1. arifcom24@gmail.com : Arif Uddin : Arif Uddin
  2. admin@khoborbari24.com : arifulweb :
  3. editor@khoborbari24.com : editor : Musfiqur Rahman
  4. hostinger@khoborbari24.com : Hostinger Transfer : Hostinger Transfer
  5. khoborbari@khoborbari24.com : Khoborbari : Khoborbari
  6. khobor@gmail.com : :
মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫, ০৬:৩০ অপরাহ্ন
৩রা অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
২৭শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি
শিরোনামঃ
অর্থের অভাবে ধান কাটতে না পারা চার কৃষকের ৩ একর জমির ধান কেটে দিলেন লালমনিরহাট কৃষকদল ‎ পীরগঞ্জে হানি ট্র্যাপের ঘূর্ণাবর্তে প্রধান শিক্ষক স্বপন কুমার; অন্যদিকে রাসলীলা উপভোগে উন্মত্ত সহকারি শিক্ষক রামকৃষ্ণ রায়! পীরগঞ্জে খোলা পেট্রোল বিক্রি হচ্ছে এসি ল্যান্ড অফিসের সামনে! উদ্দীপনায় পলাশবাড়ী মডেল প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন তারাগঞ্জে পুকুরের পানিতে ডুবে মানসিক ভারসাম্যহীন যুবকের মৃত্যু গণঅভ্যুত্থান দমন মামলায় হাসিনা–কামালের মৃত্যুদণ্ড “পলাশবাড়ীতে জামায়াতের শোকরানা নামাজ আদায়” পলাশবাড়ীতে বীর মুক্তিযোদ্ধার ইন্তেকাল ইউএনও’র নেতৃত্বে রাষ্ট্র্রীয় মর্যাদায় দাফন সম্পন্ন পলাশবাড়ী পৌরশহরের আমবাড়ীতে পৌর যুবদলের নির্বাচনী সভা অনুষ্ঠিত পলাশবাড়ীতে উপজেলার নাগরিক সংগঠনের ত্রৈমাসিক সভা হাসিনার ফাঁসির রা‌য়ে তারাগঞ্জে ছাত্রদলের আনন্দ মিছিল

পীরগঞ্জের সংস্কৃতির স্মৃতি-কথা ও বর্তমান সংকট।

  • আপডেট হয়েছে : মঙ্গলবার, ৭ অক্টোবর, ২০২৫
  • ৯৬ বার পড়া হয়েছে

সাকিব আহসান,পীরগঞ্জ, ঠাকুরগাঁওঃ

পীরগঞ্জ উপজেলার পরিচয় দীর্ঘদিন ধরে শুধু ভূগোল বা জনগণনা নয় — এটি ছিল অঞ্চলভিত্তিক লোকসংস্কৃতি, মঞ্চনাটক, কাব্যসভা ও উৎসবের এক জীবন্ত গ্রন্থাগার। স্থানীয় মেলা, স্কুল-কলেজ মিলনমেলা,পাবলিক ক্লাবের সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা—এসব মিলিয়ে পীরগঞ্জ কখনো-কখনো ‘সংস্কৃতির আড্ডাঘর’ হিসেবেই পরিচিত ছিল। এই ঐতিহ্যগত পরিচয়ের বিস্তারে, পীরগঞ্জের ইতিহাস-সংস্কৃতি প্রবাহের চিত্র সামগ্রিকভাবে ব্যাখ্যায় পাওয়া যায়।

পীরগঞ্জ প্রেসক্লাব স্থানীয় সাংবাদিকতা ও সাংস্কৃতিক কর্মযজ্ঞের কেন্দ্র; ইউনিয়ন-উপজেলার আলোচনাসভা, নাটক-আড্ডা এবং স্মরণোৎসবের আয়োজনে পীরগঞ্জ প্রেসক্লাবের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা সুপরিচিত। প্রেসক্লাবের বার্ষিক আয়োজন ও ইতিহাসের নথিতে এর স্থায়ী উপস্থিতি জাজ্বল্যমান।

পীরগঞ্জ উপজেলা বরাবরই সংস্কৃতির আতুঁর ঘর হিসেবে পরিচিত ছিল। গান, নাটক, আবৃত্তি, চিত্রাঙ্কন ও সাহিত্যচর্চার প্রাণকেন্দ্র হয়ে উঠেছিল এখানকার পীরগঞ্জ প্রেসক্লাব। সাংবাদিকদের সংগঠন হলেও, এটি শুধুমাত্র সংবাদ পরিবেশনের জায়গা নয়—এটি ছিল পীরগঞ্জের সাংস্কৃতিক আন্দোলনের কেন্দ্রবিন্দু।
বিগত চার দশকে পীরগঞ্জ প্রেসক্লাব যেভাবে সমাজ ও সংস্কৃতির আলো ছড়িয়েছে, তা শুধু উপজেলাবাসীর জন্য নয়, পুরো ঠাকুরগাঁও জেলার জন্য এক ঐতিহাসিক ঐতিহ্য।
১৯৮০-এর দশকের শুরুতে পীরগঞ্জে সাংবাদিকতা তখনও সংগঠিত আকারে গড়ে ওঠেনি। সংবাদকর্মী, শিক্ষক ও সংস্কৃতিপ্রেমী ব্যক্তিরা একটি মঞ্চ তৈরির ভাবনা নেন, যেখানে সংবাদ, সংস্কৃতি ও সমাজচেতনা একসাথে বিকশিত হবে।
এই ভাবনা থেকেই জন্ম নেয় পীরগঞ্জ প্রেসক্লাব।

