আরিফ উদ্দিনঃ পথভুলা এক কান্ত ক্ষুর্ধাত বন্য হনুমান পলাশবাড়ী পৌরশহরের লোকালয়ের ভয়ভীতি উপেক্ষা করে খাবারের সন্ধানে মানুষের কাছাকাছি এসেছে।
গত কয়েকদিন ধরে জঙ্গল থেকে আসা তাগড়া-তেজস্বী চেহারার কালো মুখাবয়বের শক্তিমান হনুমানটি এক নজর দেখতে স্থানীয় উৎসুক পথচারীরা এখানে-সেখানে ভীড় জমাচ্ছেন।
স্থানীয় জনতা উৎসুক বশত: হনুমান টিকে এটাসেটা খাবার দিচ্ছেন। ক্ষুধার্ত হনুমানটিও খাবার খেয়ে স্বতঃস্ফূর্ত মনের আনন্দে দেদারছে ঘুরে বেড়াচ্ছে এখান থেকে সেখানে।
সোমবার (১৯ মে) দুপুরে পৌরশহরের কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠ সংলগ্ন একটি বাসার সামনে প্রথমতঃ দেখা মেলে। উৎসুক জনতা হুনুমানটি চিপস্ খেতে দিচ্ছে। বন-জঙ্গল কিংবা অরণ্যের হনুমান মনুষ্য লোকালয়ে বিচরণ করায় স্থানীয়রা বিচলিতের পাশাপাশি উৎসুক হয়ে পড়েছেন। শিশু-কিশোর, আবাল-বৃদ্ধ সববয়সের মানুষ একনজর দেখতে যেখানেই হনুমান সেখানেই উৎসুক মানুষের ভীর জমছে। মানুষজন ভয় পেলেও এখন আর তেমন ভয় পাচ্ছে না। হনুমানটিও তার ক্ষুধা নিবারনে খাদ্যের সংস্থানে উৎসুকদের দিকে টগবগ চাহনিতে হয়তো কিছু একটা বলার চেষ্টা করছেন। বনের হনুমান লোকালয়ের জনপদে মানুষের সঙ্গে মিতালী গড়ে তুলেছেন বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা। হনুমান দেখা মিললেই মানুষ এসে ভিড় করছে। মানুষের দেয়া খাবার খেয়ে মনের আনন্দে হনুমান গাছ থেকে টিনের চালে অথবা বিল্ডিং বাসা-বাড়ির ছাদ ছাড়াও কখনো আবার নিরিবিলি রাস্তায় বিচরণ করছে।
বন বিভাগ কর্তৃপক্ষের নিকট লোকালয়ে হনুমানের আবির্ভাবের বিষয়টি জানতে চাইলে তারা জানান, চলমান সময় বন কিংবা জঙ্গলে পর্যাপ্ত খাবারের সংস্থান না থাকায় নিরুপায় হনুমানটি খাবার সংগ্রহে খেয়ালের বশবর্তী লোকালয়ে ঢুকে পড়েছে বলে জানান। হনুমানটি লোকালয়ে প্রবেশ করায় আতঙ্কের কিছুই নেই। হনুমান সাধারণত কারো কোনো ক্ষতি করে না।ইচ্ছেমতো লোকালয়ে এসেছে আবার চলেও যাবে।
হনুমান লোকালয়ে প্রবেশ করার বিষয়ে কথা বললে স্থানীয় নানা বয়সী উৎসুকরা জানান বন-জঙ্গল কিংবা চিড়িয়াখানায় দেখেছি। কিন্তু লোকালয়ে কখনো দেখেনি।তবে হনুমানটির অবাধ বিচরণ দেখতে ভালোই লাগছে। আন্তরিক হয়ে অনেকেই পকেটের পয়সা ব্যয় করে এটা-সেটা খাবার কিনে ছুড়ে মারছে হনুমানের মুখে।
গাইবান্ধা জেলা বন বিভাগের বন কর্মকর্তা এএইচএম শরিফুল ইসলাম মন্ডল বলেন, মূলত: খাবার সংঙ্কটের কারনে হয়তো বনের হনুমান লোকালয়ে প্রবেশ করেছে।এতে ভয়ের কিছুই নেই। যেমন এসেছে আবার ইচ্ছেমতো বনে ফিরে যাবে। তবে খেয়াল রাখতে হবে কেউ যেন হনুমানটিকে আঘাত না করে বসে। তিনি আরো বলেন, সম্ভবত: পার্শ্ববর্তী ভারত (ইন্ডিয়া) হতে বিভিন্ন পণ্যসহ সবজি পরিবহনের ক্ষেত্রে যেসব ট্রাকগুলো আমাদের দেশে প্রবেশ করে সেগুলোর স্টাফদের অগোচরে খাবারের জন্য ট্রাকে উঠে পড়ে। একারণে দু’একটা হনুমান চলে আসা কোনো অস্বাভাবিক ব্যাপার নয়। সর্বোপরি এদের কোনো খাবার দেয়া যাবে না। খাবার না পেয়ে হনুমানটি যখন ক্ষুধার্ত হয়ে পড়বে তখন এমনিতেই আবার বনে ফিরে যাবে সে। হনুমানটি বিচ্ছিন্ন ভাবে শহর ও শহরতলীর এখানে সেখানে অনেকেই বিচরণ করতে দেখেছেন বলে জানা যায়।