পাকিস্তানের সাথে কোনভাবেই জড়াতে চায় না ভারত এমন ইঙ্গিত দিয়ে ইসলামাবাদে অনুষ্ঠিত একটি বহুজাতিক সামুদ্রিক নিরাপত্তা বৈঠকে অংশ গ্রহণ থেকে বিরত থাকলো নয়া দিল্লি। এশিয়ার দেশগুলোর কোস্টগার্ডগুলোর এই বৈঠক গত সপ্তাহে ইসলামাবদে অনুষ্ঠিত হয়। আর শেষমুহূর্তে দিল্লি এতে অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নেয়।
গত ২৪-২৫ অক্টোবর অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে ভারতের উপকূলীয় সম্পদ রক্ষা ও সামুদ্রিক আইন প্রয়োগ করার কাজে নিয়োজিত কোস্ট গার্ড (আইসিজি)’র অংশ নেয়ার কথা ছিল। ভারত ছাড়া ঐ বৈঠকে ১৩টি দেশের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
শুরু থেকেই ওই বৈঠকে অংশগ্রহণের ব্যাপারে ভারতের মধ্যে দ্বিধা ছিল। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে কোস্টগার্ড ডিজিসহ অন্যান্য অফিসারদের জন্য পাকিস্তানের কাছে ভিসার জন্যও আবেদন করা হয়। ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় শেষ মুহূর্তে সিদ্ধান্ত নেয় যে কোন ভারতীয় নিরাপত্তা সংস্থার জন্য এখন পাকিস্তান কোন উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে অংশ নেয়া সঠিক নয়।
আইসিজি’র মুখপাত্র আর কে সিং টাইমস অব ইন্ডিয়াকে বলেন, ‘এই বৈঠকে আইসিজি অংশগ্রহণ করেনি, এটিই শেষ কথা। এ ব্যাপারে আমার কিছুই বলার নেই।’
২০১৫ সালের ডিসেম্বরেও পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের একটি যৌথ দ্বিপাক্ষিক সংলাপ হওয়ার কথা ছিল। যা পাঠানকোট বিমানঘাঁটিতে হামলার কারণে শেষ পর্যন্ত হয়নি। পরের বছর জম্মু-কাশ্মীরে সংঘাত বৃদ্ধি ও উরিতে সেনা ক্যাম্পে সন্ত্রাসী হামলার কারণে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা আরো অনেক বেড়ে যায়।
চলতি বছরের শুরুতে ভারতীয় নাগরিক কুলভূষণ যাদবকে পাকিস্তানে গোয়েন্দাগিরি এবং রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্রের অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হলে ভারত তার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দেশটির সাথে সম্পর্ক কার্যকরভাবে স্থগিত করে রাখে।
চলতি বছরের এপ্রিলে আইসিজি ও পাকিস্তানের মেরিটাইম সিকিউরিটি এজেন্সির মধ্যে একটি সামুদ্রিক নিরাপত্তা বিষয়ক চুক্তি সই হওয়ার কথা ছিল। যেখানে থেকেও ভারত সরে আসে।
কাশ্মিরের সংলাপের জন্য ভারত একজন মধ্যস্থতাকারী নিযুক্ত করেলও ভারত মনে করে আগামী বছরে নির্বাচনে যাওয়া পাকিস্তানের সাথে এখন কোন গুরুতর বিষয় নিয়ে বোঝাপড়া করা উচিৎ হবে না।
এই সময়ের মধ্যে পাকিস্তানের সাথে আলোচনার একমাত্র বিষয়টি ছিল সিন্ধু পানি চুক্তি। যতক্ষণ পর্যন্ত ভারত এই আন্তর্জাতিক চুক্তির একটি পক্ষ ততক্ষন পর্যন্ত তারা আইনগতভাবে এই বিষয়ে আলোচনা করতে বাধ্য।