
সৌদি কর্তৃপক্ষ তিন দশক আগে বাণিজ্যিক সিনেমার ওপর দেয়া নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছে।
দেশটির সংস্কৃতি ও তথ্য মন্ত্রণালয় বলছে, তারা শিগগিরই সিনেমার লাইসেন্স দেয়া শুরু করবে। আশা করা হচ্ছে আগামী বছরের মার্চ থেকেই প্রথম সিনেমা শুরু হবে।
যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান এর ভিশন ২০৩০ সামাজিক ও অর্থনৈতিক সংস্কার কর্মসূচির আওতায় এমন ঘোষণা এলো দেশটির তরফ থেকে। যদিও সম্প্রতি গ্র্যান্ড মুফতি শেখ আব্দুল আজিজ আল শেখ সিনেমার বিষয়ে সতর্ক করেছিলেন। তার মতে সিনেমার অনুমোদন দেয়া হলে তা নৈতিকতাকে দূষিত করবে। খবর বিবিসির
১৯৭০ এর দশকে সিনেমা দেখা যেতো সৌদি আরবে। কিন্তু পরে ধর্মীয় নেতাদের চাপে সিনেমা নিষিদ্ধ করা হয়েছিলো সেখানে।
বিলিয়ন ডলারে মুক্ত দুর্নীতিবাজ সৌদি প্রিন্স
জেদ্দা: একশ কোটি ডলারের বিনিময়ে আটক সৌদি প্রিন্স মিতেব বিন আব্দুল্লাহকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের নামে বর্তমান যুবরাজ মোহম্মাদ বিন সালমান যে রাজপুত্রদের আটক করেন মিতেব তাদের মধ্যে অন্যতম।
বুধবার সৌদি আরবের দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের সঙ্গে জড়িত এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এ খবর প্রকাশিত হয়েছে। খবর রয়টার্স।
ওই কর্মকর্তা জানিয়েছেন, গ্রহণযোগ্য সমঝোতায় পৌঁছানোর কারণে মঙ্গলবার প্রিন্স মিতেবকে ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে কত টাকায় রফাদফা হয়েছে সেটা জানাতে পারেননি ওই কর্মকর্তা। অবশ্য, ধারণা করা হচ্ছে এই অর্থের পরিমাণ একশ কোটি ডলারের বেশি।
ওই কর্মকর্তা বলেন, দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত আছেন এমনটি স্বীকার করিয়ে নেয়া হয়েছে প্রিন্স মিতেবের কাছ থেকে। তবে প্রিন্স মিতেবের অফিস থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি বলে খবরে উল্লেখ করেছে।
এর আগে রাজপরিবার ও প্রিন্স মিতেবের পরিচিতরা সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট দেন যে তিনি এখন রিয়াদে নিজের বাসায় রয়েছেন। তবে প্রিন্স মিতেব কিভাবে ছাড়া পেয়েছেন ওই পোস্টগুলোয় সেটি উল্লেখ করা হয়নি।
ওই কর্মকর্তা জানান, প্রিন্স মিতেব ছাড়াও আরো কমপক্ষে তিনজনের সঙ্গে সমঝোতায় পৌঁছেছে সৌদি কর্তৃপক্ষ। খবর রয়টার্স
তিনি বলেন, রাষ্ট্রীয় কৌঁসুলি বেশ কয়েকজনকে ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। একই সঙ্গে কমপক্ষে পাঁচজনের বিরুদ্ধে বিচার শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে ওই ব্যক্তিদের বিস্তারিত জানাতে পারেননি তিনি।
গত ৪ নভেম্বর সৌদিতে দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে ১১ জন প্রিন্সসহ বর্তমান ও সাবেক বেশ কয়েকজন মন্ত্রীকে আটক করা হয়। ওই অভিযানেই প্রিন্স মিতেবকে আটক করে সৌদি কর্তৃপক্ষ। আটকদের মধ্যে দেশটির শীর্ষ ধনী প্রিন্স ওয়ালিদ বিন তালালও রয়েছেন।
সৌদিতে তিনদিনে ২৪ হাজার বিদেশি আটক
রিয়াদ: ভিসার শর্ত ভঙ্গ করায় প্রায় ২৪ হাজার বিদেশি শ্রমিককে আটক করেছে সৌদি আরবের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
তিন দিন ধরে অভিযান চালিয়ে তাদের তাদের আটক করা হয়ে বলে দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম সৌদি গেজেট জানায়।
সৌদি কর্তৃপক্ষের বরাতে সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিদের মধ্যে ১৫ হাজার ৭০২ জন দেশটির বসবাসের আইন লঙ্ঘন করেছেন। তিন হাজার ৮৮৩ জন সীমান্ত নিরাপত্তা আইন এবং ৪ হাজার ৩৫৩ জন শ্রম আইন লঙ্ঘন করেছেন।
তাদের মধ্য ৪২ শতাংশকেই মক্কা নগরী থেকে আটক করা হয়। বাকিদের মধ্যে রাজধানী রিয়াদ থেকে আটক হয়েছেন ১৯ শতাংশ, আসির প্রদেশ থেকে ১১ শতাংশ, জাযান থেকে ৬ শতাংশ এবং পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশগুলো থেকে ৫ শতাংশ।
ভিসার শর্ত লঙ্ঘন করেছেন এমন বিদেশিদের পরিবহন সুবিধা দেওয়া বা অন্য কোনো সুযোগ দেওয়ার অভিযোগে ২৫ সৌদি নাগরিককেও আটক করা হয়েছে।
এর আগে এ বছরের মার্চে সৌদি আরবে অবৈধভাবে বসবাস করা বিদেশিদের বৈধ কাগজপত্র সংগ্রহ করতে ৯০ দিনের সময় বেঁধে দেয়া হয়। ওই সময়ে দেশটির তৎকালীন উপপ্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন নায়েফ এ নেশন উইদাউট ভায়োলেশনস নামের এক কর্মসূচির আওতায় অবৈধ বিদেশি নাগরিক ও শ্রমিকদের ৯০ দিনের ‘সাধারণ ক্ষমা’ ঘোষণা করেন। ২৯ মার্চ থেকে এটি কার্যকর হয়।
তখনকার সরকারি ঘোষণায় বলা হয়, অনুমতি ছাড়া বসবাস, আকামা বা সরকারি অনুমতি না নিয়ে কাজ করা এবং সৌদি আরবে অবৈধ অনুপ্রবেশের মতো অপরাধের ক্ষেত্রে সাধারণ ক্ষমা প্রযোজ্য হবে। এই সময়ের মধ্যে অবৈধ ব্যক্তিরা কোনো শাস্তি ছাড়াই নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার সুযোগ পাবেন।
২০১৩ সালে এমনই এক অভিযান চালিয়েছিল সৌদি কর্তৃপক্ষ। এতে ২৫ লাখেরও বেশি অবৈধ অভিবাসী সৌদি আরব ছেড়ে যেতে বাধ্য হন।
এদিকে সৌদি আরবে অবস্থানরত বিদেশিরা তাদের ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর দেশে ফেরার জন্য অতিরিক্ত ৬০ দিন সময় পাবেন বলে জানিয়েছে দেশটির পাসপোর্ট অধিদপ্তর।
দেশটির জেনারেল ডিরেক্টরেট অব পাসপোর্ট (জিডিপি) দাপ্তরিকভাবে বিষয়টি অনুমোদন দিয়েছে বলে জানা গেছে।
সাম্প্রতিক বিদেশিদের ভিসা কঠোর করেছে সৌদি আরব সরকার।