
প্রতিবেদক – সরকার লুৎফর রহমান
গাইবান্ধার পলাশবাড়ীর নুনীয়াগাড়ী কবরস্থান একটি বেসরকারী কবরস্থান। অনেকেই এটিকে সরকারী কবরস্থান বলে মনে করেন। প্রকৃতপক্ষে ১৯৪৫ইং সালে নুনিয়াগাড়ী মৌজার মন্ডলপাড়ার কেরামত উল্লাহ মন্ডল ৭০ শতাংশ জমি ওয়াকফ্নামা করার মাধ্যমে এ কবরস্থানের সূচনা হয়। বর্তমানে সমাহিত ও জমির পরিমান হিসেবে এ উপজেলার সর্ববৃহৎ কবরস্থান।
জেলার পলাশবাড়ী উপজেলার নুনীয়াগাড়ী কবরস্থানটি আর কয়েক বৎসর পর শতবর্ষে পদার্পণ করবে। ১৯৪৫ সালে নুনীয়াগাড়ী কবরস্থানের নামে কেরামত উ্ল্লাহ মন্ডল ৭০ শতাংশ জমি ওয়াকফ্নামা করার মাধ্যমে এ কবরস্থানের সূচনা হয়।
জানা যায়, এর আগে ১৯৩৫ সালে পলাশবাড়ী এলাকায় একটি দুর্ঘটনায় কয়েকজন ব্যক্তি মারা গেলে স্থানীয় প্রশাসন নুনীয়াগাড়ী মৌজায় মন্ডল পাড়া ও পলাশবাড়ী-ঘোড়াঘাট রাস্তা সংলগ্ন জমিতে তাদেরকে দাফন করে। এরই প্রেক্ষিতে ১৯৪৫ সালে কেরামত উল্লাহ্ মন্ডল ৭০ শতাংশ জমি নুনীয়াগাড়ী কবরস্থানের নামে ওয়াকফ্নামা করেন। এর ফলে নুনীয়াগাড়ীবাসী সহ সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত হয় এ কবরস্থানটি। আজ অত্র এলাকার মুসলিম ধর্মাবলম্বীর একটি নির্ভরযোগ্য কবরস্থানে পরিনত হয়েছে। অত্র উপজেলার গরীব মানুষের শেষ ঠিকানা নিয়ে দুশ্চিন্তা লাঘব করেছেন দাতা এ জমি দান করেন।
পরবর্তীতে উক্ত ৭০ শতাংশ জমির সাথে এ পর্যন্ত ২৯ শতাংশ জমি ক্রয় করায় মোট জমির পরিমান ৯৯ শতাংশ। কবরস্থানটির সূচনা থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ১০ হাজার মানুষকে সমাহিত করা হয়েছে বলে জানান নুনীয়াগাড়ী কবরস্থানের সাধারণ সম্পাদক মোঃ আঃ মতিন মন্ডল।
পলাশবাড়ী চৌমাথা হতে ৫শ মিটার দক্ষিণে পলাশবাড়ী ঘোড়াঘাট রাস্তার পূর্বপাশে এ কবরস্থানটির অবস্থান। এর উত্তর পশ্চিমপাশে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের সাব স্টেশন বর্তমানে নেসকো এবং পশ্চিমে অবস্থান করছে পলাশবাড়ী সরকারী কলেজ।
এ কবরস্থানে সমাহিত হতে গেলে নিদিষ্ট পরিমানের কোন অর্থ প্রদান করতে হয় না এবং বেওয়ারিশ মরদেহ সমাহিত করতে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকে কবরস্থান কমিটি। স্বজনের প্রদান কৃত অর্থে এ যাবৎ ২৭ শতাংশ জমি ক্রয় করা হয়েছে এবং বর্তমানে আরও ১৮ শতাংশ জমির দামদর করছে কর্তৃপক্ষ। ঐতিহাসিক এ কবরস্থানটিকে আরও প্রসার ও পরিকল্পনামাফিক পরিচালনা করা অতিব জরুরি হয়ে পড়েছে বলে ধারণা সচেতনমহল। এ যাবৎকালে বিগত সাংসদ মরহুম ইউনুস আলী সরকার দুইটি প্রকল্প প্রদান করায় কবরস্থানের ফটকসহ প্রাচীর নির্মাণ এবং মাটি ভরাটের কাজ করা হয়। এর পাশাপাশি বেসরকারিভাবে সাহায্য সহযোগিতা তুলনামূলকভাবে অনেক কম। এ কবরস্থানে ২৫ বৎসর মেয়াদি কবরও রয়েছে এর পাশাপাশি রয়েছে বিভিন্ন মেয়াদের কবর। তবে কবরস্থানটির সূচনা হতে এ পর্যন্ত চালা দেওয়া হয়নি বলে জনান, সাধারণ সম্পাদক আঃ মতিন মন্ডল।
এ মৌজার মুসলিম সম্ভান্ত্র পরিবারের আসমত উল্লাহ মন্ডলের প্রথমপুত্র কবরস্থানের জমি দাতা মরহুম কেরামত উল্লাহ মন্ডল কবরস্থান প্রতিষ্ঠা এবং দ্বিতীয় পুত্র ছমির উদ্দিন মন্ডল নুনীয়াগাড়ী জামে মসজিদে জমি দান করেন। অত্র মসজিদে ৫শ মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারে। বর্তমানে দাতা গোষ্ঠীর নাতী কবরস্থান ও মসজিদের দ্বায়িত্ব পালন করছেন।
কবরস্থানটি নিয়মিত সংরক্ষণ করা, কবর খননের নিদিষ্ট লোকবল প্রয়োজনমাফিক কাজ করে আসছে। অপরদিকে ক্রয়কৃত জমি ভরাট, উচু প্রাচীরসহ গোসলের স্থান এবং পার্কিং হাত ধৌতের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা, আলোর ব্যবস্থা, ফুলের সমাহার তৈরি এবং নৈশ প্রহরীর ব্যবস্থা দরকার বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা। অতি দ্রুত এ কবরস্থানটি আরও প্রসারের জন্য সাহায্য সহযোগিতায় প্রয়োজন অন্যথায় ভবিষ্যতে এর আশপাশে জমি ক্রয় ক্ষমতার বাহিরে যেতে পারে বলে এলাকাবাসী জানান।
এ বিষয়ে কবরস্থানের সাধারণ সম্পাদক আঃ মতিন মন্ডল জানান, জমি ক্রয় করতে কোন প্রতিবন্ধকতা নাই শুধু অর্থের প্রয়োজন।
অত্র উপজেলার এই ঐতিহ্য ধরে রাখতে ৩১-গাইবান্ধা-৩ (পলাশবাড়ী-সাদুল্যাপুর) আসনের সংসদ সদস্য এ্যাড, উম্মে কুলসুম স্মৃতি এমপি,
গাইবান্ধা জেলা পরিষদ, গাইবান্ধা জেলা প্রশাসন,
পলাশবাড়ী উপজেলা পরিষদ, উপজেলা প্রশাসন সংশ্লিষ্ঠদের দৃষ্টি কামনা করছে উপজেলাবাসী।