লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ
টানা বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে লালমনিরহাটের তিস্তা তীরবর্তী বিস্তীর্ণ এলাকায় সাময়িক বন্যার সৃষ্টি হয়। পানি বৃদ্ধির পর পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও নতুন করে দেখা দিয়েছে তীব্র ভাঙন।
বৃহস্পতিবার (২১ আগষ্ট) তিস্তা নদী পাড়ের বিভিন্ন এলাকায় সরজমিনে গেলে নদী ভাঙ্গনের এসব চিত্র দেখা যায়।
তিস্তার ভয়াল ভাঙনে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি। বারবার ভাঙনের শিকার হয়ে নিঃস্ব হচ্ছেন নদীপাড়ের মানুষ। কেউ কেউ আগেভাগেই ঘরবাড়ি ভেঙে উঁচু স্থানে সরিয়ে নিলেও থাকার জায়গার অভাবে অনেক পরিবার নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন। ভাঙন ঠেকাতে পানি উন্নয়ন বোর্ড জিও ব্যাগে বালু ভরাট করে কাজ চালালেও তীব্র স্রোতে তা কার্যকর হচ্ছে না বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ ইউনিয়নের কুটিপাড়া গ্রামের ভাঙনের শিকার শতবর্ষি সাইজন বেওয়া বলেন, ইতিমধ্যে তিনি সাতবার ভাঙনের শিকার হয়েছেন। এবার শেষ সম্বল ভিটেমাটিও নদীতে বিলীন হয়ে যাওয়ায় কান্নায় ভেঙে পড়েছেন তিনি।
বন্যা-পরবর্তী ভাঙনে সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ ইউনিয়নের কুটিপাড়া, আদর্শ বাজার, রাজপুর ইউনিয়নের তাজপুর, চিনাতলি, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারি এবং হাতিবান্ধার সিন্ধুনা এলাকায় ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে শতবর্ষী পুরোনো একাধিক বসতভিটাও নদীতে তলিয়ে যাচ্ছে।
এদিকে পানি নেমে গেলে বানভাসীরা চর্মরোগ ও চুলকানিসহ নানা স্বাস্থ্যঝুঁকিতে ভুগছেন। বন্যা আর নদী ভাঙ্গনে জেলায় ইতিমধ্যে প্রায় ৯১৫ হেক্টর রোপা আমন ধানের ক্ষেত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শ্রী শুনীল কুমার বলেন, “জরুরি আপদকালীন কাজের অংশ হিসেবে যেসব এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে, সেখানে জিও ব্যাগে বালু ফেলে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা চলছে।”
স্থানীয়দের দাবি, তিস্তার ভয়াবহ ভাঙনে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। তাই তারা দ্রুত তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছেন।
জিন্নাতুল ইসলাম জিন্না,লালমনিরহাট।
০১৭১২-৯৭৪২২৬, ২১ আগস্ট ২০২৫
ছবির ক্যাপশন—তিস্তার ভাঙনে নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে শতবর্ষী বসতভিটা — লালমনিরহাট সদর উপজেলার কুটিপাড়া গ্রাম।
২. পানি উন্নয়ন বোর্ড জিও ব্যাগে বালু ফেলে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা চালাচ্ছে—লালমনিরহাট।
৩. খুনিয়াগাছ ইউনিয়নের কুটিপাড়া গ্রামের ভাঙনের শিকার শতবর্ষি সাইজন বেওয়া ভিটেমাটি হারিয়ে কান্না।
৪. বন্যা পরবর্তী ভাঙনে ভেঙে যাচ্ছে ফসলি জমি, সংকটে পড়েছেন কৃষকরা।