মার্কিন সেনা ও ২৩০টি জঙ্গিবিমান অংশ নেবে বলে ঘোষণা করা হয়েছে।
উত্তর কোরিয়া গত মঙ্গলবার এ যাবতকালের সবচেয়ে শক্তিশালী আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালানোর পর ওয়াশিংটন ও সিউল ওই মহড়ার কর্মসূচি ঘোষণা করে।
ওই ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার পরদিন জাতিসংঘে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিকি হ্যালি নিরাপত্তা পরিষদের এক বৈঠকে উত্তর কোরিয়াকে ‘পুরোপুরি ধ্বংস’ করে ফেলার হুমকি দেন। এ ছাড়া, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে আরো ‘কঠোর নিষেধাজ্ঞা’ আরোপের হুমকি দিয়েছেন।