
আশা মিলছে না দেশের ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে। চলতি বছর সেপ্টেম্বরে সর্বোচ্চ রোগীর যে রেকর্ড সেটি ছাড়িয়ে যেতে চলেছে চলতি মাসের প্রথম ১৫ দিনেই। এরই মধ্যে প্রাণহানি গত মাসের সমান হয়েছে। বৃষ্টির প্রকোপ এখনো চলমান থাকায় পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে। একই সঙ্গে স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্ট ও ঢাকা দুই সিটি করপোরেশনের অগোছালো কার্যক্রমের সমালোচনা করছেন জনস্বাস্থ্যবিদ ও চিকিৎসকেরা।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই নিয়ে চলতি মাসে ৩৪ জনের প্রাণ কাড়ল ডেঙ্গু। যা গত মাসের সমান। স্বাভাবিকভাবেই মাস শেষে এই সংখ্যা আরও দীর্ঘ হবে বলে মনে করছেন চিকিৎসকেরা। সব মিলিয়ে চলতি বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে ৮৯ জনের প্রাণহানির খবর দিল সরকারি সংস্থাটি। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে কেবল ঢাকা মহানগরীতেই। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩৩ জন চট্টগ্রামে, এ ছাড়া বরিশাল বিভাগে মারা গেছেন পাঁচজন। অন্যজন ঢাকা বিভাগের নারায়ণগঞ্জের বাসিন্দা।
অন্যদিকে নতুন করে ৭৩৪ জনের দেহে ডেঙ্গুর অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। এতে করে এ বছর ডেঙ্গুতে সংক্রমিতের সংখ্যা বেড়ে ২৮ হাজার ৩২৬ জনে দাঁড়িয়েছে। গত সেপ্টেম্বরে যা সংক্রমিত হয়েছি অক্টোবরের অর্ধেক যেতেই ছুঁই ছুঁই অবস্থা। এ মাসে ডেঙ্গুর শিকার ৮ হাজার ২৩৪ জন। ২০১৯ সালে বিপর্যয় ডেকে এনেছিল ডেঙ্গু পরিস্থিতি। করোনা মহামারির কারণে ২০২০ সালে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত থাকলেও গত বছর এতে ২৮ হাজারের বেশি আক্রান্ত ও ১০৫ জনের মৃত্যু হয়।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের রিউমাটোলজি বিভাগের সিনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. নাহিদুজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, এই মুহূর্তে হাসপাতালে ডেঙ্গুর রোগীর চাপ অনেক বেশি। সংক্রমিত হলেও আসছেন শেষ পর্যায়ে গিয়ে। এতে করে জটিলতা বাড়ে। জ্বর হলে বাসায় থাকে, প্রেশার বেড়ে যায়, অধিকাংশ অঙ্গ যখন কাজ করা বন্ধ করে দেয়, তখন হাসপাতালে আসে, ফলে প্রাণহানি ঘটে। তাই জ্বর হলে সবার আগে ডেঙ্গু পরীক্ষার পরামর্শ এই চিকিৎসকের।
ডা. নাহিদুজ্জামান বলেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে জনসাধারণের সচেতনতার বিকল্প যেমন নেই, তেমনি উন্নত সরকারি ব্যবস্থাপনাও জরুরি। কিন্তু মাঠ পর্যায়ে সেই কার্যক্রম অনেকটা অগোছালো। ফলে ডেঙ্গু থেকে রেহাই মিলছে না।