মোঃফেরদাউছ মিয়া,পলাশবাড়ী,গাইবান্ধাঃ
পলাশবাড়ী উপজেলার সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুল হাসানের দায়িত্বকালীন সময়ে সংঘটিত নানা অনিয়ম, দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার নিয়ে যখন এক জুলাই যোদ্ধা ও এক সাহসী সাংবাদিক সরব অবস্থান নেন, তখনই একটি প্রভাবশালী গোষ্ঠী সেই অভিযোগ ধামাচাপা দিতে সক্রিয় হয়ে ওঠে। সম্প্রতি ফাঁস হওয়া একটি ফোনালাপের সূত্র ধরে এ বিষয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে।
ফাঁস হওয়া ফোনালাপে গাইবান্ধা জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সমন্বয়ক মাসুদ রানা শেখ ও সাবেক নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক গোলাম রব্বানীর মধ্যে একটি কথোপকথন শোনা যায়, যেখানে স্পষ্টভাবে উঠে আসে কীভাবে ইউএনও’র বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ আড়াল করার চেষ্টা করা হয়েছিল। এই ফোনালাপ থেকে ইঙ্গিত পাওয়া যায়, ইউএনও কামরুল হাসানকে ‘মানবিক’ রূপে উপস্থাপন করতে কৌশলে কিছু সাংবাদিক আর্থিক সুবিধা গ্রহণ করেছিলেন।
সূত্রমতে, ইউএনও’র বিদায়ের সময় ‘বিদায় সংবর্ধনা’ নামক অনুষ্ঠানগুলো ছিল সাজানো আয়োজন। এসব অনুষ্ঠানে তাঁকে ‘মানবিক ইউএনও’ উপাধি দেওয়া হয়। এমনকি প্রেসক্লাবের একটি সংবর্ধনায় এক সাংবাদিকের আবেগঘন কান্নার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয়।
অভিযোগ রয়েছে, ইউএনও’র অনিয়মের প্রতিবাদ করায় সংশ্লিষ্ট সাংবাদিক ও তার পরিবার নানা ধরনের হয়রানি ও হুমকির মুখে পড়েন। সেই সময় এলাকায় একধরনের ভীতিকর পরিবেশ তৈরি হয়েছিল। বিপরীতে কিছু সুবিধাভোগী ব্যক্তি নির্লজ্জভাবে ইউএনও’র পক্ষ নিয়ে তার দোষ আড়াল করতে ব্যস্ত ছিলেন, যা এখন আলোচনার কেন্দ্রে চলে এসেছে।
কল রেকর্ডে ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের প্রশাসনের পক্ষ নিয়ে সক্রিয় হওয়ার বিষয়টি প্রকাশ পাওয়ায় প্রশ্ন উঠছে— তারা কার স্বার্থে এসব করছিলেন? মানবিকতার মুখোশ পরে কি তারা প্রকৃতপক্ষে দুর্নীতিকে রক্ষা করছিলেন?
এই ঘটনাকে ঘিরে স্থানীয় সুধী সমাজ ও সচেতন নাগরিকরা দ্রুত ও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি তুলেছেন। তারা মনে করেন, ফাঁস হওয়া কল রেকর্ড শুধু সত্য উদঘাটনই করেনি, বরং দায়ীদের বিচারের পথকেও সুগম করেছে।