খবরবাড়ি নিজস্ব প্রতিবেদকঃ গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জে পারিবারিক কলহের জেরে শরীরে পেট্রোল ঢালার পর নিজে আগুন লাগিয়ে দেয়ার পর পুরো শরীর ঝলসে যাওয়া যুবক রায়হান মিয়া (২৭) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।
বুধবার (২৯ অক্টোবর) রাত ৩টার দিকে ঢাকায় হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু বরণ করেন রায়হান। এ বিষয়টি নিশ্চিত করেন তার পরিবারের সদস্যরা।
উপজেলার ধোপাডাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান মোখলেছুর রহমান মন্ডল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এরআগে মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) দুপুরের দিকে উপজেলার ধোপাডাঙ্গা ইউনিয়নের নতুন বাজার এলাকার বাড়িতে নিজের শরীরে নিজে পেট্রল ঢেলে নিজেই আগুন লাগিয়ে দেয় রায়হান। সে নিজের গায়ে পেট্রল ঢেলে আগুন দিয়ে পুকুরে লাফ দিয়েছিলেন।। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। সেখান তার অবস্থার অবনতি হলে ঢাকায় পাঠানো হয় সেখানে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় তার মুত্যু হয়। রায়হান মিয়া উপজেলার ধোপাডাঙ্গা ইউনিয়নের নতুন বাজার এলাকার চাঁন মিয়ার ছেলে।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ১০ বছর আগে বিয়ে করেন রায়হান। তার শ্বশুর বাড়ি একই ইউনিয়নের বড় দিঘিরপাড় গ্রামে। তার দু’টি সন্তানও রয়েছে। রায়হান অনলাইনে জুয়াসহ অন্য নারী প্রতি আসক্ত ছিলেন। দু’মাস আগে স্থানীয় এক নারীর সাথে অবৈধ মেলামেলা করতে গিয়ে ধরাও পড়েছিলেন সে। পরে শাশুড়ির চাপে স্ত্রী আদুর নিজের গহনা বিক্রি করে টাকা দিয়ে ঘটনাস্থল থেকে স্বামীকে ছাড়িয়ে আনেন। এ ঘটনার কয়েকদিন পরই আরেক নারীকে বিয়ে করবেন বলে স্ত্রীকে চাপ দেয় রায়হান। এতে স্ত্রী রাজি না হওয়ায় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে শুরু হয় মনোমালিন্য। এতে রায়হান আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। এরপর স্ত্রীর উপর পাশবিক নির্যাতন চালান। অত্যাচারের মাত্রা সইতে না পেলে শ্বশুরের কথামত সন্তানদের সাথে নিয়ে বাবার বাড়ি যান স্ত্রী আদুরী বেগম।
ঘটনার দিন ২৮ অক্টোবর রায়হানের বাবা ছেলের বউকে আনতে তার বাবার বাড়ীতে যান। প্রথমে আদুরী আসতে চায়নি। পরে শুশুর জোড়ালো চাপে রাজি হন। তবে কিছু শর্ত দেন শ্বশুরকে। মারধর করা চলবে না এবং জুয়া খেলা বদ্ধ করতে হবে। এ অবস্থায় ছেলে রায়হান মোবাইল ফোনে বাবাকে হুমকি দেন এবং বউকে আনতে নিষেধ করেন। এই ক্ষোপে রায়হান মিয়া নিজের শরীরে নিজেই পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে আগুন দাউদাউ করে জ্বললে পুকুরের পানিতে লাফ দেয় রায়হান। পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার হাসপাতালে ভর্তি করে।
এ বিষয়ে রায়হানের পরিবারের লোকজন কোন কথা বলতে রাজি হয়নি।
থানা অফিসার ইনচার্জ আব্দুল হাকিম আজাদ জানান, এ নিয়ে এখন পর্যন্ত থানায় কোন অভিযোগ দেয়নি।