মোঃ ফেরদাউছ মিয়া,পলাশবাড়ী,গাইবান্ধাঃ
সরকারি সম্পত্তি দখলে কলেজ শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ, প্রশাসনের নীরবতায় জনমনে ক্ষোভ।
গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে সরকারি সম্পত্তি দখল এবং বিদ্যালয়ের মার্কেটের একটি দোকানঘর ভাঙার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক কলেজ শিক্ষক শ্যামল চৌধুরীর বিরুদ্ধে। তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের তিন মাস পার হলেও প্রশাসনের উদ্যোগ না থাকায় স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, পলাশবাড়ী এসএম মডেল পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের মালিকানাধীন মার্কেটের “সরকার অটোজ” নামের দোকানটি বরাদ্দপ্রাপ্ত ভাড়াটিয়ার কাছ থেকে বেশি টাকা দিয়ে দখল করা হয়। পরে স্থানীয় কিছু প্রভাবশালীর সহায়তায় দোকান ঘরটি জোরপূর্বক ভেঙে শ্যামল চৌধুরীর ব্যক্তিমালিকানাধীন ‘রাজিয়া চৌধুরী শপিং মল’-এর প্রবেশপথ তৈরি করা হয়।
ঘটনার পর জনস্বার্থে পলাশবাড়ী প্রেসক্লাবের সভাপতি শাহ আলম সরকার গত ১৬ জুন গাইবান্ধা জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। তদন্ত প্রতিবেদন জমা হলেও তিন মাস ধরে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় এলাকায় বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০২৩ সালের ১ মার্চ তৎকালীন বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান নয়ন এবং প্রধান শিক্ষক সুশীল চন্দ্র সরকার ভাড়াটিয়াদের উদ্দেশ্যে নোটিশ জারি করে সতর্ক করেছিলেন— অনুমতি ছাড়া কোনো দোকান ভাড়া, সাবলেট বা হস্তান্তর করা যাবে না। কিন্তু পরবর্তী সময়ে একজনের বদলি ও অন্যজনের অবসরের সুযোগে দোকানঘর ভাঙার ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে শপিং মলের মালিক শ্যামল চৌধুরী বলেন, “আমি বিষয়টি বিস্তারিত জানি না। তদারকির দায়িত্বে থাকা মিজান চৌধুরী ভালো বলতে পারবেন।”
মিজান চৌধুরী জানান, “বিদ্যালয় মার্কেট ভেঙে রাস্তা তৈরির কোনো অনুমতি আমাদের কাছে নেই।”
অভিযোগকারী শাহ আলম সরকার বলেন, “তদন্ত প্রতিবেদন জমা পড়ার পরও প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। সরকারি সম্পত্তি উদ্ধারে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।”
নবাগত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ জাবের আহম্মেদ বলেন, “ফাইলপত্র পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
স্থানীয় সচেতন নাগরিকরা বলেন, সরকারি বিদ্যালয়ের সম্পত্তি দখল করে ব্যক্তিমালিকানাধীন মার্কেটের প্রবেশপথ নির্মাণের মতো গুরুতর ঘটনায় প্রশাসনের নীরবতা রহস্যজনক। তারা দ্রুত সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।