সাকিব আহসান,পীরগঞ্জ, ঠাকুরগাঁওঃ
ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে ৩৪ বিএনসিসি ব্যাটালিয়নের বাৎসরিক প্রশিক্ষণ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে দিনব্যাপী মাদক বিরোধী প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। মহাস্থান রেজিমেন্টের অধীন পরিচালিত এই বিশেষ প্রশিক্ষণ কর্মসূচি সোমবার (৩ ডিসেম্বর) সকাল নয়টা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত পীরগঞ্জ সরকারি কলেজ প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয়। কার্যক্রমটির সমন্বয় ও আয়োজন করে পীরগঞ্জ সরকারি কলেজ বিএনসিসি প্লাটুন; সার্বিক সহযোগিতায় ছিল মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, ঠাকুরগাঁও জেলা কার্যালয়।
প্রশিক্ষণ কর্মশালায় উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন পীরগঞ্জ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো: বদরুল হুদা।প্রশিক্ষণে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ঠাকুরগাঁও জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক হারুন আর রশিদ। তিনি মাদক ব্যবসার আধুনিক রূপ, কিশোর-কিশোরীদের টার্গেট করে পরিচালিত সাইকোলজিক্যাল ম্যানিপুলেশন, ডিজিটাল নেটওয়ার্ক ব্যবহার, এবং মাদকের সামাজিক ও পারিবারিক ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে বিশদ উপস্থাপনা করেন। তিনি প্রশিক্ষণার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, “মাদক বিরোধী লড়াই কেবল আইন প্রয়োগকারী সংস্থার যুদ্ধ নয়,এটি সামাজিক দায়বদ্ধতার সামগ্রিক চ্যালেঞ্জ। যুবসমাজ সজাগ না হলে কোনো আইনই কার্যকর হয় না।”
আলোচনাসভা সঞ্চালন করেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ঠাকুরগাঁও জেলা কার্যালয়ের প্রসিকিউটর সুবল চন্দ্র শীল।
সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মো. বদরুল হুদা প্রশিক্ষণার্থীদের মধ্যে নৈতিক দৃঢ়তা গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, শিক্ষাঙ্গনে মাদকবিরোধী চেতনা বিস্তার করতে বিএনসিসি সদস্যরা হতে পারে সবচেয়ে কার্যকরী পরিবর্তনকারী শক্তি।
পীরগঞ্জ বিএনসিসি প্লাটুনের লেফটেন্যান্ট (বিএনসিসিও) মো. একরামুল হক জানান, ব্যাটালিয়নের বার্ষিক প্রশিক্ষণ পরিকল্পনায় শুধু শারীরিক সক্ষমতা নয়, বরং নৈতিকতা, নেতৃত্ব, সংকট ব্যবস্থাপনা ও সামাজিক দায়িত্ববোধকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। মাদকবিরোধী এই কর্মশালা সেই সামগ্রিক উন্নয়ন কাঠামোর একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
দিনব্যাপী প্রশিক্ষণে শিক্ষার্থীদের জন্য বাস্তবভিত্তিক সেশন, ভিডিও উপস্থাপনা, গ্রুপ ডিসকাশন এবং সাইবার-নির্ভর মাদক প্রতিরোধ নিয়ে বিশেষ মডিউল পরিচালনা করা হয়। অংশগ্রহণকারীরা মাদক শনাক্তকরণ, ব্যক্তিগত নিরাপত্তা, পিয়ার প্রেসার মোকাবিলা, কমিউনিটি-অ্যাকশন মডেল এবং সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন পরিচালনার কৌশল শিখে।
প্রশিক্ষণ শেষে অংশগ্রহণকারীরা অঙ্গীকার করেন নিজে পরিষ্কার থাকবেন, পরিবারকে সতর্ক করবেন এবং এলাকায় সচেতনতা তৈরিতে সক্রিয় ভূমিকায় থাকবেন।