1. arifcom24@gmail.com : Arif Uddin : Arif Uddin
  2. admin@khoborbari24.com : arifulweb :
  3. editor@khoborbari24.com : editor : Musfiqur Rahman
  4. hostinger@khoborbari24.com : Hostinger Transfer : Hostinger Transfer
  5. khoborbari@khoborbari24.com : Khoborbari : Khoborbari
  6. khobor@gmail.com : :
শুক্রবার, ২১ নভেম্বর ২০২৫, ০৫:০৭ পূর্বাহ্ন
৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
৩০শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি
শিরোনামঃ
গাইবান্ধায় নবনিযুক্ত জেলা প্রশাসকের সঙ্গে জেলা ছাত্রশিবিরের সৌজন্য সাক্ষাৎ সাদুল্লাপুরে ৫০ বোতল ফেনসিডিলসহ দুই নারী মাদক কারবারী গ্রেফতার বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার আয়োজনে গাইবান্ধায় মানব পাচার শীর্ষক আলোচনা সভা ত‌ারাগ‌ঞ্জের জয়বাংলা বাজারে গণশৌচাগারে তালা: স্বাস্থ্যঝুঁকিতে সাধারণ মানুষ পলাশবাড়ীতে খেলার জগৎ মডেল বাস্তবায়নে অভিজ্ঞতা বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত বোদা উপজেলা সাংস্কৃতিক পরিষদ ক্ষুদে শিল্পীদের মননে সংস্কৃতির আলো ছড়িয়ে দিচ্ছে পলাশবাড়ী উয়ন্নন ফোরামের নবগঠিত ৫১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা ভবন সংকটে থমকে গেছে “দুবলাগাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের” পাঠদান কার্যক্রম । পীরগঞ্জের ২ নং কোষারাণীগঞ্জে অবৈধ বালু উত্তোলনের চলমান দৌরাত্ম তারেক রহমানের ৬১তম জন্মদিন আজ

‎ছেলের কথা মনে পড়লেই কবরের পাশে গিয়ে চোখের জল ফেলেন মিরাজের মা

  • আপডেট হয়েছে : মঙ্গলবার, ৫ আগস্ট, ২০২৫
  • ৭৫ বার পড়া হয়েছে

জিন্নাতুল ইসলাম জিন্না,লালমনিরহাটঃ

‎কান্না যেন থামছে না জুলাই যোদ্ধা শহীদ মিরাজের মা মোহছেনা বেগমের। এইদিনই (শোকাহত ৫আগষ্ট) লালমনিরহাটের শহীদ মিরাজ ঢাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু বরন করে। বাড়ির পাশে ছেলের কবর চোখে পড়লেই দু,চোখ বেয়ে জল আসে মা মোহছেনা বেগমের। ছেলের কথা মনে পড়লেই কবরের পাশে গিয়ে চোখের জল ফেলেন এই দুখিনী মা।

‎এদিকে পুত্র শোকে অসুস্থ হয়ে বাবা আব্দুস ছালামও পাড়ি জমিয়েছেন পরপারে। বড় ছেলে আর স্বামীকে হারিয়ে এখন দুঁচোখে অন্ধকার দেখছেন জুলাই যুদ্ধে নিহত শহীদ সন্তানের জননী মোহছেনা বেগম। সংসারের খরচ মেটাতে বাধ্য হয়ে শহীদ মিরাজের স্কুলপড়ুয়া ছোট ভাই মেজবাউল স্কুলের ফাঁকে চায়ের দোকান চালাচ্ছে। স্কুলে গেলে বন্ধ হয় দোকান আর দোকান চালু রাখলে বন্ধ হয় স্কুলে যাওয়া।

‎শহীদ মিরাজুল ইসলাম মিরাজের বাড়ি লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়নের বারঘড়িয়া গ্রামের আনসার খাঁর পুকুরপাড় এলাকায়।
‎ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ৫ আগস্ট ঢাকার যাত্রাবাড়ী থানার সামনে মাছের আড়ত এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে ৮ আগস্ট রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান মিরাজ।

‎মঙ্গলবার (৫আগষ্ট) দুপুরে শহীদ মিরাজের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, ডোরা নদীর পাড় ঘেঁষা বাড়ি তাদের। বাড়ি যাবার রাস্তাটি সম্প্রতি সরকারিভাবে পাকা করে দেওয়া হয়েছে। চাচা আবুল কালামের জমিতে একটা লম্বা টিনসেড ঘরের মাঝে বেড়া দিয়ে দুটি কক্ষ করা হয়েছে। সেই দুটি কক্ষ নিয়েই শহীদ মিরাজের বাড়ি। পাশের টিনে ঘেরা বাথরুম। অপর প্রান্তে টিনের চালা দিয়ে সেখানে রান্না করেন শহীদ জননী মোহছেনা বেগম। বইগুলো ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে মেরাজের পড়ার টেবিলে। এসময় এই প্রতিবেদককে দেখে মেরাজের মা শহীদ ছেলের বিছানায় বসে ছেলের ঘুমানো বালিশের উপর হাত বুলিয়ে হাউ মাউ করে কেঁদে উঠেন।

