জিন্নাতুল ইসলাম জিন্না,লালমনিরহাট,রংপুরঃ
লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার সীমান্তঘেঁষা গোড়ল ইউনিয়ন এখন মাদককারবারিদের ‘স্বর্গরাজ্য’ ও পুলিশের বিরুদ্ধে ঘুষ-নির্যাতনের আখড়ায় পরিণত হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয়দের দাবি, মাদক নিয়ন্ত্রণে পুলিশের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ এবং গোড়ল পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ এসআই মোস্তাকিম ইসলাম ও তাঁর সহযোগীরা নিরীহ মানুষকে মাদক মামলায় ফাঁসানোর ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করছেন।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ মোস্তাকিমের বিরুদ্ধে একাধিক গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। গত ৯ অক্টোবর রাতে স্থানীয় ব্যবসায়ী সাইদুল ইসলামকে মারধর করে মাদক মামলায় ফাঁসানোর ভয় দেখিয়ে ২০ হাজার টাকা আদায়ের অভিযোগ করেছেন তিনি। সাইদুল আদিতমারী থানায় লিখিত অভিযোগ দাখিল করার পরও পুলিশি হয়রানির শিকার হচ্ছেন এবং নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
সাইদুলের স্ত্রী লিপি বেগমের দাবি, অভিযোগের পর পুলিশ মাঝরাতে তাদের বাড়িতে এসে ওয়ারেন্টের ভয় দেখায়।
এর আগে মোফা নামের আরেক ব্যক্তিকে ধাওয়া করে ধরে নির্যাতন এবং ৫০ হাজার টাকা আদায়ের অভিযোগও রয়েছে এসআই মোস্তাকিমের বিরুদ্ধে। মোফা জানান, তাঁর ইচ্ছার বিরুদ্ধে পুলিশ ভিডিও বক্তব্য নেয় এবং মারধরের কারণে তিনি গুরুতর আহত হন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, গোড়ল ফাঁড়ির কনস্টেবল ফারুক ইসলামের মাধ্যমে মাদক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ১০ হাজার থেকে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত নিয়মিত মাসোহারা তোলা হয়। এছাড়া, অভিযানে মাদক ধরা পড়লেও জব্দ তালিকায় সংখ্যা কমিয়ে বাকি মাদক ‘গায়েব’ করে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে পুলিশের বিরুদ্ধে।
সাইদুলের অভিযোগের পর জেলা পুলিশের কর্মকর্তারা তদন্তে এলেও এসআই মোস্তাকিমের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। মোস্তাকিমের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ায় তিনি আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন বলেও জানিয়েছেন ময়নার এলাকার বাসিন্দারা।
তবে এসআই মোস্তাকিম ইসলাম তাঁর বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, মাদক ব্যবসায়ীরা তাঁকে সহ্য করতে না পেরেই বিপদে ফেলার চেষ্টা করছে।
লালমনিরহাটের পুলিশ সুপার তরিকুল ইসলাম অবশ্য স্বীকার করেছেন, গোড়ল ও চন্দ্রপুর ইউনিয়নে ৭০ শতাংশের বেশি মানুষ মাদক ও চোরাচালানের সঙ্গে যুক্ত এবং সেই সাথে ইনচার্জের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তিনি জানান, নিরীহ কাউকে হয়রানির সুযোগ নেই এবং মাদক নিয়ন্ত্রণে সামাজিক সচেতনতা কার্যক্রমও চলছে।