
গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধিঃ
জ্বালানি তেল ও ইউরিয়া সারের মুল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ ও বিদ্যুতের লোডশেডিং বন্ধের দাবীতে বাংলাদেশের সাম্যবাদী আন্দোলন গাইবান্ধা জেলা উদ্যোগে বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট) বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বিক্ষোভ মিছিলটি দলীয় কার্যালয় থেকে বের হয়ে শহর প্রদক্ষিণ শেষে ২নং ট্রাফিক মোড়ে এসে এক সমাবেশে মিলিত হয়। সমাবেশে বক্তব্য দেন সংগঠনের জেলা সদস্য সচিব মনজুর আলম মিঠু, সুন্দরগঞ্জ উপজেলা সমন্বয়ক বীরেন চন্দ্র শীল, আশরাফুল আলম আকাশ, জাহিদুল হক, নারীমুক্তি কেন্দ্রের জেলা সংগঠক পারুল বেগম, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের জেলা আহবায়ক শামিম আরা মিনা প্রমুখ।
বক্তারা অবিলম্বে জ্বালানি তেলসহ ইউরিয়া সারের বর্ধিত মূল্য প্রত্যাহারের দাবি জানান। তাঁরা বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে যখন দাম কমছে তখন দেশে জ্বালানি তেলের মুল্যবৃদ্ধি অযৌক্তিক। আন্তর্জাতিক বাজারে যখন দাম আরো কম ছিল তখন আমাদের দেশে তেলের দাম না কমিয়ে সরকার জনগণের পকেট থেকে ৪৩ হাজার কোটি টাকা লুট করে নিয়েছে। বর্তমান আন্তর্জাতিক বাজার দর অনুযায়ী ডিজেলের মুল্য কোনভাবেই ৬৮ টাকার বেশি হয়না, সেখানে সরকার দাম বাড়িয়ে ১১৪ টাকা করেছে। দেশ থেকে প্রতিবছর হাজার হাজার কোটি টাকা পাঁচার হচ্ছে, সরকার সেই পাঁচারকারীদের ধরছেনা এবং পাঁচার বন্ধ করতে পারছেনা। অথচ আইএমএফ’র কাছ থেকে সামান্য কিছু ঋণ নিতে তাদের শর্তানুযায়ী জ্বালানি তেলের মুল্যবৃদ্ধি করছে। বক্তারা শোষক লুটপাটকারী এবং অর্থ পাঁচারকারীদের পাহাড়াদার বর্তমান সরকারের সকল গণবিরোধী সিদ্ধান্ত ও দমন-পীড়ন, পুলিশী নির্যাতন রুখে দাঁড়ানোর জন্য দেশবাসীর প্রতি আহবান জানান।
তারা বলেন, দেশে সারের চাহিদা পূরণে তিন বছর ধরে বিদেশ থেকে আমদানি করতে হচ্ছে। প্রতিবছর গড়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকার সার আনতে হয়। অথচ এর অর্ধেক টাকা খরচ করে ওই পরিমাণ সার দেশেই উৎপাদন করা সম্ভব। এমনকি দেশে যে ৮টি কারখানা রয়েছে সেগুলো আধুনিকীকরণ করা হলে সারা বছরই উৎপাদন সম্ভব হতো। দুই দশক আগেও স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে দেশ থেকে সার রপ্তানি হয়েছে। কিন্তু সার কারখানাগুলোর বয়স বাড়তে থাকায় যান্ত্রিক ত্রুটিও বাড়তে থাকে। যান্ত্রিক ত্রুটি এবং গ্যাস স্বল্পতার কারণে বেশির ভাগ সার কারখানা বছরে চার থেকে সাত মাস বন্ধ থাকে। সে কারণে দেশের সার কারখানাগুলোতে সার উৎপাদন কমছে। তাই সারের চাহিদা পূরণে আমদানির পরিমাণ বাড়াতে হয়। সার কারখানাগুলোর অর্ধেক যান্ত্রপাতিও যদি আধুনিকীকরণ করা হয় তবে আমদানির অর্ধেক ব্যয় হবে উৎপাদনে। সরকার দেশে সার উৎপাদন বৃদ্ধির উদ্যোগ না নিয়ে লুটেরা ব্যবসায়ীদের স্বার্থে আমদানী করছে।