গাইবান্ধা প্রতিনিধিঃ উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলায় ৫টি ইউনিয়নের প্রায় ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। প্রায় ২ হাজার বানভাসী মানুষরা এখন ওয়াবদা বাঁধসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। তাদের গরু ছাগল, হাঁস মুরগি নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছে। সেই সাথে হাজার হাজার একর রোপা আমন ক্ষেত পানিতে ডুবে গেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানাগেছে, ব্রক্ষ্মপুত্রের পানি ২০.৮৩ সে.মি উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বিপদ সীমার ১০১ সে.মি অতিক্রম করছে। ফলে উপজেলায় বন্যার পানিতে ভরতখালী ইউনিয়নের কুকড়াহাট থেকে ভরতখালী গো-হাট পর্যন্ত মিনি বিশ্বরোড ভাঙ্গনের আশংকা দেখা দিয়েছে। জরুরী ভিত্তিতে বালুর বস্তা ফেলে রাস্তা রক্ষা করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। বিভিন্ন রাস্তাঘাট বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। তলিয়ে যাচ্ছে হাজার হাজার একর ফসলি জমি। সরেজমিনে গেলে সাঘাটা ইউপি চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন সুইট জানান, বাঁশহাটা, গোবিন্দী, হাসিলকান্দী, হাটবাড়ী, উঃ সাথালিয়া ও ৫টি আশ্রয়ন কেন্দ্রসহ প্রায় ১৪ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। কিন্তু সরকারীভাবে যে পরিমাণ ত্রাণ সামগ্রী পাওয়া যাচ্ছে তা অতি নগন্য। হলদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান ইয়াকুব আলী জানান, হলদিয়া ইউনিয়নের উঃ দিঘলকান্দী, দঃ দিঘলকান্দী, পাতিলবাড়ী, গাড়ামারা সিপি, চরহলদিয়া, নলছিয়া, বেড়া, গোবিন্দপুর, কালুরপাড়া, সহ ১৪টি গ্রামের প্রায় ২৫ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। হলদিয়া ইউনিয়নে পরপর ২বার বন্যায় মানুষ নিঃস্ব হয়ে পড়েছে। জুমারবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান রোস্তম আলী জানান, ব্যাঙ্গারপাড়া, থৈকরেরপাড়া, পূর্ব-আমদিরপাড়া, কাঠুর, চান্দপাড়া, পূর্ব বসন্তেরপাড়া, পূর্ব জুমারবাড়ী সহ ৫ হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। ভরতখালী ইউপি চেয়ারম্যান সামছুল আজাদ শীতল জানান, চিথুলিয়া, বরমতাইড়, উঃ উল্যা, দঃ উল্যা, সানকিভাঙ্গা, বালুরচর, ভাঙ্গামোড়ের প্রায় ৪ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। হুমকীর সম্মুখীন হয়ে পড়েছে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ও মিনি বিশ্বরোড। কচুয়া ইউপি চেয়ারম্যান মাহবুবর রহমান জানান, রামনগর, পশ্চিম কচুয়া, চন্দনপাঠ গ্রামের কিছু অংশের প্রায় ১ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। নৌকা দিয়ে এসব গ্রামের মানুষ চলাচল করছে। অধিকাংশ বাড়ীর আঙ্গিনায় এবং ঘরে পানি উঠেছে। ফলে তাদেরকে সাংসারিক কাজ করতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। বন্যা কবলিত অনেক পরিবারই তাদের গরু, ছাগল, হাঁস-মুরগি সহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে বিভিন্ন উঁচু রাস্তায় আশ্রয় নিয়েছে। বন্যা দূর্গত এলাকা সাঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উজ্জ্বল কুমার ঘোষ, গাইবান্ধা নির্বাহী প্রকৌশলী (এলজিইডি) মাকছুদুল আলম, সাঘাটা উপজেলা প্রকৌশলী ছাবিউল ইসলাম, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মিঠুন কুন্ডু পরিদর্শন করেন।