আরিফ উদ্দিনঃ গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলায় এ বছর ৫৭ পূজামন্ডপে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে শারদীয় দূর্গোৎসব পালনে প্রশাসন সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন। বেশির ভাগ পূজামন্ডপ ঘুরে দেখা যায় প্রতিমা সমূহে চলছে রং-তুলিসহ শেষ মূহুর্ত্বের কারু কাজ।
শিল্পীর হাতের রং-তুলির আঁচর। প্রায় দুই সপ্তাহ আগে থেকে বাঁশ-কাঠ, খড়-সুতলি আর কাঁদামাটি দিয়ে শুরু হয় প্রতিমা তৈরির কাজ। পূজার আর মাত্র একদিন বাকি। কয়েকদিন আগে থেকেই দিন-রাত লাগাতার ব্যস্তসময় কাটছে প্রতিমা শিল্পীদের। উপজেলা সদরসহ প্রায় প্রতিটি পূজা মন্ডপ’ই কংক্রিট ইটের তৈরী। বাৎসরিক পূজা উদযাপনে হাতেগোনা কয়েকটি মন্ডপ অস্থায়ী ছাউনি ঘেরা দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে। পূজামন্ডপ চত্বর জুড়ে নানা রংযের রঙ্গিন কাপড়ের ডেকোরেশনে দৃষ্টি নন্দন করে তোলা হয়েছে।
এখন প্রতিমা আসনের স্থান সাজানো হচ্ছে। ২৮ সেপ্টেম্বর ষষ্ঠমীর মধ্যদিয়ে বিশ্ব শান্তির কল্যাণে সনাতন হিন্দু ধর্মালম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দূর্গাপূজায় দেবীকে আসনে রাখা হবে বলে জানান পুজারি-ভক্তবৃন্দ।
প্রতিমা তৈরির কারিগর শ্রী খোকন চন্দ্র মালাকার জানায়, অত্যন্ত নিখুঁত ভাবে প্রতিমাগুলো তৈরী করা হয়েছে। দেশী-বিদেশী রং-তুলির বর্ণিল আঁচর শেষে দেব-দেবীর শরীরে চলছে জামা কাপড়সহ অলঙ্কার-গহনা পড়ানোর কাজ। পূজা প্যান্ডেল আলোকসজ্জার জন্য লাগানো হচ্ছে নানা রংয়ের বৈদ্যুতিক বাতি। প্রতিমা তৈরীর শিল্পী প্রদীপ মালাকার জানান, প্রায় মাসখানেক আগে থেকে প্রতিমা তৈরীর কাজ শুরু করেছেন তারা। এবছর প্রতিকূল আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় প্রতিমা তৈরীতে কোন বিড়ম্বনা দেখা দেয়নি।
এদিকে; ১টি পৌরসভা এবং উপজেলার ৮ ইউনিয়নে মোট ৫৭ মন্ডপে আনন্দঘন পরিবেশে শারদীয় দূর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হবে। বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্ঠান ঐক্য পরিষদ উপজেলা শাখার সভাপতি বাবু দীলিপ চন্দ্র সাহা জানান, হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব দূর্গাপুজা সুষ্ঠুভাবে উদ্যাপনে ইতোমধ্যেই সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। তারা পূজা চলাকালীন উপজেলার সর্বত্র সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিকসহ সার্বক্ষনিক নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের দাবী জানান।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজমুল আলম জানান, সনাতন হিন্দুধর্মালম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দূর্গাপূজা। মন্ডপ সমূহে নির্বিঘ্নে পূজা উদ্যাপন করতে পারে সেজন্য প্রতিটি পূজামন্ডপে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবক টিম নিয়োজিত রয়েছে।
থানা অফিসার ইনচার্জ মো. জুলফিকার আলী ভূট্টো বলেন, প্রতি বছরের মত এবছরও শারদীয় দুর্গোৎসব পালনে সকল ক্রিয়াকর্ম যেন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হওয়ার লক্ষ্যে পুলিশের পক্ষ সবধরনের কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। পুলিশের পাশাপাশি র্যাব-আনসার ভিডিপি সদস্য ছাড়াও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অন্যান্য সদস্যরা মন্দির চত্বরে নিরাপত্তা নির্বিঘ্ন করতে সার্বক্ষণিক নিয়োজিত থাকবে। ফলে উপজেলার সকল পূজামন্ডপ সমূহে সুষ্ঠু-নিরবিচ্ছিন্ন ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে দূর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হবে।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.