
নির্বাচন কমিশনের কাছ থেকে জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধনের কাজ সরকারের অধীনে আসার পাশাপাশি শিশুর জন্মের পরপরই জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠকে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধনে নতুন আইনের খসড়া নীতিগত অনুমোদন পাওয়ার পর এই তথ্য জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।
দেড় দশক আগে ছবিসহ ভোটার তালিকা তৈরির সময় জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরির কাজটি নির্বাচন কমিশনের অধীনেই হয়েছিল। এরপর নির্বাচন কমিশনই ছিল এর ব্যবস্থাপনায়।
এখন নির্বাচনের কমিশনের আপত্তির মধ্যেই তা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের অধীনে আনছে সরকার।
মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব আনোয়ারুল সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ২০১০ সালের জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইন অনুযায়ী এনআইডির নিবন্ধন প্রক্রিয়া নির্বাচন কমিশনের কাছে ছিল। নির্বাচন কমিশন থেকে এখন এটা সরকারে নিয়ে আসতে চাচ্ছে। “এজন্য এটা হোম মিনিস্ট্রি বা সুরক্ষা সেবা বিভাগে নিয়ে আসা হয়েছে। কিন্তু যে আইনটা উনারা আজকে এনেছেন, সেটা আমরা পরিবীক্ষণ করেছি। মন্ত্রিসভা মনে করে যে, এই আইনটা আরেকটু রিভিউ করা দরকার।”
তিনি বলেন, নতুন আইনটি পাস হয়ে যাওয়ার পরে এনআইডির পুরো কাজ সুরক্ষা সেবা বিভাগ করবে। তখন জন্মের সাথে সাথে এনআইডি হয়ে যাবে।
বাংলাদেশে এনআইডি তৈরির ইতিহাসের উপর আলোকপাত করে মন্ত্রিপরিষদ সচিব একে সরকারের অধীনে আনার যুক্তি তুলে ধরেন।=তিনি বলেন, মূলত ১৯৯৬ সালে ভোটার আইডি কার্ড নিয়ে নির্বাচন কমিশনের অধীনে কার্যক্রম শুরু হয়েছিল। পরে যা এনআইডি হিসাবে রূপান্তর করা হয়।
“কিন্তু বেসিক কনসেপ্ট তখন ছিল নির্বাচন সম্পর্কিত। পরে যখন এনআইডিতে টার্ন হল, তখন এটার সাথে সব কর্মসূচি এবং আইডেন্টিফিকেশন সব কিছু যোগ করে দেওয়া হল। এখন দেখা যাচ্ছে, এটা নির্বাচন কমিশনের চেয়ে বেশি প্রয়োজন সরকারের সরাসরি তত্ত্বাবধানে থাকা।”
এর ব্যাখ্যায় আনোয়ারুল বলেন, “নির্বাচন কমিশন তো সব ক্ষেত্রে সরকারের সাথে অত ডিরেক্ট রিলেটেড না। সেজন্য এটা ডিসিশন অনুযায়ী সুরক্ষা সেবা বিভাগে নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত হয়েছে, যারা পাসপোর্টটা হ্যান্ডল করে।”
এনআইডি সুরক্ষা সেবা বিভাগের অধীনে কবে যাবে- এ প্রশ্নে তিনি বলেন, আইন যতদিন পর্যন্ত না হবে, ততদিন স্বরাষ্ট্রতে আসবে না। এখন যেভাবে আছে চলতে থাকবে, ওই নির্বাচন কমিশনের অধীনে।
“নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। কিন্তু শর্ত হল, লেজিসলেটিভ ডিভিশন সংশ্লিষ্ট সকলের সাথে পরামর্শ করবে এবং কেবিনেটকেও কনসাল্ট করে যথাসম্ভব, যে আইনটা আগে ছিল, সেটাকেই বেটার মনে হয়েছে, সেটার সাথে কোনো কিছু যোগবিয়োগ করা হয়, ওভাবে করে দিতে বলা হয়েছে।”এই প্রক্রিয়া শেষ হয়ে পুনরায় মন্ত্রিসভায় আইনটি উঠতে এক মাসের মতো সময় লাগতে পারে বলে ধারণা দেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব।