
চা শ্রমিকদের চলমান মজুরি বৃদ্ধির আন্দোলন নিরসনে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে বুধবার দুপুরে মনু-দলই ভ্যালী ক্লাবে শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে উপজেলা প্রশাসনের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।দীর্ঘ আলোচনার মাধ্যমে চা শ্রমিকদের কাজে যোগদানের আহ্বান জানানো হলেও তাদের দাবি একটাই, মজুরি বৃদ্ধি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা ছাড়া তারা কাজে যোগ দেবেন না।
বৈঠকে কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. রফিকুর রহমান, কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সিফাত উদ্দিন, কমলগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুর রাজ্জাক, মাধবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আসিদ আলীসহ উপজেলার সকল চা বাগানের ব্যবস্থাপক ও সহকারী ব্যবস্থাপকেরা উপস্থিত ছিলেন।অন্যদিকে চা শ্রমিকদের পক্ষে পাত্রখোলা চা বাগান পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি শীপন চক্রবর্তী, মদনমোহনপুর চা বাগান পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি উমা সংকর গোয়ালা, শ্রীগোবিন্দপুর চা বাগান পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি মিলন নায়েকসহ বিভিন্ন বাগানের পঞ্চায়েত নেতারা উপস্থিত ছিলেন।আলোচনার শুরুতেই শ্রমিক নেতারা তাদের দাবি-দাওয়ার বিষয়ে বক্তব্য প্রদান করেন। এ সময় তাদের কাজে যাওয়ার আহ্বান জানাল শ্রমিকেরা তা প্রত্যাখ্যান করেন।পাত্রখোলা চা বাগান পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি শীপন চক্রবর্তী বলেন, চা শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার সরাসরি ঘোষণা না আসলে চা শ্রমিকদের চলমান আন্দোলন চলবে।
বাংলাদেশ চা ছাত্র যুব পরিষদের নেতা মোহন রবিদাস বলেন, ‘আগামী ২৫ আগস্টের মধ্যে যদি চা শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির জন্য কোনো সঠিক সিদ্ধান্ত না, তবে চা শ্রমিকেরা সর্বোচ্চ আন্দোলনে নামবে। আন্দোলনরত শ্রমিকেরা মজুরির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে ঘোষণা শুনতে চান।’কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সিফাত উদ্দিন বলেন, ‘চা শিল্পের স্বার্থ বিবেচনা করে শ্রমিকদের কাজে যোগদানের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু চা শ্রমিকেরা মজুরির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে ঘোষণা শুনতে চান। তাদের বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে জানানো হবে।’প্রসঙ্গত, এর আগে গত রবিবার রাতে দেশের চা বাগানগুলোতে উদ্ভূত শ্রম অসন্তোষ নিরসনে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়নে মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসানের সভাপতিত্বে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে রাত নয়টা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত চা বাগানের শ্রমিক নেতৃবৃন্দের জরুরি বৈঠক হয়। সেখানে শ্রমিক নেতারা প্রশাসনের সঙ্গে পূর্বের মজুরিতেই বাগানে ফেরার জন্য সিদ্ধান্ত নেন।এমনি সিদ্ধান্তের যৌথ স্বারকে স্বাক্ষর করেছিলেন বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক নৃপেন পাল, অর্থ সম্পাদক পরেশ কালেঞ্জী, বালিশিরা ভ্যালী সভাপতি বিজয় হাজরা, মনু-দলই ভ্যালী সম্পাদক নির্মল দাস পাইনকাসহ ৮ জন শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা।অপরদিকে স্বাক্ষর করেন মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান, জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া ও শ্রম অধিদপ্তর শ্রীমঙ্গলের উপপরিচালক নাহিদুল ইসলাম। কিন্তু চা শ্রমিকরা এসব সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে কর্মবিরতি চালিয়ে যাচ্ছে।