লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের ফুলগাছ ফেডারেশন ভবন সংলগ্ন এলাকায় একটি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জমি দখলের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় মুন্নাফ নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। জমি দাতাদের বাধা দেওয়ার পর তিনি ও তার সহযোগীরা মারধর ও প্রাণনাশের হুমকি দেন বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা।
সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) সকালের দিকে বিদ্যালয়ে জমিদাতা তোফাজ্জল হোসেনের ছেলে মুন্নাফসহ তার ভাড়া করা কিছু সন্ত্রাসী স্কুলের জমিতে সীমানা নির্ধারণের খুঁটি উপড়ে ফেলে বিদ্যালয়ের জমি দখলের চেষ্টা করেন।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, গত শনিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে তোফাজ্জল হোসেনের ছেলে মুন্নাফসহ কয়েকজন ভাড়া করা কিছু সন্ত্রাসী স্কুলের জমিতে সীমানা নির্ধারণের খুঁটি তুলতে থাকেন। বিষয়টি দেখতে পেয়ে জমিদাতার ছেলে মোঃ আব্দুল বারেক তার পিতা ও চাচা মোহাম্মদ আলীকে ডেকে আনেন। তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছে খুঁটি তোলার কারণ জানতে চাইলে, অভিযুক্ত মুন্নাফ উত্তেজিত হয়ে হাতে থাকা শাবল দিয়ে আক্রমণ চালান এবং “ আজকে যদি কোন কথা বলিস তাহলে তোকে আজকে মেরেই ফেলবো” বলে হুমকি দেন।
আবদুল বারেক আত্মরক্ষায় হাত তুলে শাবলের আঘাত ঠেকাতে গেলে তার হাতে গুরুতর জখম হয়। এরপর বাকি সঙ্গীরা তার উপর এলোপাতাড়ি বাঁশ দিয়ে হামলা চালায়। স্থানীয়দের সহায়তায় কোনোরকমে তিনি পালিয়ে এসে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।
এলাকাবাসীর মতে, অভিযুক্ত মুন্নাফ এলাকার একজন কুখ্যাত মাদকসেবী ও মাদক ব্যবসায়ী। সে স্বৈরাচার আওয়ামীলীগ সরকারের সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট মতিয়ার রহমানের পালিতপুত্র হওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে প্রভাব খাটিয়ে স্কুলের স্থাপনা ভাঙচুর ও জমি দখলের চেষ্টা চালিয়ে আসছেন।
ভুক্তভোগী মোহাম্মদ আলী জানান, পূর্বে একটি মামলা দায়েরের পর থানার সালিশে মুন্নাফ লিখিতভাবে প্রতিশ্রুতি দেন যে তিনি আর জমিতে নামবেন না এবং দখলের চেষ্টা করবেন না। সেই মীমাংসার ভিত্তিতে বাদী পক্ষ সব মামলা প্রত্যাহার করে নেয়। তবে কিছুদিন যেতে না যেতেই আবারও জমি দখলের চেষ্টা শুরু হলে এ ঘটনায় নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।
অভিযুক্ত মুন্নাফের আপন ছোট ভাই মোঃ বারেক জানান, “আমার ভাই একজন নেশাগ্রস্ত ও বিকৃত মানসিকতার মানুষ। সে আগেও স্কুলের অবকাঠামো নষ্ট করেছে, এবার জমি দখলের চেষ্টায় আমাকে মারধর করলো। আমি এর সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করছি।”
এ ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ ও উদ্বেগ বিরাজ করছে। এলাকাবাসী দাবি করেছেন, বিদ্যালয়ের জমি রক্ষা এবং শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্য প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।
এ ব্যাপারে লালমনিরহাট সদর থানার অফিসার ইনচার্জ নুরনবী জানান, বিষয়টি লাকমারফতে জানতে পেরেছি তবে এ ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।