
রংপুরে যাত্রীবাহী দুই বাস জোয়ানা পরিবহন এবং ইসলাম পরিবহনমু খোমুখি সংঘর্ষে ৯ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে পাঁচজন ঘটনাস্থলে এবং চারজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন প্রায় ৫৮ জন যাত্রী।
গত রোববার রাত সাড়ে ১২টার দিকে জেলার তারাগঞ্জ উপজেলার রংপুর-দিনাজপুর মহাসড়কের খারুভাজ সেতুর কাছে এই সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। এ দুর্ঘটনায় জোয়ানা পরিবহনের চালক ও সহকারীকে দায়ি করেছেন যাত্রীরা। তারা বলেন, মাদক সেবন করে বেপরোয়া গাড়ি চালানোয় এ সড়ক দুর্ঘটনা ও হতাহতের ঘটনা ঘটে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন জোয়ান পরিবহনের যাত্রী আমজাদ হোসেন বলেন, রংপুর মেডিক্যাল কলেজ মোড় থেকে বাস ছাড়তে রাত সাড়ে ১১টা বেজে যায়। সিট বাদেও বাসের ছাদে অনেক যাত্রী তোলেন সহকারী, সুপারভাইজার ও চালক। এরপর সহকারীর সঙ্গে গাঁজা সেবন করতে করতে বাস চালানো শুরু করেন চালক। এ সময় বাসের ভেতর গাঁজার ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়লে কয়েকজন যাত্রী প্রতিবাদ করেন। কিন্তু কারও কথা না শুনে চালক দ্রুত গতিতে বাস চালিয়ে সৈয়দপুরের দিকে যাচ্ছিলেন। পথে মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হলেও বাস চলছিল দ্রুত গতিতেই। অনেক অনুরোধ করলেও তারা কথা শোনেনি। এরপর হঠাৎ বিকট শব্দ হয়। আর কিছুই বলতে পারবো না। জ্ঞান ফেরার পর দেখি আমি হাসপাতালে।
নিহতদের মধ্যে চারজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। রমেক হাসপাতালে নিহত চারজন হলেন নীলফামারীর সৈয়দপুরের আরিফ বিল্লাহ (৩৩) ও জুয়েল (২৭), তারাগঞ্জের ধনঞ্জয় (৪৫) ও গাড়ির হেলপার। আহত ৫৮ জন রমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তারা হাসপাতালের ১৫, ১৯, ৩১ এবং ৩২ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
সকালে জেলা প্রশাসক আসিব আহসান দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহতের জন্য ২০ হাজার করে টাকা ঘোষণা এবং আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা নিয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক গোলাম রাব্বানী।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, সোমবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে তারাগঞ্জ খারুভাজ সেতুর কাছে জোয়ানা পরিবহন ও ইসলাম পরিবহন নামে দুটি যাত্রীবাহী বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটে। এ সময় ঘটনাস্থলেই পাঁচজন নিহত হন। আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে বৃষ্টির মধ্যে আহত-নিহতের উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে হাসপাতালে আরও চারজন মারা যান।

তারাগঞ্জ হাইওয়ে থানার ওসি মাহবুব মোর্শেদ বলেন, দুর্ঘটনার পরপরই ভারী বৃষ্টি শুরু হয়। এর মধ্যেও পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থল থেকে পাঁচজনের লাশ উদ্ধার করা হয়।