সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধিঃ গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৪০ কিলোমিটার বেরি বাঁেধর প্রায় ৮০ পয়েন্টে ধস দেখা দিয়েছে। যে কোন মহুর্তে বাঁধটি ভেঁঙ্গে যাওয়ার আশঙ্কা করছে এলাকাবাসী। গত সোমবার হতে পাউবো সুন্দরগঞ্জ এলাকায় বাঁধের বিভিন্ন পয়েন্টে বাঁশের খুঁটির প্যালাসাইটিং দিয়ে বালুর বস্তা ফেলছে। বাঁধটি ভেঁঙ্গে গেলে গাইবান্ধা জেলার সাতটি উপজেলার ৮২টি ইউনিয়নে পানি ঢুকে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
উপজেলার ডান তীর গাইবান্ধা সদরের কামারজানি হতে বাম তীর পীরগাছার তাম্বুলপুর পর্যন্ত প্রায় ৪০ কিলোমিটার দীর্ঘ বাঁধটির ৮০টি পয়েন্ট ধসে গেছে এবং গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। বাঁধটি নির্মাণের পর থেকে আজ পর্যন্ত মেরামত এবং সংস্কার করা হয়নি। যার কারণে বাঁধটি হুমকির সম্মুখীন হয়ে পড়েছে। তাছাড়া বাঁধের দুই পাশে কেটে তিস্তায় খুঁয়ে যাওয়া পরিবারগুলো বসতবাড়ি গড়ে তুলেছে। সে কারণে বাঁধটি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে পড়েছে। বর্তমানে বাঁধটি ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে সুন্দরগঞ্জ হতে বেলকা হয়ে পাঁচপীর পর্যন্ত বাঁধটিতে অসংখ্য খানা-খন্দে ভরে গেছে। এছাড়া বাঁধের দুই পার্শ্বে গড়ে উঠা পরিবারগুলো বাঁধ কেটে চলাচলের রাস্তা তৈরি করায় বাঁধটি বেশি করে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। গত সাত দিনের ব্যবধানে উপজেলার বেলকা ইউনিয়নের কয়েকটি পয়েন্টে বালুর বস্তা ফেলেছে পাউবো কর্তৃপক্ষ।
বেলকা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ইব্রাহিম খলিলুল্ল্যাহ জানান- দীর্ঘদিন থেকে বাঁধটি মেরামত না করায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তাছাড়া বাঁধের দুই ধারে গড়ে উঠছে অবৈধভাবে বসতবাড়ি। বেলকা ইউনিয়নের প্রায় ১৫ হতে ২০টি পয়েন্টে ধস দেখা দিয়েছে। বাঁধটি স্থায়ীভাবে মেরামত করা একান্ত প্রয়োজন ।
সাবেক জাপার এমপি ওয়াহেদুজ্জামান সরকার বাদশা জানান- আমার বাড়ি ঘেঁষে পাউবোর বাঁধটি চলে গেছে। তিনি বলেন- আমি কয়েক দফা বাঁধটি মেরামতের জন্য চেষ্টা করে ছিলাম কিন্তু পারিনি। বাঁধটি মেরামত করা অতিব জরুরি হয়ে পড়েছে। তা না হলে যদি বাঁধটি ধসে যায় তাহলে গাইবান্ধার সাতটি উপজেলার ৮২টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়ে পড়বে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার এসএম গোলাম কিবরিয়া জানান, বাঁধটির বর্তমানে বেহাল দশা। বিষয়টি পাউবোসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে অবহিত করা হয়েছে।
স্থানীয় সাংসদ গোলাম মোস্তফা আহমেদ জানান, আমি বাঁধটি মেরামতের ব্যাপারে জাতীয় সংসদের মাধ্যমে উপস্থাপন করব। ইতিমধ্যে মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছি।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহাবুবুর রহমান জানান, বর্তমানে বাঁধটির আসলেই দুরাবস্থা। বাঁধটি মেরামত প্রয়োজন। কিন্তুু মেরামত করার মত ফান্ড না থাকায় সেটি সম্ভব হচ্ছে না। তিনি বলেন- বন্যার সময় জরুরিভাবে কিছু কাজ করার জন্য আমাদেরকে নির্দেশ দেয়া হয় উপর থেকে। আমরা সে মোতাবেক কাজ করে থাকি।