গাইবান্ধা প্রতিনিধিঃ প্রথম আলো ট্রাষ্টের উদ্যোগে ও বন্ধুসভার সদস্যদের সহযোগিতায় রোববার সকালে গাইবান্ধায় বন্যা দুর্গত এলাকায় ত্রাণ বিতরণ করা হয়। গাইবান্ধা সদর উপজেলার মোল্লারচর ও ফুলছড়ি উপজেলার এরেন্ডাবাড়ি ইউনিয়নের ১৫০টি পরিবারের মধ্যে পরিবার প্রতি তিন কেজি চাল, আধা কেজি ডাল, এক কেজি চিড়া, একটি গুড় এবং চারটি করে খাবার স্যালাইন দেওয়া হয়।
গাইবান্ধা শহর থেকে সাত কি.মি. দুরে বালাসিঘাট। এখান থেকে নৌকাযোগে প্রায় দুই ঘন্টার পথ। তারপর গাইবান্ধা-জামালপুরের সীমানায় অবস্থিত ফুলছড়ি উপজেলার এরেন্ডাবাড়ি ইউনিয়নের ডাকাতিয়ারচর, জিগাবাড়ি ও আগলারচর গ্রাম। গ্রামগুলোর কোথাও হাটুপানি কোথাও নেমে গেছে। কাঁদামাখা পানির নিচে ছোটবড় গর্ত। উঠোন-আঙিনায় একই অবস্থা। এরমধ্যেই ব্রহ্মপুত্র নদের ঘাটে প্রথম আলোর ত্রাণের নৌকা দেখে ছুটে এলেন বন্যার্তরা। নৌকা থেকেই চাল-ডাল চিড়া বিতরণ শুরু করলো বন্ধুসভার সদস্যরা।
নৌকা থেকে বিতরণ ছাড়াও ওই তিন গ্রামের অসুস্থ ও বৃদ্ধ মানুষের ঘরে ঘরে গিয়ে ত্রাণ পৌঁছে দেয় বন্ধুসভার সদস্যরা। কখনো হাটুপানি কখনো কোমরপানি ভেঙ্গে তারা মানুষের হাতে ত্রাণের প্যাকেট তুলে দেয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন গাইবান্ধা বন্ধুসভার উপদেষ্টা নাহিদ হাসান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক রানা পাপুল, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান মিয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুর রব, প্রচার সম্পাদক তাওহীদ তুষার, তথ্য ও প্রচার সম্পাদক মেহেদী হাসান, সদস্য হারেজ উদ্দিন, জিয়াউর রহমান, রাখিব হাসান, প্রথম আলোর প্রতিনিধি শাহাবুল শাহীন প্রমুখ।
ত্রাণ পেয়ে ডাকাতিয়ারচর গ্রামের গৃহবধু জয়নব বেগম (৫৫) বললেন, আটদিন থাকি বানের পানিত কসটো করব্যার নাগচি। কাউয়ো এ্যাকনে ইলিপ দ্যায় নাই। তোমারঘরে নাও নিয়া আসি পোত্তোম আলোত থাকি তেরান দিলেন। পায়া ওপক্যার হলো।
ওই গ্রামের দিনমজুর রেজাউল মিয়া (৫২) বললেন, গাইবান্ধাত থাকি হামারঘরে গায়োত নাওয়োত আসতে ম্যালা সমায় নাগে। তাই এ গায়োত কাউয়ো ইলিপ দিব্যার আসপ্যার চায়না। সেজন্নে হামরা ইলিপ পাইনে। তোমারঘরে পোত্তোম আলোত থাকি চাউল চিড়ে কালাই গুর পানো। আচকে পেটভরে ছোলগুলেক খিলব্যার পামো।
একই ইউনিয়নের পাশ্চিম জিগাবাড়ি গ্রামের মাকছুদা বেগম (৪০) বললেন, এব্যারকা বানোত হামরা ইলিপ পাই ন্যাই। শহর থাকি সোরকারি নোক আসি খালি বানদোত ও উচে জাগাত ইলিপ দিয়্যা যায়। হামরা কষ্টকরি নদীত থাকি। কেউ দেখপার আইসে না, ইলিপও দ্যায় না। এব্যারকা পোত্তম তোমারঘরে পেপার পোত্তোম আলোর চাউল চিরে পানো। আল্লায় তোমারঘরে ভালো করুক বাবা। এভাবে অনেকে ত্রাণ পেয়ে প্রতিক্রিয়া জানালেন।