পাকিস্তানের জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ কমিটি (জেসিএসসি)’র চেয়ারম্যান জেনারেল জুবাইর মাহমুদ হায়াত বলেছেন, ‘চীন-পাকিস্তান ইকনমিক করিডোর’ (সিপিইসি)-তে নাশকতা চালাতে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা রিসার্চ এন্ড এনালাইসিস উইং (র) ৫০ কোটি মার্কিন ডলার বরাদ্দ করেছে।
মঙ্গলবার ইসলামাবাদে এক আন্তর্জাতিক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন।
জেনারেল জুবাইর অভিযোগ করেন যে ভারত তালিবান, বেলুচ বিচ্ছিন্নতাবাদী ও ‘র’কে দিয়ে পাকিস্তানে সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাচ্ছে। এগুলো করে ভারত আগুন ও দক্ষিণ এশিয়ার শান্তিকে নিয়ে খেলছে।
ইসলামাবাদের সেরেনা হোটেলে ‘দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক গতিশীলতা ও কৌশলগত উদ্বেগগুলো’ নিয়ে দুই দিনব্যাপী এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজন করে ‘পলিসি রিসার্চ ইন্সটিটিউট’।
সেমিনারে পাকিস্তানী জেনারেল বলেন, ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ সিপিইসি বানচালের জন্য নাশকতা চালাতে ৫০ কোটি ডলার বরাদ্দ করেছে। তার মতে, রাজনৈতিক ও কৌশলগত মতপার্থক্য দক্ষিণ এশিয়ায় সংঘাতের পরিবেশ সৃষ্টি করছে। আর ভারত এই ইস্যুটিকে কাজে লাগাচ্ছে। এর উদাহরণ হিসেবে তিনি ভারতের ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’ চালানোর মধ্যে ঘটনাগুলো উল্লেখ করেন।
তিনি আরো বলেন, ভারত একটি সেক্যুলার রাষ্ট্র থেকে ক্রমেই চরমপন্থী রাষ্ট্রে পরিণত হচ্ছে। অধিকৃত কাশ্মীরে চলমান নৃশংসতা এবং পাকিস্তানের প্রতি দেশটির মনোভাবই এর প্রমাণ।
কাশ্মীরকে পাশ কাটিয়ে ভারতের সঙ্গে পাকিস্তানের সুসম্পর্ক গড়ে তোলার কোনো পথ নেই বলেও মনে করেন তিনি।
তিনি বলেন, আজ কাশ্মীরে ২০ জন অধিবাসীর জন্য একজন সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। ৯৪,০০০ কাশ্মীরিকে হত্যা করা হয়েছে। ৭,৭০০ জনের বেশি কাশ্মীরি তাদের দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছে।
জেনারেল বলেন, ভারত এ পর্যন্ত পাকিস্তানের ১,০০০ সাধারণ নাগরিক ও ৩০০ সেনাসদস্যকে হত্যা করেছে। নিয়ন্ত্রণ রেখায় ১,২০০ বারের বেশি যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করেছে। বহুবছর ধরে তারা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে আসছে। ‘ভারতের এসব কর্মকাণ্ড যেকোনো সময় বড় আকারের যুদ্ধে রূপ নিতে পারে’ বলেও সতর্ক করে দেন জুবাইর।
আফগানিস্তানের ব্যাপারে জেনারেল জুবাইর বলেন, দেশটি এশিয়ার প্রবেশদ্বার। তাই সেখানে অস্থিরতা এই গোটা অঞ্চলের জন্য দুর্ভাগ্যজনক। তবে, দুর্বল শাসনব্যাবস্থা ও ভ্রান্তিপূর্ণ পুনর্মিলন প্রক্রিয়াও আফগানিস্তানে অস্থিতিশীলতা জিইয়ে রেখেছে।
তাছাড়া আফগাসিন্তানের মাটিতে সন্ত্রাসীদের নিরাপদ আশ্রয়গুলোও গভীর উদ্বেগের কারণ বলে জেনারেল মনে করেন। তিনি বলেন, আফগানিস্তানে অস্থিতিশীলতার জন্য পাকিস্তানকে চরম মূল্য দিতে হচ্ছে। এরপও পাকিস্তান সেখানে টেকসই শান্তি চায়। আর পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে পাকিস্তান তার পারমাণবিক প্রতিরোধক সর্বনিম্ন পর্যায়ে রাখবে বলেও জানান এই জেনারেল।