মোঃ আব্দুল মজিদ সরকার, গাইবান্ধাঃ
গাইবান্ধা সদর উপজেলার বলমঝার ইউনিয়নের কোমরপুর ও নারায়ণপুর এলাকায় আমন ধানক্ষেতে ভয়াবহভাবে ছড়িয়ে পড়েছে কারেন্ট পোকার আক্রমণ। এতে বিপাকে পড়েছেন শত শত কৃষক। সময়মতো প্রতিকার না পেলে পুরো মৌসুমের ফসল নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
বুধবার ও শুক্রবার (২৯ ও ৩১ অক্টোবর) এলাকায় সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, ধানের গোড়ায় ঝাঁকে ঝাঁকে কারেন্ট পোকার আক্রমণে গাছ শুকিয়ে মরে যাচ্ছে। আক্রান্ত গাছে শীষ থাকলেও দানা হচ্ছে না—ফলে ফলন শূন্যের কোঠায় নেমে আসছে।
স্থানীয় কৃষকরা অভিযোগ করেছেন, এ ভয়াবহ পরিস্থিতিতেও সংশ্লিষ্ট উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সাবিনা ইয়াসমিন ও ইদ্রিস আলীর কোনো তৎপরতা চোখে পড়ছে না। পোকার আক্রমণ দমনে কৃষকরা নিজ উদ্যোগে বিভিন্ন কীটনাশক ব্যবহার করলেও তেমন ফল পাওয়া যাচ্ছে না।
বলমঝার ইউনিয়নের কোমরপুর ব্লকের বাহাদুরপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল মোতাল্লেব বলেন,
“বিঘাপ্রতি জমিতে রোপণ, সেচ, সার, কীটনাশক ও মাড়াইসহ কমপক্ষে ১০-১২ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এখন কারেন্ট পোকার কারণে একমুঠো ধানও ঘরে তুলতে পারব না। দোকান থেকে বাকিতে সার ও ওষুধ কিনেছি—ফসল না পেলে এই দেনা শোধ করব কীভাবে?”
নারায়ণপুর ব্লকের কৃষক মাসুদ মুছকুরি জানান,
“পোকার আক্রমণ প্রথম দিকে কম ছিল, এখন গোটা মাঠজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে। কৃষি কর্মকর্তারা যদি সময়মতো পরামর্শ দিতেন, হয়তো এতটা ক্ষতি হতো না।”
স্থানীয় কৃষকদের অভিযোগ, উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের কেউই মাঠে এসে পোকার প্রকৃতি বা দমনপদ্ধতি সম্পর্কে কোনো দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন না। কৃষি অফিসে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তারা সাড়া পাচ্ছেন না।
কৃষকদের দাবি, তাৎক্ষণিকভাবে কৃষি বিভাগকে মাঠে নেমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ নিতে হবে, নইলে এবারের আমন মৌসুমে বড় ধরনের লোকসান গুনতে হবে পুরো এলাকার কৃষকদের।