
রাজধানীর মতিঝিল থানায় দায়ের করা মামলায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামের আমির মকবুল আহমাদকে তিন দিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত।
সোমবার ঢাকা মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে তাকে হাজির করে মামলা সুষ্ঠু তদন্তের জন্য সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম সাদবীর ইয়াসির আহসান চৌধুরী তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
২০১৫ সালে বিএনপির হরতাল অবরোধ চলাকালে মতিঝিল এলাকায় নাশকতার অভিযোগে এ মামলাটি দায়ের করে পুলিশ।
এর আগে দুই মামলায় ১০ দিনের রিমান্ড শেষে তাদেরকে আদালতে হাজির করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কদমতলী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সাজু মিঞা।
এ সময় মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত আসামিদের কারাগারে আটক রাখতে আদালতে আবেদন করেন তিনি।
অপরদিকে আসামিদের জামিন চেয়ে আদালতে শুনানি করেন আবদুর রাজ্জাক ও এসএম কামাল উদ্দিন। এ সময় জামিনের বিরোধিতা করেন ঢাকা মহানগরের পিপি আবদুল্লাহ আবু। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম সারাফুজ্জামান আনছারী জামিন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
জামায়াত আমিরসহ কারাগারে যাওয়া অপর ৭ নেতা হলেন- জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল ড. শফিকুর রহমান, নায়েবে আমির মিয়া গোলাম পরওয়ার, চট্টগ্রাম মহানগর শাখার আমির মোহাম্মদ শাজাহান, সেক্রেটারি নজরুল ইসলাম, দক্ষিণ জেলার আমির জাফর সাদেক, সেক্রেটারি জেনারেলের ব্যক্তিগত সহকারী নজরুল ইসলাম ও চালক সাইফুল ইসলাম।
গত ১০ অক্টোবর রাজধানীর কদমতলী থানায় অস্ত্র ও বিস্ফোরক এবং বিশেষ ক্ষমতা আইনে করা দুই মামলায় তাদের ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। গত ৯ অক্টোবর রাতে রাজধানীর উত্তরার থেকে তাদের আটক করে গোয়েন্দা পুলিশ।
এর আগে ২২ অক্টোবর সোমবার রাতে রাত ৯টার দিকে উত্তরার ৬ নম্বর সেক্টরের ১১ সড়কের একটি বাসা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপকমিশনার শেখ নাজমুল আলম জানিয়েছেন।
গ্রেপ্তার নেতাদের মধ্যে দলটির নায়েবে আমির ও সাবেক সংসদ সদস্য মিয়া গোলাম পরওয়ার, চট্টগ্রাম মহানগর আমির মো. শাহজাহান, সেক্রেটারি নজরুল ইসলাম, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আমির জাফর সাদেকও রয়েছেন।
নওশের আলী নামে এক ব্যক্তির বাসা থেকে জামায়াতের এই নেতারাসহ মোট নয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে উপকমিশনার নাজমুল জানান। গ্রেপ্তারের কারণ জানতে চাইলে বলেন, ‘রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টির জন্য তারা গোপন বৈঠকে মিলিত হয়েছিলেন।’
এদিকে জামায়াতের নায়েবে আমির মুজিবুর রহমান এক বিবৃতিতে এই গ্রেপ্তারের নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, ‘জামায়াতকে নেতৃত্বশূন্য করার জন্য পরিকল্পিতভাবে জামায়াত নেতৃবৃন্দকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে বিচারের নামে ফাঁসি দিয়ে হত্যা করেছে। তারই ধারাবাহিকতায় আজ জামায়াত নেতৃবৃন্দকে গ্রেপ্তার করা হল।’
অস্থিরতা সৃষ্টির ষড়যন্ত্রের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামী একটি নিয়মতান্ত্রিক, গণতান্ত্রিক, আইনানুগ রাজনৈতিক দল।’ উত্তরার ওই বাসায় দলের আমিরের নেতৃত্বে ঘরোয়া বৈঠকের সময় পুলিশ হানা দিয়েছিল বলে জানান তিনি। মুজিবুর অবিলম্বে জামায়াত নেতাদের মুক্তি দাবি করেন।