সাকিব আহসান,পীরগঞ্জ, ঠাকুরগাঁওঃ
ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার ৭ নম্বর হাজীপুর ইউনিয়নে হাজীপুর মহাবিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণকাজ নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর দৃশ্যমান ও ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে। দীর্ঘদিন ধরে আলোচিত অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার অভিযোগের প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নড়েচড়ে বসেছে, যা স্থানীয়দের মধ্যে স্বস্তি ও আস্থার সঞ্চার করেছে।
সংবাদ প্রকাশের পরপরই শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের (EED) উপসহকারী প্রকৌশলী অলক রায় সরাসরি নির্মাণকাজের তত্ত্বাবধানে যুক্ত হন। তার উপস্থিতিতে নির্মাণসাইটে নিয়মকানুন ও প্রকৌশল মানদণ্ড বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ছাদ নির্মাণে বাঁশের খুঁটির পরিবর্তে এখন নির্ধারিত মানের স্টিল প্রপস ব্যবহার শুরু হয়েছে। একই সঙ্গে সাটারিং, বালু ও অন্যান্য নির্মাণসামগ্রীর মান যাচাই করে ত্রুটি সংশোধন করা হচ্ছে।
প্রকৌশলী অলক রায়ের সরাসরি তদারকি নির্মাণকাজে একটি শৃঙ্খলা ফিরিয়ে এনেছে। সাইটে কাজ করা শ্রমিক ও সংশ্লিষ্টদের মধ্যে দায়িত্ববোধ বেড়েছে এবং কাজের গতি ও গুণগত মান দুটোই এখন নজরদারির আওতায়। বাংলাদেশ জাতীয় বিল্ডিং কোড (BNBC) অনুযায়ী ফর্মওয়ার্ক, প্রপিং ও কংক্রিটিংয়ের নিয়ম অনুসরণে তিনি কঠোর অবস্থান নিয়েছেন বলে স্থানীয়রা জানান।
এ ছাড়া প্রকল্পের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে প্রজেক্ট প্রোফাইল সাইনবোর্ড স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যাতে প্রকল্পের ব্যয়, ঠিকাদার ও তদারকি কর্তৃপক্ষের তথ্য স্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকবে। এটি Public Procurement Rules (PPR) 2008 অনুযায়ী জবাবদিহি নিশ্চিত করার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
স্থানীয় শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা মনে করছেন এই হস্তক্ষেপ সময়োপযোগী এবং প্রয়োজনীয়। কারণ একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভবন শুধু ইট-পাথরের কাঠামো নয়, বরং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের নিরাপত্তা ও শিক্ষার ভিত্তি। প্রকৌশল মান বজায় রেখে কাজ হলে ভবনটি দীর্ঘমেয়াদে নিরাপদ ও টেকসই হবে।
সবচেয়ে আশাব্যঞ্জক দিক হলো এই ঘটনাটি প্রমাণ করেছে যে দায়িত্বশীল সাংবাদিকতা ও প্রশাসনিক সদিচ্ছা একসাথে কাজ করলে ইতিবাচক পরিবর্তন সম্ভব। উপসহকারী প্রকৌশলী অলক রায়ের সক্রিয় ভূমিকা ও পেশাদার তদারকি হাজীপুর মহাবিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণকে সঠিক পথে ফিরিয়ে এনেছে, যা নিঃসন্দেহে তার পেশাগত সততা ও দায়বদ্ধতার পরিচয় বহন করে।
এখন প্রত্যাশা এই নজরদারি অব্যাহত থাকবে এবং ভবনটি সম্পূর্ণভাবে প্রকৌশল মান ও সরকারি বিধিমালা মেনে শেষ হবে। কারণ নিরাপদ ভবন মানেই নিরাপদ শিক্ষা, আর সেটিই এই প্রকল্পের সবচেয়ে বড় সাফল্য।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.