1. arifcom24@gmail.com : Arif Uddin : Arif Uddin
  2. admin@khoborbari24.com : arifulweb :
  3. editor@khoborbari24.com : editor : Musfiqur Rahman
  4. hostinger@khoborbari24.com : Hostinger Transfer : Hostinger Transfer
  5. khoborbari@khoborbari24.com : Khoborbari : Khoborbari
  6. khobor@gmail.com : :
রবিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৬:০৫ অপরাহ্ন
৬ই পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
১লা রজব, ১৪৪৭ হিজরি
শিরোনামঃ
পলাশবাড়ীর সন্তান সবুজ মিয়া সুদানে শান্তিরক্ষা মিশনে শহীদ,রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় নিজ গ্রামে দাফন সম্পন্ন পীরগঞ্জে মোকদ্দমার সম্পত্তি নিয়ে বিরোধ,জনভোগান্তির বাস্তব চিত্র,আইন উপেক্ষায় নৈরাজ্যের বাস্তব চিত্র তারাগঞ্জে শহীদ শরীফ ওসমান বিন হাদির গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত তারাগঞ্জে সমৃদ্ধি কর্মসূচির উদ্যোগে উপজেলা দিবস ও উন্নয়ন মেলা অনুষ্ঠিত জাতীয় কবি কাজী নজরুলের কববের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত শহীদ হাদি ধর্মের নামে নৃশংসতা: মানবতা ও ইসলামের চরম অবমাননা ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদি হত্যার বিচারের দাবীতে গাইবান্ধায় বিক্ষোভ গোবিন্দগঞ্জে শহীদ ওসমান হাদির রুহের মাগফিরাত কামনায় দো’আ ও মোনাজাত তারাগঞ্জে শহীদ শরীফ ওসমান হাদীর হত্যাকারীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ হাদী হত্যার বিচার দাবিতে পলাশবাড়ীতে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন

“২৪ বছর পর দুই বোনের আলিঙ্গন” ​ ‎কাঁটাতারের বেড়া ডিঙিয়ে শ্যামাপূজায় লালমনিরহাট সীমান্তে দুই বাংলার আবেগাপ্লুত পুনর্মিলন

  • আপডেট হয়েছে : সোমবার, ২০ অক্টোবর, ২০২৫
  • ১২৫ বার পড়া হয়েছে


‎জিন্নাতুল ইসলাম জিন্না,লালমনিরহাট,রংপুরঃ
‎লালমনিরহাট সীমান্তে জারিধরলার শ্যামা মন্দিরের পুজোয় দু’দেশের মানুষের মিলন মেলা বসেছে। এ পূজোয় পুরোহিত বাংলাদেশের আর পূজারী ভারতের হয়ে থাকে।

‎​রবিবার (১৯ অক্টোবর) দিনব্যাপী শ্যামা পুজা বা ‘বুড়ির মেলা’ উপলক্ষে আজ লালমনিরহাট সীমান্ত ছিল একেবারে উন্মুক্ত। ২০০৮ সালের পর এই প্রথম দুই দেশের মানুষ বিনা পাসপোর্ট, বিনা ভিসায় অবাধে মেলায় অংশ নিয়েছে।
‎​

মেলা হতে ফিরে আসা যুবক শ্রী হৃদয় কুমার (৪৫) জানান, মেলায় দুই বোনকে একে অপরকে বুকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে দেখা যায়। প্রায় দুই যুগ পর আবার দেখা দুই বোনের— বাংলাদেশের শুসিলা রানী (৬০) এবং ভারত হতে নিয়তি রানী (৫৮) এসেছেন মেলায়। এই মেলা অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে দুই সপ্তাহ ধরে ব্যাপক প্রচার প্রচারণা করেছে প্রভাবশালী মহল।
‎​

লালমনিরহাটের দুর্গাপুর ও মোগলহাট সীমান্তে ধরলা নদীর পাড়ে ৯২৭ নম্বর সীমান্ত পিলারের কাছে রবিবার দিনভর অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত মিলন মেলায় দেখা হয় তাদের। একে অপরকে দেখার পর দশ-পনের মিনিট ধরে কেবল কান্না, আর কান্না। চোখের জল বলে দেয় কতটা প্রশান্তি ছিল এই মিলনে।
‎​

