এম,এ শাহিন,তারাগঞ্জ,রংপুরঃ
রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার হারিয়ারকুঠি ইউনিয়নের চাঁন্দেররপুকুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় চলছে আওয়ামী লীগ চাঁদেরপুকুর ওয়ার্ড সেক্রেটারি এবং বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী কাম নৈশপ্রহরী সহিদার রহমান বাট্টুর প্রভাবে। তার ইচ্ছে মতোই বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের উপস্থিতি, কার্যক্রম ও অন্যান্য কাজ পরিচালিত হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
অভিযোগ রয়েছে, প্রধান শিক্ষিকা মোছা. ফারজানা আফরোজও বাট্টুর প্রভাবে দায়িত্ব পালন করছেন খেয়ালখুশি মতো। বিদ্যালয়ে নিয়মিত সময়ে উপস্থিত না হওয়া, দায়িত্বহীনতা ও নানা অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
স্থানীয়রা জানান, প্রধান শিক্ষিকা রংপুর শহরে অবস্থান করায় কখনো সকাল ১০টার পর, আবার কখনো ১১টার পরে স্কুলে আসেন এবং ছুটির আগেই ২টার থেকে ৩ টার মধ্যে স্কুল ত্যাগ করেন।
বিদ্যালয়ের ক্ষুদ্র মেরামত কাজের বরাদ্দেও দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। ক্ষুদ্র মেরামত সহ বিভিন্ন প্রকল্পে নাম মাত্র কাজ করে বিলের টাকা তুলে আত্মসাৎ করেন বাট্টু ও প্রধান শিক্ষক।
স্থানীয়রা দাবি করেছেন, প্রধান শিক্ষিকা ও বাট্টু নামমাত্র কাজ করে অর্থ তুলে ভাগ করে নেন।
বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক রয়েছেন ছয় জন, কিন্তু তারাও বাট্টুর ছত্র-ছায়ায় নিজেদের মতো করে আসা-যাওয়া করেন।
অন্যদিকে, অফিস সহকারী কাম নৈশপ্রহরী সহিদার রহমান বাট্টু নিজেকে শিক্ষক হিসেবে পরিচয় দেন।
নৈশপ্রহরী হলেও তিনি অধিকাংশ সময় চান্দের পুকুর গ্রামের বাড়ি কিংবা তারাগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সামনে তার বাসায় অবস্থান করেন। বিদ্যালয়ে রাতের নৈশ প্রহরীর দায়িত্ব পালন করেন না।
এলাকার ছাত্র অভিভাবক বাবুল রহমান বলেন, বর্তমানে স্কুলটির বেহাল অবস্থা। শিক্ষকরা নিয়মিত স্কুলে আসেন না। স্কুল করেন যে যার খেয়াল খুশির মত। ফলে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ কমে যাচ্ছে।
স্কুলের হিসাব অনুযায়ী শিশু শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ১৯৩ জন শিক্ষার্থীর নাম থাকলেও নিয়মিত শ্রেণিকক্ষে উপস্থিত থাকে মাত্র ২০ থেকে ২৫ জন। শিক্ষকদের অবহেলার কারণে বর্তমানে স্কুলটির শিক্ষা কার্যক্রম ভেঙে পড়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা আলী আজগার মিয়া অভিযোগ করেন, বিগত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের আমলে এমপি আহসানুল হক ডিউকের সহযোগিতায় শিক্ষক নিয়োগ বাণিজ্যে সহ বিভন্ন দরবারের সঙ্গেও জড়িত ছিলেন সহিদার রহমান বাট্টু।
অভিযোগের বিষয়ে সহিদার রহমান বাট্টু বলেন, যখন দল ক্ষমতায় ছিল তখন রাজনীতি করেছি। এখন তো দল ক্ষমতায় নাই। রাজনীতি করি কেমন করে? এখন তো শুধু স্কুলেই সময় দিই।
অন্যদিকে, প্রধান শিক্ষিকা ফারজানা আফরোজ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি প্রতিদিন সময়মতো স্কুলে আসি।
এ বিষয়ে তারাগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নাগমা শিলভীয়া খান বলেন, এমন বিষয় জানতাম না, এখন জানলাম। তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।