দরিদ্র পরিবারের ইদ্রিস ইসলাম ও মর্জিনা বেগম দম্পতির ছেলে মাহিন ইসলাম (১১)। পঞ্চম শ্রেণিতে তার রোল নম্বর-১। চলতি জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা পদক ‘অংক দৌড়’ প্রতিযোগীতায় অংশগ্রহণ করে এই মাহিন। এতে ইউনিয়ন, উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে প্রথম স্থানসহ বিভাগীয় পর্যায়েও প্রথম স্থানের সনদ পেয়েছে। এখন জাতীয় পর্যায়ে অংশ নেওয়ার অপেক্ষায় এ শিক্ষার্থী। দরিদ্রতাকে হার না মানা এই মেধাবী মাহিনের দৃষ্টান্তে এলাকায় বইছে উৎসবের আমেজ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের খোর্দ্দ রসুলপুর গ্রামের দিনমজুর ইদ্রিস ইসলাম। তার সহায় সম্পদ বলতে আছে দেড় শতক জমি। সেখানে স্ত্রী ও তিন সন্তান নিয়ে বসবাস। জীবিকার তাগিদে অন্যের একটি ইজিবাইক ভাড়া নিয়ে যাত্রী বহন করেন। পাশাপাশি স্ত্রী মর্জিনা বেগম একটি ক্ষুদ্র ভ্যারাইটিস দোকান দিয়েছেন। এ দম্পতির তিন সন্তানের মধ্যে মাহিন ইসলাম সবার বড়। স্থানীয় খোর্দ্দ রসুলপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণিতে লেখাপড়া করছে এ ছেলেটি। অত্যন্ত মেধাবী শিক্ষার্থী মাহিন এ বছর অংশ নেয় জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা পদক ‘অংক দৌড়’ প্রতিযোগীতায়। এতে প্রথম স্থান অধিকার করেছে ইউনিয়ন, উপজেলা, জেলা ও রংপুর বিভাগ পর্যায়ে। এখন জাতীয় পর্যায়ে ‘অংক দৌড়’ প্রতিযোগীতায় অংশ নেওয়ার প্রস্তুতি রয়েছে শিশু শিক্ষার্থী মাহিনের।
খোর্দ্দ রসুলপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক আবু হেনা মো. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, পঞ্চম শ্রেণির মাহিন ইসলাম নামের শিক্ষার্থী আমার হাতে গড়া। তাকে আমি অতিরিক্ত পাঠদান দেই। এ শিক্ষার্থী অতিদরিদ্র পরিবারের হলেও অত্যন্ত মেধাবী। সে ফাস্ট বয়। অংক দৌড় প্রতিযোগীতায় সে যেন জাতীয় পর্যায়ে প্রথম হতে পারে, এ জন্য সবার কাছে দো’আ কামনা করছি। একইভাবে মাহিনের ভবিষ্যৎ মঙ্গল কামনা করেন প্রধান শিক্ষক এসএম ফেরদৌস প্রধান।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্তকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) এসএম আরশাদ জানান, এই অংক দৌড় প্রতিযোগিতা একটি মজার এবং শিক্ষামূলক প্রতিযোগিতা। নিয়ম হিসেবে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে অনুষ্ঠিত হয়। সেই সময়ের মধ্যে একাধিক অংকের প্রশ্ন সমাধান করে প্রতিযোগীরা। সঠিক উত্তর বিবেচনা করে বিজয়ী নির্ধারণ করা হয়। সাদুল্লাপুর উপজেলা পর্যায়ের অংক দৌড় প্রতিযোগীতা পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী মোহাম্মদ অনিক ইসলাম বলেন, এই প্রতিযোগীতার লক্ষ্য হচ্ছে অংককে আরো আকর্ষণীয় করে তোলা এবং শিক্ষার্থীদের গণিতের প্রতি আগ্রহ বাড়ানো। এতে মাহিন মিয়া দৃষ্টান্ত অর্জন করেছে।