খবরবাড়ি ডেস্কঃ দীর্ঘ ৩২ বছরের শিক্ষকতা জীবনের অবসান ঘটিয়ে এক আবেগঘন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সহকর্মী-শিক্ষার্থী ও শুভানুধ্যায়ীদের কাছ থেকে বিদায় নিলেন গাইবান্ধা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ খলিলুর রহমান।
কর্মজীবনের শেষ এই দিনটি স্মরণীয় করে রাখতে কলেজ কর্তৃপক্ষের আয়োজনে গাইবান্ধা সরকারি কলেজের হলরুমে তাঁর বিদায়ী সংবর্ধনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
অধ্যক্ষ খলিলুর রহমান একজন সৎ, নিষ্ঠাবান ও দূরদর্শী শিক্ষাপ্রশাসক হিসেবে গাইবান্ধা জেলায় সুপরিচিত। শিক্ষকতা জীবনের শুরুতে তিনি বাংলা বিভাগের প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন। পরবর্তীতে বিভিন্ন কলেজে দায়িত্ব পালন করে গাইবান্ধা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োজিত হন। বিদায় অনুষ্ঠানে কলেজের শিক্ষক-কর্মচারী, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এবং সাবেক শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
বক্তারা তাঁর অবদানের কথা স্মরণ করে বলেন, ‘অধ্যক্ষ খলিলুর রহমান শুধু একজন প্রশাসকই নন, তিনি আমাদের অভিভাবক ছিলেন।’
অনুষ্ঠানে অধ্যক্ষ খলিলুর রহমান বলেন, ‘আমার দীর্ঘ কর্মজীবনে চেষ্টা করেছি শিক্ষার্থীদের আদর্শ নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে। এই কলেজ ও এলাকাবাসীর কাছে আমি চিরঋণী।’ অধ্যক্ষ খলিলুর রহমানের অবসরে কলেজ এবং শিক্ষাজগতে এক শূন্যতা সৃষ্টি হলো বলে বিদায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত সবাই অভিমত ব্যক্ত করেন।
প্রফেসর মো. খলিলুর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স ও মাস্টার্স সনদ অর্জন করেন। তিনি ২১ নভেম্বর ১৯৯৩খ্রি. ১৪তম বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারে যোগদান করেন। চাকুরী জীবনে প্রভাষক থেকে অধ্যাপক পদে সুনামের সাথে পর্যায়ক্রমে উল্লাপাড়া সরকারি আকবর আলী কলেজ, সিরাজগঞ্জ। গাইবান্ধা সরকারি মহিলা কলেজ, কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ, গাইবান্ধা সরকারি কলেজ, বিশেষভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ থেকে গাইবান্ধা সরকারি কলেজে উপাধ্যক্ষ এবং ৪ ফেব্রুয়ারী ২০২১ থেকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করেন। সব শেষে ৫ অক্টোবর ২০২১ থেকে অধ্যক্ষ পদে কর্মরত আছেন।
তিনি প্রাণিবিজ্ঞানে উচ্চতর প্রশিক্ষণসহ দেশে-বিদেশে শিক্ষা প্রশাসন ও ব্যবস্থাপনা, এসিইএম প্রকিউরমেন্ট অফ গূডস ওয়ার্কস এন্ড সার্ভিসেস-এর উপর প্রশিক্ষণ, লিডারশীপ ট্রেনিংসহ বিভিন্ন প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। তিনি বন্যপ্রাণী জীবনবিজ্ঞান বইয়ের সহ লেখক। তিনি ১৯১৮খ্রি. পবিত্র হজব্রত পালন করেন।
পারিবারিক জীবনে তিনি এক ছেলে ও এক মেয়ে সন্তানের জনক। তাঁর স্ত্রীও শিক্ষকতা পেশায় কর্মরত। তিনি জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ ২০২২ ও ২০২৩ এ গাইবান্ধা জেলার শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠান প্রধান (কলেজ) নির্বাচিত হন।