আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
ভারত অধিকৃত জম্মু-কাশ্মীরে ব্যর্থ হলো ইজরাইলি গন্ধবোমা। ছররা বন্দুকের বদলে কাশ্মীরের যুবকদের ভিড়কে ছত্রভঙ্গ করতে কখনো মরিচ, কখনো গোলমরিচ বোমা ব্যবহার করেছে ভারতীয় বাহিনী। পরবর্তী ধাপে ‘স্কাঙ্ক’ বা গন্ধবোমা ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেয় সিআরপিএফ।
কাশ্মীরিদের বিক্ষোভ দমন করতে ইসরাইল থেকে ওই গন্ধবোমা আমদানি করে ভারত। জলকামানের মাধ্যমে ব্যবহার করা হয় ওই বোমা। এর ব্যবহারে পানির গুণগত মানে কোনো পরিবর্তন না হলেও, প্রচণ্ড দুর্গন্ধে ভরে যায় চারিদিক।
সিআরপিএফের এক কর্মকর্তার কথায়, ‘এর ঝাঁঝালো গন্ধ অনেকটা পচা মৃতদেহ বা পচে যাওয়া আবর্জনার মতো। এক বার এই পানি গায়ে লাগলে দু’-তিন দিন গন্ধ থেকে যায়।’
কিন্তু সিআরপিএফের আইজি (প্রশিক্ষণ) অতুল কারওয়ালের দাবি, ‘কাশ্মীরে কিন্তু তেমন ফল মেলেনি।’ দেখা গেছে, কার্যত প্রবল গন্ধ উপেক্ষা করেও বিক্ষোভ চালিয়ে গেছে আন্দোলনকারীরা। আপাতত তাই বন্ধ রাখা হয়েছে ওই গন্ধবোমার ব্যবহার।
গন্ধবোমা ব্যর্থ হলেও সিআরপিএফের দাবি গত বছরের তুলনায় চলতি বছরে কাশ্মীরে পাথর ছোড়ার ঘটনা অনেক কমেছে। ২০১৬ সালে ১৫৯০টি পাথর ছোড়ার ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছিল। চলতি বছরে সেখানে মাত্র ৪২৪টি ঘটনা ঘটেছে।
সিআরপিএফ কর্মকর্তাদের দাবি, দু’বছর ধরে কোনো ফল না হওয়ায় যুবকদের একাংশ উৎসাহ হারিয়েছে পাথর ছোড়ায়। এর পিছনে বাইরে থেকে আসা টাকার স্রোত বন্ধ হয়ে যাওয়াও অন্যতম কারণ হিসাবে মনে করছে বাহিনী।
সিআরপিএফ জানিয়েছে, কাশ্মীরে বিক্ষোভ সামলাতে ছররা বন্দুক ব্যবহারে পরিবর্তন আনা হয়েছে। গত বছর অভিযোগ ওঠে ওই বন্দুক থেকে বেরনো ছররা শরীরের কোথায় গিয়ে লাগবে তা যিনি গুলি ছুড়ছেন তার একেবারেই নিয়ন্ত্রণে থাকে না। ফলে ওই ছররার আঘাতে দৃষ্টিশক্তি হারাচ্ছেন বহু আন্দোলনকারী। মারাও যাচ্ছেন অনেকে। যা নিয়ে প্রবল সমালোচনার মুখে পড়তে হয় ভারতীয় সরকারকে। বাধ্য হয়ে সরকার জানায়, ছররার বিকল্প ব্যবস্থা চালু করার কথা ভাবছে তারা।
সিআরপিএফ আরো জানায়, ছররা বন্দুক এখনো কাশ্মীরে ব্যবহার করা হচ্ছে। তবে বন্দুকের নলের মাথায় একটি ‘ডিফ্লেক্টর’ লাগানো হয়েছে। যা ছররার গতিপথকে অভিমুখ দিতে সক্ষম। ওই ‘ডিফ্লেক্টর’ এমন ভাবে লাগানো হয়েছে যাতে বন্দুক থেকে বেরনো ছররা কোমরের নীচের অংশে লাগে। বাহিনীর দাবি, এই ব্যবস্থায় সাফল্য এসেছে। গত কয়েক মাসে বিক্ষোভকারীদের ঠেকাতে ছররা বন্দুক ব্যবহার হলেও কোথাও চোখে আঘাতের ঘটনা শোনা যায়নি।
আনন্দবাজার অবলম্বনে