সম্পাদকীয়ঃ
ঢাকা-৮ আসন থেকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন রিকশাচালক সুজন। বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় তিনি জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন। তার মতো একজন নিম্নআয়ের শ্রমজীবী মানুষের নির্বাচনী মাঠে নামা দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
মনোনয়ন নেওয়ার পর সুজন বলেন, “এতিমের টাকা মেরে যখন সংসদে দাঁড়ানো যায়, যাত্রাপালায় নাইচা সংসদে যেতে পারলে একজন রিকশাওয়ালা কেন পারবে না” এমন ব্যঙ্গাত্মক মন্তব্য এখন সাধারণ মানুষের মুখে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এই মন্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ব্যাপক আলোচিত।
তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, সুজনের প্রার্থীতা গণতান্ত্রিক অধিকারের ইতিবাচক প্রতিফলন হলেও ভোটারদের সিদ্ধান্ত হওয়া উচিত আবেগের ওপর নয়, যোগ্যতা, সততা, দক্ষতা ও বাস্তবতার ভিত্তিতে। কারণ সংসদ হলো দেশের নীতিনির্ধারণের কেন্দ্রবিন্দু, যেখানে ৩০০ জন প্রতিনিধির সিদ্ধান্ত নির্ধারণ করে দেশের ১৮ কোটি মানুষের ভবিষ্যৎ, উন্নয়ন, নীতিমালা ও কূটনৈতিক অগ্রগতি।
বিশেষজ্ঞদের ভাষ্যে, জুলাই–আগস্ট পরবর্তী ‘নতুন বাংলাদেশ’ গঠনের যে প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে, তা বাস্তবায়নে দরকার টেকসই পরিকল্পনা, প্রশাসনিক দক্ষতা ও সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা। তাই জনপ্রিয়তা বা আবেগ নয়, দেশের বৃহত্তর স্বার্থ ও উন্নয়ন বিবেচনায় ভোটারদের ভোট প্রদান করা জরুরি।
এদিকে জুলাই বিপ্লবের সময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের স্যালুট জানিয়ে সুজন আলোচনায় আসেন। সেই পরিচিতির ধারাবাহিকতায় এবার তার নির্বাচনে অংশগ্রহণ বহু ভোটারের নজর কাড়ছে।
সুজনের মতো সাধারণ মানুষের প্রার্থীতা একদিকে যেমন নাগরিক অধিকারের প্রসার ঘটায়, অন্যদিকে গণতন্ত্রের ভিত্তিকে শক্তিশালী করে। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত যোগ্য নেতৃত্ব, সততা এবং কার্যকর পরিকল্পনার ভিত্তিতেই হওয়া উচিত বলে মনে করছেন সচেতন মহল।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.