সাকিব আহসান,পীরগঞ্জ, ঠাকুরগাঁওঃ
ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার কোষারাণীগঞ্জ ইউনিয়নে আইন অমান্য করে নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ঘটনা নতুন নয়। তবে সাম্প্রতিক দিনগুলোতে নাকাটি ব্রীজের পাশের ঘটনাটি স্থানীয়দের মধ্যে নতুন করে ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে। প্রশাসনের জরিমানা ও নিষেধাজ্ঞার পরেও ড্রেজার মেশিন বন্ধ হয়নি; বরং আরও প্রকাশ্য হয়ে উঠেছে এই বেআইনি কার্যক্রম।
নির্ভরযোগ্য সূত্র ও স্থানীয়দের অভিযোগ—শালেরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক মোশাররফ হোসেন এবং তাঁর ব্যবসায়িক সহযোগী সিরাজুদ্দীন নিয়মিতভাবে নদীর নিকটস্থ পয়েন্টে ড্রেজার বসিয়ে বালু তুলছেন। যেখান থেকে ড্রেজিং নিষিদ্ধ, সেখানেই রাত-দিন বালু তোলার শব্দে নদীর তীর কেঁপে উঠছে। স্থানীয় প্রশাসনের নির্দেশনা ও জরিমানার তোয়াক্কা না করে যে হারে বালু তোলা হচ্ছে, তাতে নাকাটি ব্রীজের স্থায়িত্ব, নদীর প্রবাহ ও আশপাশের জমি মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়ছে।
অভিযোগ আরও উদ্বেগজনক হয় যখন সাংবাদিক পরিচয়ে ঘটনাস্থলের হালনাগাদ জানতে শিক্ষক মোশাররফ হোসেনকে ফোন করা হয়। প্রশ্ন শোনার সাথে সাথেই তিনি ক্ষুব্ধ ও আক্রমণাত্মক কণ্ঠে বলেন, “আমি কোনো প্রেসক্লাব, সাংবাদিক হিসাব করিনা।” তার এই প্রতিক্রিয়া শুধু সাংবাদিকতার প্রতি অবমাননা নয়; বরং আইন অমান্য করার বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার এক ধরনের স্বীকারোক্তি বলেই মনে করছেন স্থানীয়রা।
ড্রেজার মেশিন দিয়ে এভাবে নদী ক্ষতিগ্রস্ত করা বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০, পরিবেশ সংরক্ষণ আইন এবং স্থানীয় প্রশাসনের নির্দেশনার সরাসরি লঙ্ঘন। বিশেষজ্ঞদের মতে, নিষিদ্ধ এলাকায় ড্রেজার পরিচালনা করলে নদীর গতি পরিবর্তন, তীর ধস, কৃষিজমির ক্ষতি, এমনকি ব্রীজের ভিত্তি দুর্বল হয়ে পড়ার মতো দীর্ঘমেয়াদি বিপর্যয় তৈরি হতে পারে।
স্থানীয়দের দাবি আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার পরও যদি অভিযুক্তরা এতটা সাহসী হয়ে ফের কাজ শুরু করতে পারে, তবে প্রশাসনিক তদারকিতে বড় ধরনের ফাঁক রয়ে গেছে। দ্রুত কঠোর ব্যবস্থা না নিলে নাকাটি ব্রীজের আশপাশের পুরো এলাকা আগামী বর্ষায় বড় ধরনের ঝুঁকিতে পড়তে পারে।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.