প্রতিষ্ঠার পর থেকেই পীরগঞ্জ প্রেসক্লাব কেবল সংবাদ সম্মেলন বা সাংবাদিকদের আড্ডাস্থল নয়, বরং এক “জ্ঞান ও সংস্কৃতির ঘর” হিসেবে পরিচিতি পায়। স্বাধীনতা ও মুক্তচেতনার ধারায় অনুপ্রাণিত এই সংগঠন স্থানীয় তরুণ প্রজন্মকে শিল্প-সাহিত্যচর্চায় উদ্বুদ্ধ করতে শুরু করে।

পীরগঞ্জ প্রেসক্লাবের একটি বড় ভূমিকা ছিল স্থানীয় সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর পৃষ্ঠপোষকতা করা। উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, প্রথম আলো বন্ধুসভা, সমকাল সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী, দিগন্ত শিল্পীগোষ্ঠী—সবাই কোনো না কোনোভাবে প্রেসক্লাবের সঙ্গে সংযুক্ত ছিল।

উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী (পীরগঞ্জ শাখা) জাতীয়ভাবে প্রাণশক্তিশালী উদীচীর স্থানীয় শাখা; স্বাধীনতা, গণজাগরণ ও সাংস্কৃতিক আন্দোলনের ধারায় গ্রাম-নগরের পীরগঞ্জেও উদীচীর কার্যক্রম হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধ ও মানবতার চেতনায় বিশ্বাসী এ সংগঠন গান, নাটক, আবৃত্তি ও চিত্রাঙ্কনের মাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরে পীরগঞ্জের তরুণদের সৃজনশীলতাকে এগিয়ে নিয়েছিল।

নতুন প্রজন্মের পাঠাভ্যাস, সৃজনশীলতা ও মানবিক উদ্যোগের প্রতীক হিসেবে প্রথম আলো বন্ধুসভা (পীরগঞ্জ শাখা) হয়ে উঠেছিল এক আলোকবর্তিকা। তারা নিয়মিত বইপড়া উৎসব, রক্তদান কর্মসূচি, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও বিতর্ক প্রতিযোগিতার আয়োজন করত।

সমকাল সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী স্থানীয় তরুণ শিল্পীদের সংগীত, নাটক ও আবৃত্তির মঞ্চ হিসেবে পীরগঞ্জে সৃজনশীলতার নতুন ধারা সৃষ্টি করেছিল। সামাজিক অসঙ্গতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদী নাটক মঞ্চায়ন এবং কবিতা আবৃত্তির মাধ্যমে তারা সমাজ সচেতনতা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে।

কালচারাল সোসাইটি অফ পীরগঞ্জ স্থানীয় উদ্যোগে সম্প্রতি গড়ে ওঠা ফেসবুক ভিত্তিক/সামাজিক সংগঠন যারা গান-নাচ-আড্ডা, ভিডিওপ্রজেক্ট আয়োজন করে।

এক সময় পীরগঞ্জ সরকারি কলেজ ও স্কুলগুলোতে বার্ষিক সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা ছিল উৎসবের মতো। নাটক ‘সুজন বাদশা ও রূপবান’, ‘শাপমোচন’ কিংবা রবীন্দ্রসংগীতের সন্ধ্যা—এসব আয়োজন সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনের অংশ হয়ে উঠেছিল।

কিন্তু নব্বইয়ের দশকের পর ধীরে ধীরে সাংস্কৃতিক মঞ্চগুলো নিস্তব্ধ হয়ে যায়। প্রযুক্তির সহজলভ্যতা, অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা এবং রাজনৈতিক অস্থিরতা পীরগঞ্জের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যে এক অদৃশ্য আঘাত হানে। স্মার্টফোন ও সামাজিক মাধ্যমের অতি নির্ভরতা তরুণদের বাস্তব মঞ্চ থেকে সরিয়ে নিয়ে গেছে ভার্চুয়াল জগতে।

আজ পীরগঞ্জে “বিনোদন” বলতে বোঝানো হয় ইউটিউব ভিডিও বা টিকটক ক্লিপ। কিন্তু সেই বিনোদনের মধ্যেই ঢুকে পড়েছে অপসংস্কৃতি—অশালীনতা, মাদক ও সহিংসতার প্রকাশ। শহরের অলিতে-গলিতে মাদকের ভয়াবহ বিস্তার সংস্কৃতিপ্রেমী সমাজকে স্তব্ধ করে দিয়েছে। যুবকদের সৃজনশীল শক্তি যেখানে সংগীত বা নাটকে ব্যবহৃত হওয়ার কথা ছিল, সেখানে তা ধ্বংস হচ্ছে মাদকের কড়াল গ্রাসে। আর্থিক অনুদানের অভাব, প্রাতিষ্ঠানিক সহায়তার ঘাটতি, আর সাংস্কৃতিক অবকাঠামোর অনুপস্থিতি এই পতনের মূল কারণ। পীরগঞ্জের পুরোনো নাট্যমঞ্চটি এখন প্রায় পরিত্যক্ত, স্থানীয় উদ্যানগুলোতেও বিনোদনের পরিবেশ নেই।

খবরটি শেয়ার করুন

Comments are closed.

এরকম আরও খবর
© All rights reserved © 2025

কারিগরি সহযোগিতায় Pigeon Soft