খবরবাড়ি ডেস্কঃ গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরে দূর্গাপূজা উপলক্ষে তৈরিকৃত মন্দিরের ৬ প্রতিমায় দুর্বৃত্তের দেয়া আগুনে পুড়ে ছাই হয়েছে। এতে মন্দিরের দুর্গা, লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক ও গণেশসহ প্রতিমার বিভিন্ন সরঞ্জাম পুড়ে ছাই হয়েছে বলে জানা যায়।
ঘটনাটি ঘটেছে, সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) রাত পৌনে ১টার দিকে উপজেলার হামিন্দপুর (কামারপাড়া) এলাকায়। সামনে দুর্গাপূজা উপলক্ষে তৈরীকৃত এসব প্রতিমায় আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনলেও এরআগেই প্রতিমা গুলো সম্পূর্ণ পুড়ে যায়।
স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে মন্দির নিয়ে ক্যাশিয়ার কার্তিক চন্দ্রের সাথে বিরোধ চলছিল। এরই জেরে গত শনিবার দুপুরে তিনি মন্দিরের প্রধান দরজায় তালা ঝুলিয়ে দেয়। বাধ্য হয়ে মন্দিরের দক্ষিণ পাশে খোলা আকাশের নিচে পূজার প্রতিমা তৈরির কাজ শুরু করেন কারিগররা। গত ৫৬ দিনে তারা বাঁশ ও খড় দিয়ে দুর্গা, লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক ও গণেশসহ প্রতিমার নানা সরঞ্জাম তৈরি করেন। কিন্তু রাতের আঁধারে দুর্বৃত্তরা হঠাৎ প্রতিমাগুলোতে আগুন দিলে মুহূর্তেই সব পুড়ে যায়।
মন্দির কমিটির সাবেক সভাপতি অনুকুল চন্দ্র রনু বলেন, ‘মন্দির নিয়ে সামাজিক বিরোধের কারণে আমরা ৮১০টি পরিবার মন্দিরের পাশে ছাপড়া ঘর তুলে পূজার আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেই। সেই মোতাবেক প্রতিমা তৈরির কাজ চলছিল। কিন্তু শত্রুতার আগুনে সব পুড়ে গেছে। পরিকল্পিতভাবে প্রতিমায় আগুন দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় কার্তিক চন্দ্রের সম্পৃক্ততা আছে।’
‘দীর্ঘদিনের বিরোধ এরআগেও কয়েকবার বসে সমাধান হয়েছিল। কিন্তু কার্তিক চন্দ্র জোরপূর্বক মন্দিরে সমাজের লোকজনের প্রবেশে বাধা দিয়ে তালা ঝুলিয়ে দেন বলে দাবী করে মন্দিরের পাশের বাসিন্দা টুলু। তিনি বলেন, প্রতিমা পুড়ে যাওয়ায় এবার দুর্গাপূজা নিয়ে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। এ ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত শনাক্ত ও গ্রেফতারের দাবী জানাচ্ছি।’
এদিকে; খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান সাদুল্লাপুর থানা অফিসার ইনচার্জ তাজউদ্দীন খন্দকার এবং সাদুল্লাপুর উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক প্রভাত চন্দ্র অধিকারী। তারা প্রতিমাগুলো দেখে স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের সাথে কথা বলেন।
এ বিষয়ে ওসি তাজউদ্দীন খন্দকার গণমাধ্যমে বলেন, ‘রাতের আধারে দুর্বৃত্তরা প্রতিমায় আগুন দিয়েছে। গুরুত্ব সহকারে বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। দুর্বৃত্তদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে। এছাড়া বিরোধ সমাধানে উভয় পকে থানায় ডাকা হয়েছে।’
‘সাদুল্লাপুর উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক প্রভাত চন্দ্র অধিকারী বলেন,’ এই মন্দির নিয়ে কার্তিক চন্দ্রের সাথে বিরোধের বিষয়টি আমরা এর আগেও থানায় বসে সমাধান করেছি। কিন্তু আবারো দ্বন্দ্ব চলছিল। বিষয়টি সমাধানের জন্য বসার কথা ছিল। তার আগেই প্রতিমায় আগুন দেওয়া হয়েছে। আমরা দ্রুতই উভয়কে নিয়ে বসে সমাধানের চেষ্টা করব।’
রাতেই অভিযোগের বিষয়ে জানতে মন্দিরের ক্যাশিয়ার কার্তিক চন্দ্রের বাড়িতে গিয়ে ডাকাডাকি করেও তার কোন সাড়া মেলেনি।