আরবি মাসের আজ ১০ জিলহজ বৃহস্পতিবার পবিত্র ঈদ উল আযহা। যথাযথ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও ত্যাগের মহিমায় উৎসবমুখর পরিবেশে সারাদেশের মতো গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ীতেও উদযাপিত হচ্ছে পবিত্র ঈদুল আযহা। ত্যাগের আহ্বান নিয়ে উদযাপিত হচ্ছে ঈদুল আযহা, যে উৎসবে পশু কোরবানির মধ্য দিয়ে নিজের ভেতরের কলুষতাকে বলি দেওয়া ইসলামের শিক্ষা।
মুসলমানদের অন্যতম বৃহৎ এই ধর্মীয় উৎসব বাংলাদেশে পরিচিত কোরবানির ঈদ নামে। প্রতিবারের মতো এবারো গাইবান্ধার পলাশবাড়ীর কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে ঈদের প্রধান জামাত সকাল সাড়ে আটটায় অনুষ্ঠিত হয়।
কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে ইমামতি করেন পলাশবাড়ী মহিলা সিনিয়র মাদ্রাসা শিক্ষক ও কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠের পেশ ইমাম আবু বক্কর সিদ্দিক।এ ছাড়া নামাজ পূর্ব সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন পৌর মেয়র জননেতা গোলাম সরোয়ার প্রধান বিপ্লব, উপজেলা চেয়ারম্যান এ,কে,এম মকসেদ চৌধুরী বিদ্যুৎ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুজ্জামান নয়ন, পলাশবাড়ী থানা অফিসার ইনচার্জ মাসুদ রানা ও পলাশবাড়ী পৌর সভার সাবেক প্রশাসক আবু বকর প্রধান । এ ঈদগাহ মাঠে রাজনীতিক, জনপ্রতিনিধি, সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ নামাজ আদায় করেন।
এরপর মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে পশু কোরবানির মধ্য দিয়ে দেশের মুসলিম সম্প্রদায় তাদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব ঈদ উল আযহা উদযাপন করছে। ঘরে ঘরে ত্যাগের আনন্দে মহিমান্বিত হচ্ছে মন। উপজেলায় ঈদের নামাজের পরপরই বিভিন্ন স্থানে শুরু হয় পশু কোরবানি। এবার পলাশবাড়ীতে গরুর সরবরাহ ভাল থাকায় দাম ছিল মোটামুটি হাতের নাগালেই।
প্রায় চার হাজার বছর আগে মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য হজরত ইব্রাহিম (আ.) তাঁর ছেলে হজরত ইসমাইল (আ.)-কে কোরবানি করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। কিন্তু পরম করুণাময়ের অপার কুদরতে হজরত ইসমাইল (আ.)-এর পরিবর্তে একটি দুম্বা কোরবানি হয়ে যায়। হজরত ইব্রাহিম (আ.)-এর সেই ত্যাগের মহিমার কথা স্মরণ করে মুসলিম সম্প্রদায় জিলহজ মাসের ১০ তারিখে আল্লাহর অনুগ্রহ লাভের আশায় পশু কোরবানি করে থাকেন। তবে ঈদের পর দুই দিন, অর্থাৎ ১১ ও ১২ জিলহজেও পশু কোরবানি করার ধর্মীয় বিধান রয়েছে।
আজ সকালে ঈদের দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ আদায়ের জন্য মুসল্লিরা স্থানীয় ঈদগাহ বা মসজিদে সমবেত হন। ধনী-গরিবের ভেদাভেদ ভুলে সবাই এক কাতারে দাঁড়িয়ে ঈদের নামাজ আদায় করেন। নামাজ শেষে নিজের পাপমোচন এবং পরিবার-পরিজন, দেশ ও মুসলিম উম্মাহর জন্য দোয়া চেয়ে আল্লাহর দরবারে মোনাজাত করেন। নামাজ শেষে অনেকেই যান কবরস্থানে স্বজনের কবর জিয়ারত করতে। অশ্রুসিক্ত হয়ে চিরকালের জন্য চলে যাওয়া স্বজনের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে আল্লাহর দরবারে করজোড়ে মোনাজাত করেন ধর্মপ্রান মুসল্লিরা।