মোঃ ফেরদাউছ মিয়া,পলাশবাড়ী, গাইবান্ধাঃ
গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার হোসেনপুর ইউনিয়নে মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা ও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের দ্বন্দ্বের কারণে ‘ভিডাব্লিউবি’ (ভালনারেবল উইমেন বেনিফিট) কর্মসূচির আওতায় নির্ধারিত চাল বিতরণ গত চার মাস ধরে বন্ধ রয়েছে। ফলে ইউনিয়নের ২৬৬ জন হতদরিদ্র নারী নিয়মিত প্রাপ্ত ৩০ কেজি করে চাল থেকে বঞ্চিত হয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন।
সোমবার (৪ নভেম্বর ২০২৫) সরেজমিনে দেখা যায়, উপকারভোগীদের জন্য বরাদ্দকৃত চার মাসের প্রায় ৩২ টন চাল একটি পরিত্যক্ত ভবনে দীর্ঘদিন ধরে অরক্ষিতভাবে মজুত রয়েছে। স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশ, ইঁদুরের উপদ্রব এবং আর্দ্রতার কারণে চালগুলো নষ্ট হতে শুরু করেছে বলেও স্থানীয়রা জানান।
চাল না পেয়ে ক্ষুব্ধ উপকারভোগীরা বলেন,
“সরকার আমাদের জন্য চাল দিচ্ছে, কিন্তু আমরা পাচ্ছি না। সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছি, ধারদেনা করে দিন কাটাতে হচ্ছে।”
এ বিষয়ে হোসেনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তৌফিকুল আমিন মণ্ডল টিটু অভিযোগ করে বলেন,
“আমরা নিয়ম অনুযায়ী সঠিক সময়ে তালিকা পাঠিয়েছি। কিন্তু মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয় আমাদের তালিকা থেকে কিছু নাম বাদ দিয়ে নিজেদের পছন্দমতো নতুন তালিকা চাপিয়ে দিয়েছে। আমি আপত্তি করায় ইচ্ছাকৃতভাবে চাল বিতরণ বিলম্বিত করে আমার ওপর দায় চাপানোর চেষ্টা হচ্ছে।”
অন্যদিকে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা শাহানাজ আক্তার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন,
“চেয়ারম্যান প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সময়মতো দেননি। এখন সব কাগজপত্র হাতে পেয়েছি, আগামী রোববারের মধ্যেই চাল বিতরণের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এ বিষয়ে সদ্য যোগদান করা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ জাবের আহামেদ জানান,
“বিষয়টি আমার নজরে এসেছে। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
স্থানীয় সচেতন মহল জানান, ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বের কারণে সরকারি সেবার সুবিধা থেকে দরিদ্র নারীরা বঞ্চিত হওয়া অত্যন্ত দুঃখজনক ও অনৈতিক। তারা দ্রুত প্রশাসনিক হস্তক্ষেপের মাধ্যমে আটকে থাকা চাল অবিলম্বে উপকারভোগীদের মধ্যে বিতরণের দাবি জানিয়েছেন।