1. arifcom24@gmail.com : Arif Uddin : Arif Uddin
  2. admin@khoborbari24.com : arifulweb :
  3. editor@khoborbari24.com : editor : Musfiqur Rahman
  4. hostinger@khoborbari24.com : Hostinger Transfer : Hostinger Transfer
  5. khoborbari@khoborbari24.com : Khoborbari : Khoborbari
  6. khobor@gmail.com : :
মঙ্গলবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯:৪৭ অপরাহ্ন
২৪শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
১৮ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি
শিরোনামঃ
গাইবান্ধায় নারীমুক্তি কেন্দ্রের উদ্যোগে রোকেয়া দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা বেগম রোকেয়া দিবস উপলক্ষে গাইবান্ধায় সিপিবি’র নারী সমাবেশ গাইবান্ধায় মহিলা পরিষদের উদ্যেগে রোকেয়া দিবসে দৌড় প্রতিযোগিতা গাইবান্ধায় কুপিয়ে যুবকের কবজি বিচ্ছিন্ন, গ্রেপ্তার ৩ পলাশবাড়ীতে ডা. সাদিকের নির্বাচনী উঠান বৈঠক গাইবান্ধায় রোকেয়া দিবস পালিত গাইবান্ধায় আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস পালিত রংপুরে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় বেগম রোকেয়াকে স্মরণ, জন্ম-মৃত্যুদিবসে তিন দিনব্যাপী কর্মসূচি তারাগঞ্জে গোপনে নিয়োগ প্রক্রিয়া : তথ্য চাইতেই সাংবাদিকদের উপরে চড়াও হন অধ্যক্ষ সালাম। আদর্শ শিক্ষকরাই পরিবর্তনের অগ্রদূত -তারাগঞ্জে আজহারুল ইসলাম

রংপুরে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় বেগম রোকেয়াকে স্মরণ, জন্ম-মৃত্যুদিবসে তিন দিনব্যাপী কর্মসূচি

  • আপডেট হয়েছে : মঙ্গলবার, ৯ ডিসেম্বর, ২০২৫
  • ৪০ বার পড়া হয়েছে

নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার পায়রাবন্দ গ্রামে গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় স্মরণ করা হয়েছে এই মহীয়সী নারীকে। রাষ্ট্রীয়ভাবে পালিত বেগম রোকেয়া দিবসকে কেন্দ্র করে গ্রামজুড়ে সৃষ্টি হয় উৎসবমুখর পরিবেশ।

বিভিন্ন সংগঠন, প্রশাসন ও সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণে দিনভর আয়োজন হয়ে ওঠে বর্ণাঢ্য ও অর্থবহ।

২২ বছর ধরে স্থবির থাকা বেগম রোকেয়া স্মৃতি কেন্দ্রটি অবশেষে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের হাতে হস্তান্তর করা হয়। বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আজম স্মৃতি কেন্দ্রের ফাইলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শওকাত আলীর হাতে তুলে দেন। উপাচার্য জানান, স্মৃতি কেন্দ্রকে কেন্দ্র করে নতুন গবেষণাগার স্থাপন, রোকেয়ার জীবন-ঐতিহ্য সংরক্ষণ এবং একাডেমিক গবেষণাকে বিস্তৃত করার উদ্যোগ নেওয়া হবে। তাঁর মতে, রোকেয়ার স্বপ্ন ও আদর্শকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দিতে এই সিদ্ধান্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি।

ভোর থেকেই বেগম রোকেয়ার জন্মভিটায় ভিড় বাড়তে থাকে। ভক্ত, অনুসারী, গবেষক, শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন জেলার মানুষ বেগম রোকেয়ার স্মৃতিচিহ্নগুলো দেখতে ও শ্রদ্ধা নিবেদন করতে পায়রাবন্দে জড়ো হন। গ্রামজুড়ে ছিল সাজসজ্জা, আলোকসজ্জা, স্থানীয় নারীদের তৈরি পণ্যের দোকান এবং সাংস্কৃতিক আয়োজনের প্রস্তুতি।

