ফজলার রহমান,পলাশবাড়ী,গাইবান্ধাঃ
গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার হরিনাথপুর ইউনিয়নের মরাদাতেয়া ২ নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নামে সরকারি প্রতিষ্ঠান হলেও বাস্তবে এটি এখন অনুপযোগী একটি ঝুঁকিপূর্ণ স্থাপনা। কয়েক বছর আগে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হলেও নতুন ভবনের কোনো উদ্যোগ না থাকায় প্রতিদিনই মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে ক্লাস করছে বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা।
চার কক্ষবিশিষ্ট জরাজীর্ণ ভবনটি নির্মিত হয় ১৯৯৪–৯৫ সালে। বর্তমানে ভবনের দেয়ালজুড়ে ফাটল, বেরিয়ে এসেছে মরিচাধরা রড, ছাদ ও দেয়ালের প্লাস্টার খসে পড়ছে নিয়মিত। সামান্য বৃষ্টিতেই চুইয়ে চুইয়ে পানি পড়ে শ্রেণিকক্ষে। ভবনের কলাম ও বিমে গভীর ক্ষতচিহ্ন সব মিলিয়ে ভবনটি এখন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে।
২০২০ এবং ২০২৩ সালে উপজেলা শিক্ষা অফিস ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করলেও মিলেনি নতুন ভবন নির্মাণের বরাদ্দ। বাধ্য হয়ে শিক্ষকরা এক কক্ষে একাধিক ক্লাস নেন। কিছু শিক্ষার্থীকে রাখতে হয়েছে স্লিপের টাকা দিয়ে তৈরি টিনশেড ঘরে। জায়গার সংকটে RDRS-এর সহায়তায় নির্মিত বন্যা আশ্রয় কেন্দ্রের একটি কক্ষেও চলছে পাঠদান।
চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র রানা আকন্দ বলে, ভবনে ঢুকলেই ভয় লাগে। ক্লাসে বসে মনে হয় কিছু একটা পড়ে যাবে।
মিতি খাতুন জানায়, বৃষ্টি হলেই ছাদ থেকে পানি চুইয়ে পড়ে, দেয়াল ঝরে পড়ে এ অবস্থায় ক্লাস করতে হয়।
পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ভাষ্য ভবনটা এত ভাঙা যে ভেতরে ঢুকতেই ভয় লাগে। তাই টিনশেড ঘরেই ক্লাস করি।
অভিভাবকদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যালয়টি অবহেলায় পড়ে আছে। ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে পাঠদান হওয়ায় শিক্ষার মান কমে গেছে, কমছে শিক্ষার্থীর উপস্থিতি।
সহকারী শিক্ষক আ. আজিজ বলেন, অকেজো ভবনে ঝুঁকি নিয়ে ক্লাস নিতে হয়। শিক্ষক সংকটও রয়েছে।
ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কবিতা সরকার জানান, ২০১২ সালে যোগদানের পর থেকে এভাবেই কাজ করছি। ভবন দুবার পরিত্যক্ত ঘোষণা হলেও বরাদ্দ মেলেনি। তিনজন শিক্ষক প্রায় ৭০ শিক্ষার্থী নিয়ে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে ক্লাস করছি।
তিনি দ্রুত নতুন ভবন নির্মাণের জোর দাবি জানান।
পলাশবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ জাবের আহমেদ জানান, বিদ্যালয়ের অবস্থা পরিদর্শন করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অভিভাবক, শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ স্থানীয়রা জরুরি ভিত্তিতে নতুন ভবন নির্মাণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।