
গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার মনোহরপুর ইউনিয়নের তালুক ঘোড়াবান্দা বালুখোলা গ্রামে প্রতিবেশীর চোর-মাদকাসক্ত ছেলের সাথে নাবালিকা বোনকে বিয়ে দিতে রাজি না হওয়ায় ভাই আব্দুল্লাহ ওরফে বাইজিদকে (৪) হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে নিজ বাড়ির উঠানে বিলাপ করে এ দাবি করেন নিহত বাইজিদের মা রাহেনা বেগম।
তিনি বলেন, প্রতিবেশী সূদের কারবারী সিরিকুলের ছেলে রোমান এলাকার একজন চিহ্নিত চোর ও নেশাগ্রস্ত আসক্ত। রোমানের পরিবারের পক্ষ থেকে আমার মেয়ে অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী তিশাকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। কিন্তু এতে আমি রাজি না হওয়ায় রোমান বিভিন্ন সময় হুমকি দেয়। এরই ধারাবাকিতকায় সে আমার ছেলে বাইজিদকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। এই দাবি করে দোষীদের ফাঁসির দাবি জানান তিনি। সেইসঙ্গে পুলিশ সুপারের কাছে স্থানীয় হরিণাবাড়ী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-পরিদর্শক বুলবুলের ভূমিকায় চরম অসন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি।
এসময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত গাইবান্ধা পুলিশ সুপার মো. কামাল হোসেন ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, এ ঘটনায় ইতোপূর্বে আটক দুইজন জেলহাজতে রয়েছে। প্রকৃত ঘটনা উদঘাটনের লক্ষ্যে রোববার রাতে অভিযুক্ত পরিবারের কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। এরআগে শনিবার সন্ধা সাড়ে ৬টার দিকে উপজেলার মনোহরপুর ইউনিয়নের তালুক ঘোড়াবান্দা বালুখোলা গ্রামের বিস্তীর্ণ একটি ধান ক্ষেত থেকে বাইজিদের খন্ডিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত সিরিকুলের বসতবাড়িতে ভাংচুরসহ আগুন দেয় বিক্ষুদ্ধ এলাকাবাসী। পরে পলাশবাড়ী ও গাইবান্ধা ফয়ার সার্ভিসের দু’টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। পলাশবাড়ী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রাজু ইসলাম জানান, সোমবার বিকেল ৩টার দিকে বাড়ির পাশে খেলতে গিয়ে নিখোঁজ হয় উপজেলার মনোহরপুর ইউনিয়নের তালুক ঘোড়াবান্দা বালুখোলা গ্রামের সৌদি প্রবাসী তাহারুল ইসলাম ব্যাপারীর ছেলে বাইজিদ। পরদিন মঙ্গলবার শিশুটির মা রাহেনা বেগম বাইজিদের সন্ধানে পলাশবাড়ী থানায় সাধারণ ডায়েরী (জিডি) করেন। চেষ্টা চালিয়েও শিশুটির কোনো সন্ধান পাওয়া যাচ্ছিল না। অবশেষে শনিবার বিকেলে স্থানীয় দুইজন ব্যক্তি ধান ক্ষেতে কাজ করতে গিয়ে শিশুটির অর্ধগলিত খন্ডিত মরদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেয়। পরে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাইবান্ধা জেলা হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।