সকালে রংপুর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল আহসান স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পমাল্য অর্পণ করে কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। জাতীয় সংগীত পরিবেশনের পর তিন দিনব্যাপী কর্মসূচি শুরু ঘোষণা করা হয়। মঞ্চে ছিল আলোচনাসভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শিশু-কিশোরদের পরিবেশনা, রোকেয়া বিষয়ক বই প্রদর্শনী, পাঠচক্র এবং রোকেয়া মেলা। মেলায় স্থানীয় নারীদের তৈরি হস্তশিল্প, বই, ঐতিহ্যবাহী উপকরণ এবং রোকেয়ার সাহিত্যকর্ম প্রদর্শন আকর্ষণ সৃষ্টি করে।

আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, নারী সমাজকে অন্ধকার থেকে আলোয় আনতে বেগম রোকেয়া যে সংগ্রাম চালিয়েছেন, তা বিশ্ব ইতিহাসে বিরল। তাঁর লেখনী, বিশেষ করে ‘অবরোধবাসিনী’, ‘সুলতানা’স ড্রিম’ আজও নারী-পুরুষ সমতা, মানবিক মূল্যবোধ এবং সামাজিক সংস্কারে অনুপ্রেরণা জোগায়। বক্তারা উল্লেখ করেন, তাঁর সংগ্রাম নারী শিক্ষার অগ্রযাত্রার ভিত্তি তৈরি করেছে। ফলে আজ দেশ নারী ক্ষমতায়ন, শিক্ষা ও কর্মসংস্থানে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করতে পেরেছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, বেগম রোকেয়ার জন্ম-মৃত্যুদিবস হওয়ায় দিনটি তাদের কাছে আবেগের। পরিবার-পরিজন নিয়ে তারা এই দিনটিকে উৎসব হিসেবে পালন করেন।

দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ আসায় গ্রামজুড়ে যেন মিলনমেলার পরিবেশ সৃষ্টি হয়। রোকেয়ার স্মৃতির সঙ্গে জড়িয়ে থাকা বাড়ি, উঠান, ব্যবহৃত স্থানগুলো দেখতে সবাই আগ্রহ দেখায়। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্ম তাঁর সংগ্রাম ও সাহিত্য সম্পর্কে জানার সুযোগ পাচ্ছে।

দর্শনার্থীরা বলেন, রোকেয়া না থাকলে এই অঞ্চলে নারী শিক্ষার দ্রুত অগ্রগতি সম্ভব হতো না। তাঁর কলম ছিল বিদ্রোহী, সচেতনকারী এবং ভবিষ্যৎ সমাজ বিনির্মাণের হাতিয়ার। তিনি অন্ধতা, কুসংস্কার ভাঙতে এবং নারীকে নিজের অধিকার সম্পর্কে সচেতন করতে যে ভূমিকা রেখেছেন, তা আজও সমানভাবে প্রাসঙ্গিক।

১৮৮০ সালের এই দিনে পায়রাবন্দ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন বেগম রোকেয়া এবং ১৯৩২ সালের একই দিনে মৃত্যুবরণ করেন তিনি। তাই দিনটি জাতির কাছে বিশেষ মর্যাদার। প্রতিবছর এই দিনে রাষ্ট্রীয়ভাবে দিবসটি পালন করা হয়, তবে পায়রাবন্দে আয়োজনটিকে ঘিরে থাকে আলাদা আবেগ ও ঐতিহাসিক গুরুত্ব।

দিনব্যাপী কর্মসূচি পরিদর্শন শেষে পায়রাবন্দ বেগম রোকেয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মাহেদুল আলম বলেন, রোকেয়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নে জন্মভিটাটিকে আরও সুরক্ষিত করা প্রয়োজন। তিনি বলেন, ‘এই আয়োজন শুধু স্মরণ নয়, রোকেয়ার আদর্শকে নতুন করে ধারণ করার একটি সুযোগ।’

রংপুর জেলা প্রশাসক এনামুল আহসান বলেন, সারা দেশের মতো রংপুরেও যথাযোগ্য মর্যাদায় বেগম রোকেয়া দিবস উদ্‌যাপন হচ্ছে। তিনি বলেন, “নারী জাগরণে তাঁর অবদান অনন্য। এই আয়োজনের মাধ্যমে আমরা তাঁর স্মৃতি ও আদর্শকে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে ছড়িয়ে দিতে চাই।”

বেগম রোকেয়ার আদর্শ, সংগ্রাম ও স্বপ্নের আলোয় আলোকিত হয়ে শেষ হয় কর্মসূচির প্রথম দিনের আয়োজন।

খবরটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

এরকম আরও খবর
© All rights reserved © 2025

কারিগরি সহযোগিতায় Pigeon Soft