রোহিঙ্গা গণহত্যা ও অত্যাচারের বিষয়ে গভীর দুঃখ প্রকাশ করেছেন মায়ানমারের রাখাইনের খ্রিস্টান যাজকরা।
জরুরি ভিত্তিতে শান্তি প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়ে রাখাইনের ‘পাইয়ে ডায়োসিসের’ বিশপ আলেকজান্ডার পিয়োনো চো বলেন, এখানকার পরিস্থিতি আরো জটিল হয়ে উঠেছে।
সংখ্যালঘু রোহিঙ্গারা রাখাইন রাজ্যের পাইয়ে ডায়োসেসের আওতাধীনে অবস্থিত।
এক বিবৃতিতে বিশপ আলেকজান্ডার পিয়োনো চো বলেন, ‘আজ রোহিঙ্গা পরিস্থিতি বিচার করা খুবই কঠিন। এ বিষয়ে নির্ভরযোগ্য কোনো সংবাদ নেই এবং সরকার অথবা রোহিঙ্গা কিংবা অন্য কোনো সোর্স থেকে প্রচার করা সংবাদের ওপর আমাদের নির্ভর করতে হচ্ছে। আমরা দৃঢ়ভাবে একটি শান্তিপূর্ণ সমাধান আশা করছি; যার মাধ্যমে সকলের মর্যাদা ও মানবাধিকারের প্রতি সম্মান প্রদর্শিত হবে।’
বেসামরিক নাগরিকদের উপর সামরিক বাহিনীর আক্রমণাত্মক আচরণ এবং হামলা এখনো অব্যাহত রয়েছে উল্লেখ করে বিশপ আলেকজান্ডার পিয়োনো বলেন, ‘সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিদ্রোহীদের হামলার কারণে পরিস্থিতির আরো জটিল ও অবনতি ঘটেছে।’
তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গারা শান্তিপূর্ণ ও বন্ধুত্বপূর্ণ মানুষ। তারা ব্রিটিশ যুগে বাংলাদেশ থেকে বার্মায় আসেন এবং রাখাইনের স্থানীয় জনগণের সঙ্গে যুগের পর যুগ ধরে কোন সমস্যা ছাড়াই বসবাস করছেন। চার বছর আগে রাখাইন তরুণীকে কথিত ধর্ষণের অভিযোগে প্রথমবারের মতো রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন শুরু হয়েছিল।’
তিনি আরো বলেন, ‘বৌদ্ধ চরমপন্থী দলগুলোর হস্তক্ষেপের কারণেও সহিংসতা আরো দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে এবং এই দ্বন্দ্ব একটি ধর্মীয় দ্বন্দ্বে পরিণত হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী হস্তক্ষেপ করেছিল। দুর্ভাগ্যবশত, বিভাজন এবং ঘৃণা অব্যাহতভাবে লালন করা হচ্ছে।’
এলাকাটি সম্পূর্ণরূপে অবরুদ্ধ থাকায় বর্তমান পরিস্থিতি অজ্ঞাত রয়ে গেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এখন শরণার্থী সবচেয়ে বড় অসুবিধায় রয়েছে। তাদের জীবন এখন ঝুকিঁপূর্ণ। এলাকাটি সম্পূর্ণরূপে অবরুদ্ধ এবং কেউ যাচাই করতে পারছে না ঠিক কি ঘটছে।’
তিনি বলেন, ‘মানুষের মর্যাদা এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা কেবল প্রার্থনা করতে পারি।’
গত দুই সপ্তাহে নিগৃহীত সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের কমপক্ষে ৩,০০০ জনকে হত্যা করা হয়েছে। তাদের মধ্য অনেক নারী ও শিশুও রয়েছে।
দেশটির সেনাবাহিনী ও চরমপন্থী বৌদ্ধদের নির্যাতন থেকে বাঁচতে দুই সপ্তাহেরও কম সময়ে প্রায় ৩ লাখ রোহিঙ্গা প্রতিবেশি বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে বলে জাতিসংঘ জানিয়েছে।
সূত্র: খ্রিস্টান ইন পাকিস্তান ডটকম