খবরবাড়ি ডেস্কঃ গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলা প্রশাসনের অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগে মহান বিজয় দিবসের অনুষ্ঠান বর্জন করলেন বিএনপি, জামায়াত, এনসিপি ও গণঅধিকার পরিষদসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ।
মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর)সকাল সাড়ে ১১টায় উল্লেখিত রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ বিজয় দিবসের অনুষ্ঠান বর্জনের ঘোষণা দেন।
এরআগে, রাজনৈতিক দলগুলোর আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ যথাসময় স্থানীয় এস.এম মডেল পাইলট উচ্চ মাঠে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন।
উপস্থিত নেতৃবৃন্দের মধ্যে অনেকেই প্রশাসনের পক্ষ থেকে ন্যূনতম সৌজন্য পাননি বলে জানা যায়। এমনকি প্রথম সারিতে বসার আসন না পেয়ে তাদের অনেককেই দীর্ঘসময় দাঁড়িয়ে অনুষ্ঠান উপভোগ করতে দেখা যায়।
এবিষয়ে পলাশবাড়ী পৌর বিএনপি সভাপতি আবুল কালাম আজাদ বলেন উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আগত রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের প্রতি কোনো ধরনের নুন্যতম সম্মান দেখানো হয়নি। যা একটি জাতীয় অনুষ্ঠানে একেবারেই অপ্রত্যাশিত।
পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোশফেকুর রহমান রিপন বলেন, বিগত ফ্যাসিস্ট আমলে যেভাবে বিএনপিকে জাতীয় দিবস গুলোতে অবমাননা করা হতো। আজোও সেই একই পুনরাবৃত্তি। কর্তৃপক্ষ এমন পলিসি অনুসরণ করায় বিজয় দিবস উদযাপন স্থলে চরম ক্ষুব্ধতার সৃষ্টি হয়।
এ ব্যাপারে পলাশবাড়ী উপজেলা জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য আবু তালেব মাস্টার বলেন, ‘আমরা মহান বিজয় দিবসের প্রতি সম্মান জানিয়ে উপজেলা প্রশাসনের আমন্ত্রণে অনুষ্ঠানে এসেছিলাম। কিন্তু একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমাদের প্রতি ন্যূনতম সৌজন্য বোধ দেখানো হয়নি। বসার ব্যবস্থাও
রাখা হয়নি আমাদের জন্য। এমনকি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমাদের সাথে কোনো কথাও বলেননি। এহেন অপমান এবং অসম্মানজনক পরিস্থিতি মেনে নিতে না পারায় প্রথমে আমরা অনুষ্ঠান বর্জন করি।
জামায়াতে ইসলামীর অপর এক স্থানীয় নেতা চরম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘বিজয় দিবস কোনো দলের কিংবা গোষ্ঠীর নয়।এটি সবার জন্য উন্মুক্ত। আমন্ত্রিত অতিথিদের সাথে এমন ‘অসৌজন্যমূলক’ আচরণ আমরা মোটেই আশা করিনি। প্রশাসনের এমন ভূমিকায় আমরা হতাশ। এসব কারণে আমাদের নেতারা অনুষ্ঠান বর্জন করতে বাধ্য হয়েছেন।
এনসিপি ও গণ অধিকার পরিষদের নেতারাও এমনই অভিযোগ এনেছেন। তারা প্রশাসনের আচরণকে ‘রাজনৈতিক শিষ্টাচার বহিঃর্ভূত’ বলে মন্তব্য করেছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ জাবের আহমেদ-এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি তাঁর প্রতিক্রিয়ায় বলেন, অনুষ্ঠানস্থলে সবার জন্য পর্যাপ্ত আসন ও ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল। এত বড় একটি অনুষ্ঠানে অনিচ্ছাকৃত এবং কাকতালীয় ত্রুটি-বিচ্যূতির কারণে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটা অস্বাভাবিক নয়। তবে; আমরা সকল রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দকে যথাযথ সম্মান প্রদর্শনের চেষ্টা করেছি।
তিনি আরো জানান, অভিযোগটি তিনি খতিয়ে দেখবেন এবং ভবিষ্যতে এমন পরিস্থিতি এড়াতে আরো সতর্ক থাকবো।
স্থানীয় সুশীল সমাজ মনে করছে, জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠানে এমন রাজনৈতিক মতবিরোধ এবং প্রশাসনের অসৌজন্যমূলক আচরণ কাম্য নয়। তাদের মতে, এটি গণতন্ত্রের সৌন্দর্যকে মারাত্মক ক্ষুন্ন করে।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.