‎মিরাজের পরিবারের সদস্যরা ও স্থানীয়রা জানান, ২০২১ সালে এসএসসি পাস করে সিএনজিচালক বাবা-মায়ের সঙ্গে ঢাকার যাত্রাবাড়ী এলাকায় চলে গিয়েছিলেন মিরাজ। সেখানে ভাড়া বাসায় থাকত মিরাজের পুরো পরিবার। ঢাকার দনিয়া মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজে উচ্চমাধ্যমিকে ভর্তি হয়েছিলেন মিরাজ। পড়ালেখার পাশাপাশি একটি মোবাইল ব্যাংকিংয়ের দোকানের কর্মচারী ছিলেন তিনি। অসুস্থ বাবার চিকিৎসা, ছোট ভাইয়ের লেখাপড়াসহ পুরো সংসার চলতো মিরাজের আয়েই।

‎গত বছর ৫ আগস্ট হাসিনার পদত্যাগের এক দফা দাবিতে যাত্রাবাড়ী থানার সামনে মাছের আড়ত এলাকায় আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন মিরাজ। সেখানে গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন তিনি। এ অবস্থায় মিরাজকে স্থানীয়রা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে অস্ত্রোপচার করে গুলি বের করা হয়। পরে ৮ আগস্ট চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

‎মিরাজের মৃত্যুতে নিভে যায় তাদের সংসারের আলো। উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়ে পুরো পরিবার। কষ্টার্জিত টাকায় কেনা পাঁচ শতাংশ জমিতে বাড়ি করার স্বপ্ন ছিল তাদের। কিন্তু মিরাজের মৃত্যুতে মাঝপথে থেমে যায় সেই স্বপ্ন। জমিটুকুও হয়ে যায় বেদখল। দলিল দিলেও দখল বুঝিয়ে দেননি প্রতিবেশী দুলাল। সে জমি দখলে নিতে থানা-পুলিশ করেও সুফল মেলেনি। হারতে হয়েছে টাকার কাছে। পড়ালেখা শেষে চাকরি করে বেদখল জমি উদ্ধার করে বাড়ি করে তবেই ঢাকা থেকে ফেরার স্বপ্ন ছিল মিরাজের।

‎ছেলের মৃত্যুর শোকে অসুস্থ বাবা আব্দুস ছালাম বিভিন্ন স্থানে যোগাযোগ করে সরকারিভাবে পাঁচ লাখ টাকা পান। সেই টাকায় মহিষখোচা বাজারে একটি খাস জমির ব্যবস্থা করে দেন স্থানীয় কয়েকজন। সেই জমিতে দোকান করে ব্যবসা শুরু করেন আব্দুস ছালাম। কিন্তু পুত্র শোকে হঠাৎ তিনিও স্ট্রোক করে মারা যান। আবার অনিশ্চয়তার অন্ধকারে ডুবে যায় মিরাজের পরিবার।

‎উপার্জনক্ষম বড় ছেলে আর স্বামীকে হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন মোহছেনা, তার ছেলে আর শাশুড়ি সালমা খাতুন। এই প্রতিবেদকের সামনে মাথা গোঁজার ঠাঁই করতে বেদখলে থাকা পাঁচ শতাংশ জমি উদ্ধারে প্রশাসনের কছে আকুতি জানিয়েছেন জুলাই আন্দোলনে শহীদ মিরাজুল ইসলাম মিরাজের মা মোহছেনা বেগম।

‎শহীদ মিরাজের দাদি সালমা খাতুন বলেন, আগে মিরাজ আমার ওষুধ কিনে দিত, চিকিৎসার দেখভাল করত। তার মৃত্যুর পরে আমার ছেলে আব্দুস ছালাম ওষুধের ব্যবস্থা করত। এখন ছোট ছোট নাতি স্কুলের ফাঁকে দোকান করে যা আয় করছে, তা দিয়ে কোনোমতে খাবার জুটছে।

‎শহীদ মিরাজের ছোট ভাই সিরাজুল ইসলাম বলেন, শোনা যাচ্ছে, শহীদ পরিবারকে লাখ লাখ টাকা  টাকা সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। বাস্তবে প্রথম দফায় পাঁচ লাখ টাকা আর বাড়ি যাওয়ার রাস্তাটা ছাড়া কিছুই পাইনি। আমাদের কেনা জমি বেদখল হয়ে আছে। সেই জমিও উদ্ধার করে দিতে পারেননি সরকারি কর্মকর্তারা। ভাইকে কারা গুলি করলো? তা জানতে চাই। চাই দ্রুত খুনিদের বিচার।

মিরাজের মা মোহছেনা বেগম বলেন, বাড়ির জন্য কেনা জমিটুকু দখল পেতে থানা-পুলিশ করেছিল মিরাজ আর তার বাবা। কিন্তু টাকার কাছে তারা হেরে গেছেন

‎তিনি বলেন, বাজারের সরকারি জমিতে দোকান করার সুযোগ পেয়েছি। সেই দোকান থেকে যা আয় হয়, তা দিয়ে সংসার চলছে কোনোমতে। এখন কেউ আমাদের তেমন খবর নেয় না। আমি আদরের ছেলের মৃত্যুর কয়েক মাসের ব্যবধানে স্বামীকে হারিয়েছি। আমার মতো দুঃখী এ দুনিয়ায় নেই কেউ-এ বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।

খবরটি শেয়ার করুন

Comments are closed.

এরকম আরও খবর
© All rights reserved © 2025

কারিগরি সহযোগিতায় Pigeon Soft