পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী খাজা আসিফ জোর দিয়ে বলেছেন, ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে’ ওয়াশিংটনের সাথে সহযোগিতা করবে ইসলামাবাদ, তবে ‘নিজের সার্বভৌমত্বের প্রতি কোনো ধরনের আপস করবে না।’
বুধবার পাকিস্তান ও মার্কিন প্রতিনিধিদলের মধ্যকার আলোচনার বিষয় সিনেটকে অবহিত করার সময় তিনি এ মন্তব্য করেন।
মঙ্গলবার পাকিস্তানের শীর্ষস্থানীয় বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তাদের নিয়ে গঠিত একটি প্রতিনিধিদল ইসলামাবাদে সফররত মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসনের সাথে আলোচনা করে।
আসিফ জানান, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদলকে পাকিস্তানিরা জানিয়েছে, আফগানিস্তানে সামরিক সমাধানের প্রয়াস ব্যর্থ হওয়ায় রাজনৈতিক সমাধান প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। এ কারণে তারা তাদের সামরিক নেতৃত্বকে নয়, বরং তাদের নীতিনির্ধারকদের অনুমোদন করবে।
আসিফ বলেন, ১৬ বছর আগে আফগানিস্তানে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর তারা লড়াই চালিয়ে গেলেও সাফল্য পায়নি।
তিনি বলেন, পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ার একটিমাত্র অবকাশই আছে তা হলো ওয়াশিংটন তাদের পরাজয় এবং আফগানিস্তানে তাদের ব্যর্থতা স্বীকার করে নেয়া। তবে তারা তা স্বীকার করতে প্রস্তুত নয়।
আলোচনার সময় সিনেটকে আসিফ বলেন, পাকিস্তানি কর্মকর্তারা যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদলকে বলেছে, পাকিস্তান আর ওয়াশিংটনের কাছ থেকে কোনো সামরিক সরঞ্জাম বা অর্থনৈতিক সহায়তা চায় না। বরং চায় যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সমতা বজায় রেখে সম্পর্ক রাখতে।
সিনেটকে আসিফ আরো জানান, পাকিস্তান দল যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদের বলেছে, তারা যদি যথার্থ গোয়েন্দা তথ্য দেয়, তবে পাকিস্তান তার আলোকে পদক্ষেপ নেবে। তিনি সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র-কানাডা দম্পতিকে উদ্ধারের প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, তবে তারা যদি তাদের হয়ে আমাদের যুদ্ধে নামতে বলে, তবে তা গ্রহণযোগ্য নয়।
আসিফ বলেন, আমরা আমাদের সার্বভৌমত্ব, আমাদের মর্যাদা নিয়ে কোনো আপস করব না। আমাদের সম্পর্ক হতে হবে আত্মমর্যাদা ও সমান সম্মানভিত্তিক।
তালেবানের ওপর প্রভাব হ্রাস
সিনেটকে আসিফ আরো অবহিত করেন, পাকিস্তানিরা মার্কিন প্রতিনিধিদের বলেছে, এক সময় তালেবানের ওপর পাকিস্তানের যে প্রভাব ছিল, তা এখন কমে গেছে। এই জঙ্গি নেটওয়ার্ককে এখন অন্যরা মদদ দিচ্ছে।
তিনি বলেন, ওয়াশিংটন অনেক দিন ধরেই তালেবান নেতা মোল্লা আখতার মনসুরকে খুঁজছিল। কিন্তু তিনি যেই মাত্র পাকিস্তানে প্রবেশ করেছেন, তখনই নিহত হয়েছেন।
এসব ঘটনা থেকে কিভাবে বোঝা যাবে যে তালেবানের ওপর পাকিস্তানের প্রভাব আছে? প্রশ্ন করেন আসিফ।
পাকিস্তান সন্ত্রাসীদের নিরাপদ আস্তানা নয়
পাকিস্তানি কর্মকর্তাদের সাথে রেক্স টিলারসনের বৈঠকের পর আসিফ- তিনি নিজেও প্রতিনিধিদলের সদস্য ছিলেন- বলেন, মার্কিন প্রতিনিধিদলকে জানানো হয়েছে, পাকিস্তানিরা সন্ত্রাসীদের আশ্রয় ও মদদ দিচ্ছে বলে ওয়াশিংটন যে অভিযোগ করেছে তা সত্য নয়।