মনজুর কাদির মুকুল, পলাশবাড়ীঃ গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে প্রসূতিসহ নবজাতকের করুণ মৃত্যু ঘটনায় মা কিনিক এন্ড নার্সিং হোম আবারো বন্ধ ঘোষণাসহ ৩ সদস্যের একটি তদন্ত টীম গঠন করা হয়েছে।
একই কিনিকে বারংবার হৃদয়বিদারক একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটায় এলাকার সর্বস্তরের মাঝে চরম অস- ন্তোষসহ জনরোষের সৃষ্টি হয়েছে।
পৌরশহরের ঘোড়াঘাট সড়কের (নুনিয়াগাড়ী) স্থানীয় সরকারি কবরস্থান সংলগ্ন অবস্থিত কিনিকটিতে দু’টি তাজা প্রাণের মৃত্যুর ঘটনায় গাইবান্ধার সিভিল সার্জন অনির্দিষ্টকালের কিনিকটি বন্ধ ঘোষণাসহ ৩
সদস্যের একটি তদন্ত টীম গঠন করেছেন।
সিভিল সার্জন ডা. রফিকুজ্জামান গত শনিবার (১৮ অক্টোবর) গণমাধ্যম-এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এঘটনার আগেও প্রয়োজনীয় চিকিৎসকসহ দক্ষ জনবলের স্থলে হাতুড়ে অনভিজ্ঞদের দিয়ে যেন-তেন ভাবে সিজার করতে গিয়ে বারংবার উপর্যুপরি মৃত্যুর ঘটনায় জনতার কোপানলে পড়ায় কিনিকটি বন্ধ করে দেয়া হয়।
এসময় কিনিকটি লাগাতার প্রায় দেড়মাস বন্ধ থাকে। পরবর্তীতে কোনো একসময় নানা ফাঁকফুকুর গলিয়ে একপর্যায় আবারো চালু করা হয়। কিন্তু একের পর এক মৃত্যুর ঘটনা ঘটতেই থাকে। কিনিকটি যেন মৃত্যুপুড়িতে পরিণত হয়। কিছুদিন যেতে না যেতেই আবারো একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে।
এদফায় ব্যাপক জনরোষের কোপানলে বিক্ষুব্ধ স্থানীয়রা কিনিকটি ভাঙচুরসহ জ্বালিয়ে দিতে মারমুখী হয়ে উঠে। কিন্তু সময়মত যৌথবাহিনীর উপস্থিতির কারণে এ দফায় অবশেষে রক্ষা পায়। অবস্থা বেগতিক দেখে কিনিকটিসহ ভবন মালিক পলাশবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সিনিয়র নার্স ফাতেমা বেগমসহ তার জনবল তড়িঘড়ি করে ভবনটি তালাবদ্ধ করে দ্রুত সটকে পড়ে। ফলে কোনো অপ্রত্যাশিত অঘটন থেকে তারা রক্ষা পান।
গাইবান্ধার সিভিল সার্জন ডা.রফিকুজ্জামান বলেন, না-কোনো ছাড় নয়। চিকিৎসক বা এ্যানাসথেসিয়া চিকিৎসকের অবহেলার কারণে এ মৃত্যু হতে পারে। গঠিত তদন্ত টীমের রিপোর্ট হাতে পেলেই মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে। পরবর্তীতে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। কিনিকটি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যেই সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করা হয়েছে।
উল্লেখ্য; প্রকৃতপক্ষে চিকিৎসক ছাড়াই হাতুড়ে চিকিৎসক দিয়ে সিজার কালীন গত ১৮ অক্টোবর ভোরে পৌরশহরের জামালপুর গ্রামের বাদশা মিয়ার মেয়ে ২ সন্তানের জননী প্রসূতি পারুল বেগম (২৫) ও নবজাতকের মৃত্যু ঘটে।