ইরাকে স্বায়ত্তশাসিত কুর্দিস্তানের স্বাধীনতার উদ্যোগ নিয়ে বাগদাদের সঙ্গে অচলাবস্থার মধ্যে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন কুর্দি সরকারের প্রেসিডেন্ট মাসুদ বারজানি। বারজানির পদত্যাগের ঘোষণার পর কুর্দিস্তানের সংসদে রবিবার হামলা চালিয়েছে একদল বিক্ষোভকারী।
কুর্দিস্তানের সংসদে এক চিঠিতে বারজানি বলেন, তিনি আর তার মেয়াদ বাড়ানোর চেষ্টা করবেন না। তার মেয়াদ ৪ দিনের মধ্যেই শেষ হচ্ছে।
কুর্দিস্তানের স্বাধীনতা প্রশ্নে কুর্দিরা গতমাসে গণভোটে ভোট দিয়েছে। এ ভোটকে কেন্দ্র করে কুর্দিদের সঙ্গে ইরাকের সরকারি বাহিনীর লড়াই শুরু হয় এবং সেনারা কুর্দিদের তেল সমৃদ্ধ এলাকাগুলো দখল করে নেয়।
এমপি’রা বারজানির চিঠি নিয়ে আলোচনা করছেন। বিক্ষোভকারীরা কুর্দি পার্লামেন্ট অভিমুখে বিক্ষোভ করেছে।
চিঠিতে বারজানি বলেন, ‘আমি ক্ষমতায় শুন্যতা পূরণের জন্য পার্লামেন্টকে বৈঠকে বসার অনুরোধ জানিয়েছি।’
বারজানি আরো বলেন, তিনি একজন পেশমেরগা কিংবা কুর্দি যোদ্ধাই থাকবেন এবং কুর্দিস্তানের জনগণের অর্জন ধরে রাখবেন।
২০০৩ সালের মার্কিন আগ্রাসনে সাদ্দাম হোসেনের পতনের পর বারজানি নেতৃস্থানীয় পর্যায়ে উঠে আসেন এবং উত্তর ইরাকে স্বায়ত্ত্বশাসিত কুর্দিস্তান গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
এদিকে বারজানির পদত্যাগের ঘোষণার পর কুর্দিস্তানের সংসদে রবিবার হামলা চালিয়েছে একদল বিক্ষোভকারী। আঞ্চলিক রাজধানী আরবিলে অবস্থিত সংসদ ভবনে হামলাকারীদের কারো কারো হাতে লাঠি-সোটা ছিল বলে জানা গেছে।
কুর্দিস্তানের প্রেসিডেন্ট পদ থেকে মাসুদ বারজানির সরে দাঁড়ানোর অনুরোধ কুর্দিস্তানের আইন প্রণেতারা অনুমোদন করার পরই এ হামলা চালানো হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, বারজানির সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হয়েছে বিক্ষোভকারীরা। আঞ্চলিক সংসদ ভবনে বিক্ষোভকারীরা ঢোকার সময়ে গুলির শব্দ শোনা গেছে বলে কোনো কোনো খবরে বলা হয়েছে। এ সব খবরে বলা হয়েছে, কুর্দি পিশমার্গা যোদ্ধারা জোর করে সংসদ ঢুকেছে।
অন্য খবরে বলা হয়েছে, কুর্দি আইন প্রণেতারা সংসদ ভবনের ভেতরে আটকা পড়েছেন। এ ছাড়া, সংসদের সামনে থেকে খবর প্রচার করার সময়ে এনআরটি নিউজ চ্যানেলের সাংবাদিকদের ওপরও হামলা হয়েছে। এ চ্যানেল বারজানির নীতির সমালোচক হিসেবে পরিচিত।
এদিকে, স্থানীয় সূত্রগুলো বলছে, সংসদ ভবনের কাছে যে সব গুলির শব্দ শোনা গেছে তা নিরাপত্তা বাহিনী ছুঁড়েছে। ফাঁকাগুলি ছুঁড়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করা হয়েছে।