খবরবাড়ি ডেস্কঃ গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলা সমাজসেবা অফিসের কর্মকর্তা মশিউর রহমান ও অফিসে দায়িত্বরত কারিগরি প্রশিক্ষক (কম্পিউটার) লোকমান হাকিম-এর শাস্তির দাবীতে মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করেছ বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী।
সোমবার (২১ এপ্রিল) স্থানীয় জনসাধারণ সাঘাটা উপজেলা পরিষদ চত্বএরর সামনে মানববন্ধন কর্মসূচী পালন শেষে এবিষয়ে গণস্বাক্ষর সম্বলিত একটি স্বারকলিপি সমাজসেবা অধিদপ্তর-এর মহাপরিচালক বরাবরে প্রেরণ করা হয়েছে।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, নিজেরা করি সংস্থার রাজশাহী বিভাগীয় সমন্বয়কারী মেজবাহ উদ্দিন, বিপ্লবী ওয়ার্কাস পার্টির গাইবান্ধা জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মাসুদুর রহমান মাসুদ, উপজেলা ভুমিহীন সমিতির সভাপতি দোলোয়ার হোসেন, সাঘাটা উপজেলা ওয়ার্কাস পার্টির সাধারণ সম্পাদক আজাদুল ইসলাম, সমাজসেবক ছামসুল হক, ভুমিহীন সমিতির নারী নেত্র সুমিত্রা রাণী ও সমাজসেবক প্রিয় নাথ প্রমুখ। এ মানববন্ধনে সুবিধাবঞ্চিতসহ এলাকার বিভিন্ন শ্রেণী পেশার ৪ শতাধিকক নারী-পুরুষ অংশ নেন।
বক্তারা বলেন, সমাজসেবা অধিদপ্তর কর্তৃক সামাজিক সুরক্ষা বেষ্টনীর আওতায় ২০২২-২০২৩ এবং ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরে সাঘাটা উপজেলায় বয়স্ক, বিধবা-প্রতিবন্ধী ভাতা প্রদান চলমান কার্যক্রমে ১০টি ইউনিয়নে ভাতা প্রদানে যাচাই বাছাইয়ের মাধ্যমে বয়ষ্ক, বিধবা-প্রতিবন্ধী সনাক্তকরণ করে উপকারভূগীর তালিকা প্রণয়ন করার নিয়ম থাকলেও সমাজসেবা উপজেলা সমাজসেবা অফিসে তা করা হয়নি। সেসময় দায়িত্বরত উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মশিউর রহমান অনলাইন কাজে কাজে পারদর্শী অফিসের কারিগরি প্রশিক্ষক (কম্পিউটার) লোকমান হাকিমের মাধ্যমে তার নিয়ন্ত্রিত বাহিরাগত একটি দালাল চক্রের মাধ্যমে অর্থের বিনিময়ে প্রতিবন্ধী নয় এমন ব্যক্তি এবং একই পরিবারের একাধিক সদস্যকে ডাক্তারী সনদ ছাড়াই সুবর্ণ কার্ড তৈরি করে এ ভাতার আওতায় আনা হয়েছে। এছাড়াও একই উপায়ে এলাকায় নেই এমন শতশত ভূয়া নাম ভাতার আওতায় এনে নগদের মোবাইল একাউন্ট সিম ব্যবহার করে টাকা নিজেরা হাতিয়ে নিয়েছে। ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা ঘুষ দিতে আপারগতার দরুণ ভাতা পাওয়ার উপযোগী ব্যক্তিদের ভাতা সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। একারণে এ উপজেলায় সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় অস্বচ্ছল, অকর্মক্ষম ও অসহায় ব্যক্তিদের সহায়তা প্রদান কার্যক্রম পরোপুরি ব্যহত হয়েছে। যার কারণে পিছিয়ে পড়া সুবিধাবঞ্চত জনগোষ্টীকে উন্নয়নের মূল ধারায় সম্পৃক্ত নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
এমতাবস্থায় দোষি কর্মকর্তা কর্মচারীর সর্বউচ্চ শাস্তির পাশাপশি সঠিক যাচাই বাছাইয়ের মাধ্যমে অস্বচ্ছল, বয়স্ক, বিধবা ব্যক্তি নির্বাচন ও প্রকৃত প্রতিবন্ধী সনাক্ত করে সুবিধাবঞ্চত জনগোষ্টীকে উন্নয়নের মূলধারায় আনার জোরদাবী জানান।
সাঘাটা উপজেলা সমাজসেবা অফিস সূত্রে জানা যায়, দূর্ণীতির অভিযোগে ওই কর্মকর্তা মশিউর রহমানকে গত বছর ৯ সেপ্টেম্বর সাঘাটা থেকে ঠাকুরগাঁও জেলা সমাজসেবা বদলি করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্ত চলমান রয়েছে এবং কারিগরি প্রশিক্ষক (কম্পিউটার) লোকমান হাকিমকে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা সমাজসেবা অফিসে বদলি করা হয়।পরে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে ।
উল্লেখ্য; এই কর্মকর্তা মশিউর রহমান এরআগে কুড়গ্রাম জেলার উলিপুর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্বরত অবস্থায় ২০২১ সালের ২২ অক্টোবর রংপুর থেকে মাদকসহ র্যাব-১৩ তাকে আটক করে। এব্যাপারে তার বিরুদ্ধে মাদক আইনে মামলা দায়ের করে তাকে জেলহাজতে পেরণ করা হয়। পরে সর্তসাপেক্ষে ২৬ অক্টোবর তিনি জেল থেকে জামিনে পান। এই অপরাধে ওই (অক্টোবর) মাসেই সমাজকল্যাণ মন্ত্রাণালয় হতে তিনি সাময়িক বরখাস্ত হন। পরবর্তীতে তিনি চাকুরি ফিরে পাওয়ার পর শাস্তি হিসেবে সমাজসেবা অধিদপ্তর হতে তাকে সাঘাটায় বদলি করা হয়। ২০২২ সালের ১৫ নভেম্বর তিনি সাঘাটা উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করে ছিলেন।