রফিকুল ইসলাম রফিক, গাইবান্ধাঃ ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গাইবান্ধা-৪ (গোবিন্দগঞ্জ) আসনের বিএনপি’র প্রার্থী পরিবর্তনের দাবীতে মিছিল করে দলটির নেতাকর্মীরা।
বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) বিকেলে সাড়ে চারটার দিকে উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ের সামনে একটি মিছিলটি থেকে বের হয়। এরআগে দুপুর থেকে উপজেলার ১৭টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার বিএনপি’র নেতাকর্মীরা উপজেলা চত্বরে সমাবেত হয়। এসময় তারা ব্যানার ফেস্টুন হাতে নিয়ে মিছিল করে। মিছিলে দুই সহস্রাধিক নেতাকর্মী অংশ নেন।
মিছিলটি ঢাকা-রংপুর জাতীয় মহাসড়ক প্রদক্ষিণ করে উপজেলা সদরের চারমাথায় গিয়ে শেষ হয়। সেখানে এক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বিকেল সাড়ে চারটার দিকে চারমাথায় মহাসড়কের উপর দাঁড়িয়ে প্রায় ৩০ মিনিট মহাসড়ক অপরোধ করে রাখে মিছিলকারিরা। এই কর্মসূচিতে ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের গোবিন্দগঞ্জ চারমাথা এলাকার আশপাশে তীব্র যানজট তৈরি হয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে যানবাহনের যাত্রী ও চালকদের। মহাসড়কের অবস্থানরত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, উপজেলা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাকিরুল ইসলাম, রফিউলদৌল্লাহ রঞ্জু, শামীম মিয়া, আহমেদ শরীফ,রেজাউল ইসলাম প্রমূখ।
ধানের শীষের মনোনয়ন জনসম্পৃক্ত ত্যাগীর জন্য চূড়ান্ত হোক, করতে হবে শ্লোগানে ‘আমরা ধানের শীষ পরিবারের’ ব্যানারে এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
৩ নভেম্বর রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ২৩৭ আসনে বিএনপির প্রাথমিক প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এতে গাইবান্ধা-৪ (গোবিন্দগঞ্জ) আসনে বিএনপি’র সাবেক সংসদ সদস্য শামীম কায়সার লিংকনকে দলীয় মনোনয়ন দেয় দলটি। এরপর থেকে এই আসনে বিএনপির মনোনয়ন চেয়ে আসা নেতাদের সমর্থকেরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। তারা নানা কর্মসূচি পালন করছেন মনোনয়ন বঞ্চিত নেতার সমর্থকরা।
বক্তারা বলেন, বিএনপি দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য শামীম কায়সার লিংকন ১/১১-এ দল এবং জিয়া পরিবারের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে অকথ্য ভাষায় গালিমন্দ করেছিলেন এবং ছাত্রদল ভেংগে সংস্কারপন্থীর পক্ষে নেওয়ার দায়িত্ব গ্রহন করেছিলেন।
২০০৮ সালে দলের সিদ্ধান্তের বাহিরে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে দল থেকে বহিস্কার হয়েছিলেন। ২০১৮ সালে নির্বাচনের সময় দলের ডাকে সারা না দিয়ে মালেশিয়ায় অবস্থান করেন। গত ১৮/১৯ বছরে গোবিন্দগঞ্জ না গিয়ে মালয়েশিয়া এবং ঢাকায় থেকে চাকরী এবং ব্যবসা করে আরাম-আয়েশে জীবন-যাপন করেছেন।
আন্দোলন সংগ্রামে যুক্ত না থাকায় তার বিরুদ্ধে ১টি মামলাও হয়নি। তারপরও তাকে দলে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। তাই তার মনোনয়ন পরিবর্তন করে ত্যাগী নেতাদের দলীয় মনোনয়ন প্রদানের দাবি জানান তারা।
কর্মসূচির ব্যাপারে জানতে চাইলে জাকিরুল ইসলাম বলেন, আমরা বিগতে সব আন্দোলন-সংগ্রামে মাঠে সক্রিয় ছিলাম। ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে মামলা-হামলা শিকার হয়েছি। সেই সময় দুর্বিষহ জীবন যাপন করেছি। ফ্যাসিস্ট সরকার দ্বারা নির্যাতনের শিকার হয়েছি। সবসময় তৃণমূল নেতাদের পাশে ছিলাম, আছি ও থাকব। পুনর্বিবেচনা হলে মনোনয়ন পাবে দলের ত্যাগী নেতা।
এদিকে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী শামীম কায়সার লিংকন বলেন, যারা মিছিল করছে, তারা তো দলের কোন পদ-পদবিতে নাই। একটি মহল তাদের উসকে দিচ্ছে। তার কারণে ভুল বুঝে তারা এই কর্মসূচি করছে। এটি থাকবে না, দ্রুত সময়ের মধ্যে সবাই ঐক্যবন্ধ হয়ে দলের নির্দেশ মেনে কাজ করবে। উপজেলা বিএনপি থেকে ব্যবস্থা নেবেন।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.