
এবার বর্ষা মৌসুমের শুরু থেকে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার কয়েকটি এলাকায় ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। অব্যাহত ভাঙ্গনে ইতোমধ্যেই ১৫০ পরিবারের ঘরবাড়ি ও বিস্তীর্ণ এলাকার ফসলি জমি বিলীন হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রায় ৮ শত কোটি টাকার নদীর তীর রক্ষা প্রকল্পের অধীনে জরুরিভাবে বালুভর্তি জিওব্যাগ ফেললেও ভাঙন থামানো যাচ্ছে না। ফলে নদীর তীরে বসবাস করা মানুষের মধ্যে ভাঙ্গন আতংক বিরাজ করছে। আতঙ্কে ইতোমধ্যেই ২ শতাধিক পরিবার বসতভিটা থেকে বাড়িঘর সরিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছে।
স্থানীয় ভুক্তভোগী লোকজনের অভিযোগ পানি উন্নয়ন বোর্ড এর ৭৯৮ কোটি টাকার যমুনা নদীর ডানতীর রক্ষা প্রকল্পের অধিনে সাঘাটা উপজেলার মূল ভুখন্ড রক্ষা কাজ চলমান রয়েছে। কিন্তু ঠিকাদারদের গাফিলতির কারণে ভাঙ্গন প্রতিরোধ হচ্ছে না। ফলে এখনো বসতভিটা নদী গভেৃ বিলিন হচ্ছে। সরেজমিনে খোজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ দীঘলকান্দি, সাঘাটা ইউনিয়নের হাটবাড়ি ও মুন্সির হাট এলাকা যমুনার প্রবল ভাঙ্গনের মুখে পড়েছে। অব্যাহত ভাঙ্গনের কারণে এসব এলাকার দেড় শতাধিক পরিবারের ঘর-বাড়ি ও বিস্তীর্ণ এলাকার ধান, পাট, মরিচ, কাউন, তিলসহ নানা ধরণের ফসলি জমি নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। ভাঙ্গনের ভয়ে বসতভিটা ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছে প্রায় ২ শতাধিক পরিবার। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতিবছরই যমুনার ভাঙনে ঘর-বাড়ি ও ফসলি জমি বিলীন হয়। হলদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান সদস্য দক্ষিণ দীঘলকান্দি গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল হাই, পাতিলবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মণির উদ্দিন জানান, আমাদের বাড়ি-ঘর ভাঙ্গনের কবলে পড়ায় তাড়া-হুড়া করে সরিয়ে নিতে হয়েছে। মুন্সিরহাট এলাকার ইয়াকুব আলী (৭৬)জানান, স্বাধীনতার পর থেকে এই এলাকায় বাড়ি-ঘর করে বসবাস করে আসছেন।
হলদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম জানান, তার ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যের বসতভিটাসহ ৫০টির বেশি পরিবারের ঘর-বাড়ি ও অনেক আবাদি জমি নদী গর্ভে বিলিন হয়েছে। সাঘাটা ইউপি চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন সুইট জানান, এবার বর্ষা শুরু থেকে যমুনা নদীর তীরবর্তী তার ইউনিয়নের হাটবাড়ি ও মুন্সির হাট এলাকায় ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। অব্যহত ভাঙ্গনে এক মাসের ব্যবধানে কমপক্ষে শতাধিক পরিবারের ভিটে-মাটি নদী গর্ভে বিলিন হয়েছে। গৃহহারা পরিবার গুলো বিভিন্ন স্থানে গিয়ে অস্থায়ীভাবে আশ্রয়ে জীবনযাপন করছে। গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রেজাই করিমের সাথে কথা হলে তিনি জানান, যমুনা নদীর ডানতীর রক্ষা কাজে কোনোরূপ অবহেলা বা গাফিলতি নেই, জোরালো ভাবে কাজ চলছে স্থায়ী কাজ চলমান আছে , শেষ হলে ভাঙবে না।