বড় বোন বাংলাদেশের শুসিলা রানী এনেছিলেন মিষ্টি, ইলিশ মাছ আর টাঙ্গাইলের শাড়ি। ছোট বোন নিয়তি রানী ভারত থেকে এনেছিলেন মিষ্টি, মসলা ও ভারতের প্রিন্ট শাড়ি এবং জামদানী শাড়ি। উপহার বিনিময়ের সময়ও দুই বোনের চোখে অশ্রু ঝরেছে অনর্গল।
‎​

বাংলাদেশের শুসিলা রাণী কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, “প্রায় ২৪ বছর থাকি বোনের সাথে মোর দেখা স্বাক্ষাত হয় না। ২০০৯ সালের পর মোবাইল ফোনে কথা হয়। তাতে মন ভরে না। ২০২১ সালের পর ভিডিও কলে কথা হয়। ভিডিও কলোত কথা বলার সময় বুকটা ফেটে যায়। বুড়ির মেলাত আসি বোনের দেখা পেয়া মনটা জুড়ি গ্যালো।”
‎​

বাংলাদেশের আদিতমারী উপজেলার দেওডোবা গ্রামের শুসিলা রানী এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার জেলার দিনহাটা থানার গিদালদহ গ্রামের নিয়তি রানী। নিয়তি রানী জানান, প্রায় ৩৫ বছর আগে তিনি ভারতে চলে আসেন। মা-বাবাকে রেখে এসেছিলেন, তারা মারা গেছেন— দেখতে পাননি। এখন বাংলাদেশে শুধু দিদি বেঁচে আছেন। এমন হাজার পরিবারের গল্প বুনেছে এই মেলায়।
‎​

প্রতি বছরই ধরলা নদীপাড়ে সীমান্তের কোলঘেঁষে ভারতের কোচবিহার জেলার দিনহাটা থানার দড়িবাস এলাকায় শ্রী শ্রী মা বৃদ্ধেশ্বরী দেবীর পূজা উপলক্ষে বসে এই সীমান্ত মেলা। স্বাধীনতার আগে থেকে পূজা ও মিলন মেলা একসাথে চলছে এখানে। ১৯৯২ সালে কড়াকড়ির কারণে বাংলাদেশ হতে প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল। এ বছর পুনরায় উন্মুক্ত হয়ে গেছে।

‎​একটি সূত্র বলছে, এ বছর এই পূজার বিশেষত্ব— মন্দিরের পুরোহিত আসেন বাংলাদেশ থেকে আর পূজারী ভারতের। দুই দেশের মানুষ একসাথে পূজা দেন, একসাথে প্রসাদ খান, আর একদিনের জন্য হলেও ভুলে যান সীমান্ত রেখার বিভাজন।
‎​

বাংলাদেশের পুরোহিত বিকাশ চন্দ্র চক্রবর্তী এবং ভারতের পূজারী জ্যোতিষ চন্দ্র রায় জানান, এই আয়োজন সম্প্রীতির প্রতীক। দুই দেশের ভক্তরা মিলেই মন্দির পরিচালনা করেন। রবিবার দিনভর পূজা উপলক্ষে মিলন মেলায় ২০-২৫ হাজারের বেশি ভক্ত ও দর্শনার্থী সমবেত হন। কোনো প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি মেলায়।
‎​

মেলায় শুধু লালমনিরহাট নয়, রংপুর, গাইবান্ধা, দিনাজপুর, নীলফামারী, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড় ও কুড়িগ্রাম সহ দেশের নানা জেলা হতে মানুষ এসেছে। শুধু হিন্দু সম্প্রদায় নয়, মুসলিম, খৃষ্টান সহ নানা সম্প্রদায়ের মানুষ আসে। কারণ দেশভাগের কারণে ভাগ হয়ে যাওয়া স্বজনরা এই মেলায় একত্রিত হতে পারে। এখানে এসে আত্মীয়দের বুকে জড়িয়ে ধরেছে। সীমান্তের এই মেলায় কাঁদে সবাই, কিন্তু সেই কান্নায় থাকে আনন্দের সুর— এটা সীমান্ত পেরোনো প্রেমের এক অফুরন্ত চিত্র।

খবরটি শেয়ার করুন

Comments are closed.

এরকম আরও খবর
© All rights reserved © 2025

কারিগরি সহযোগিতায় Pigeon Soft